মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সিঙ্গাপুরের ‘প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সিঙ্গাপুরের নাগরিক কবির হোসেন। সিঙ্গাপুরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি হালিমাহ ইয়াকুবের হাত থেকে অ্যাওয়ার্ডটি গ্রহণ করেন তিনি। এটি সিঙ্গাপুরের নাগরিকদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মানিত পুরস্কার।
এ বিষয়ে কবির হোসেন বলেন, ‘এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। সিঙ্গাপুর সরকার এতবড় সম্মান আমাকে দেবে এটা কখনো ভাবিনি। ভালো কাজ করলে অপ্রত্যাশিতভাবে আরও ভালো কিছু পাওয়া যায় এটাই তার প্রমাণ। প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডটি সিঙ্গাপুর সরকার ও জনগণের প্রতি আমাকে আরও দায়িত্বশীল করে তুলবে।’ খবর বিডিপ্রেস এজেন্সির।
করোনাভাইরাসের মহামারিতে নিজের অর্থায়নে ও নিজস্ব পরিবহনব্যবস্থায় স্ত্রী নূরিয়া বেগমকে নিয়ে সিঙ্গাপুরে লকডাউনে আটকেপড়া অভিবাসী শ্রমিকদের মাঝে বিনামূল্যে খাদ্য ও নিত্যপণ্যসামগ্রী বিতরণ করে আলোচনায় আসেন তিনি। এ সময় রমজান মাসে বিভিন্ন শ্রমিক ডরমিটরিতে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করেন। তার এই উদ্যোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসিত হয়।
সিঙ্গাপুরে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছেন। এমন দুর্যোগময় সময়ে অভিবাসী শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা ও দুর্ভোগ লাগবের কথা চিন্তা করে ‘বিসিএস এসজি ওয়ে’ নামে অ্যাপস চালু করেন। এতে করে সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন প্রান্তে শ্রমিকরা অ্যাপস ব্যবহার করে নিত্যপণ্য সামগ্রী অর্ডার করে ন্যায্যমূল্যে ফ্রি ডেলিভারিতে সহজেই ঘরে বসে তা সংগ্রহ করতে পারছেন। এতে শ্রমিকদের অর্থ সাশ্রয় ও সময় অপচয় অনেক কমে যায়।
কবির হোসেন অ্যাপস তৈরি করে অভিবাসী শ্রমিকদের জীবনযাত্রাকে সহজ সহায়ক করে তোলা, করোনার দুর্যোগ সময়ে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো ও তরুণ সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সিঙ্গাপুর সরকারের নজরে এলে প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডের জন্য তাকে মনোনীত করা হয়। প্রতি বছরের মতো সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন বিষয়ে অবদান রাখার জন্য দুইশ ব্যক্তির মধ্যে ৪৫ জনের শর্টলিস্টে তার নাম আসে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে তাকে অ্যাওয়ার্ডে কথা নিশ্চিত করা হয়।
ব্রুকলিনজ স্টেইনলেস স্টিল প্রাইভেট লিমিটেড ও এসজি ওয়ে পিটি লিমিটেডের সিইও কবির হোসেন ১৯৮১ সালের ৪ জানুয়ারিতে কুমিল্লার চান্দিনার সাইকোটে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আবদুল গফুর, মা তুরা বেগম। দুই বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয় কবির হোসেন ছোট ভাই কাউছার আহমেদ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সিঙ্গাপুরে থাকেন। স্ত্রী নূরিয়া বেগম সিঙ্গাপুরিয়ান ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম। পাঁচ বছরের এক ছেলে আমির ইহসান এক মেয়ে যোয়াকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের বেন্ডামিরে বসবাস করছেন।
এইচএসসি পাস করে ২০০০ সালে সিঙ্গাপুরে জীবিকার সন্ধানে আসেন। একটি স্টেইনলেস স্টিল কোম্পানিতে সাধারণ ওর্য়াকার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে পরিশ্রম, মেধা আর সততা দিয়ে একই কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে ২০১২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে চাকরির পাশাপাশি পড়ালেখা করে সিঙ্গাপুরের সার্টিফাইড সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। চাকরি জীবনে সীমাবদ্ধতা, অনিশ্চয়তার কথা চিন্তা করে ২০১২ সালে স্বল্প পরিসরে ব্যবসা শুরু করেন। প্রাথমিক অবস্থায় একটি ফ্যাক্টরির অংশবিশেষ ভাড়া নিয়ে কাজ শুরু করেন। পরে সততা আর পরিশ্রম দিয়ে ধারাবাহিক সাফল্য আসায় আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। বর্তমানে তার নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে সিঙ্গাপুরিয়ান, ফিলিপিনো, বাংলাদেশি মিলিয়ে ২১ জন কর্মরত রয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের একজন তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে জার্মান, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশে ওভারসিজ বিজনেস ওর্য়াকশপ করেছেন তিনি সিঙ্গাপুর সরকারের এজেন্সির মাধ্যমে। ছেলে ইহসানের নামে ইহসান ফাউন্ডেশন করে ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশে অনাথ অসহায় ও অভাবগ্রস্ত মানুষদের অর্থ সহায়তা ও গৃহহীনদের ঘর তৈরি কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এছাড়া ব্রুকলিনজ কমিউনিটি সাপোর্টের প্রতিষ্ঠাতা তিনি যা সিঙ্গাপুরে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছেন। সূত্র : আল জাজিরা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।