বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের পুর্ব চরসীতা মৌজার ৮০২০ নং দাগের সরকারের ১ নং খাস খতিয়ানের প্রায় ২৪ একর ৪৮ শতক জমি দখল করে মাছের প্রজেক্ট তৈরী করেন স্হানীয় এক সাবেক ইউপি সদস্য ও কয়েকজন ভূমিদস্য।
এতে ঐ এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমির পানি নিষ্কশনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। সরকারি জমি দখল করে মাছের প্রজেক্ট তৈরী করে প্রভাবশালী-ভূমিদস্যরা। বিশাল বিশাল মাছের প্রজেক্ট তৈরী করেছেন তারা। পানি নিষ্কাশনের কালভার্ট ও সরকারি খাল বন্ধ করে মাছ চাষ করা হচ্ছে এই সব খাস জমিতে। ফলে ওই বিলের প্রায় ৫ শতাধিক কৃষকের শত শত বিঘা ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। তিন ভূমিদস্যুর কব্জায় সরকারের ২ কোটি টাকার সম্পত্তি। উপজেলা প্রশাসনের নেই কোন নজরদারি।
রামগতিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার মূল কারণ হিসেবে খাল, নদ, নদী দখল করে মাছের ঘের করাকে চিহিৃত করছেন উপজেলা প্রশাসন।সরকারী অসাধু গুটিকয়েক কর্মকর্ত কর্মচারীকে ম্যানেজ করেই এই সব খাস জমি দখল করে মাছের প্রজেক্ট করেন তারা।এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। অন্যদিকে ভূমিহীন নদী ভাংগা লোকজন জায়গার অভাবে খোলা আকাশের নিচে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।চরবাদামের ২ কোটি টাকার এই খাস জমি ৩ জন প্রভাবশালী ভূমিদস্য দখল করে রাখলেও রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার,এসিল্যান্ড ও তহসিলদার দেখেও যেন না দেখার ভান ধরেন। "সরকার কা মাল দরিয়া মে ডাল দে"এমন অবস্থা রামগতির চরবাদাম ইউনিয়নের সরকারী খাস জমিগুলোর অবস্হা। কর্মকর্তাদের সঠিক তদারকি ও নানা অবহেলার কারনে শত শত একর সরকারি খাস জমি অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে।ভুমি অফিসের কর্মকর্তারা অফিসে বসে নিয়মিত ঠিকই বেতন তুলছেন।কিন্ত সরকারী সম্পদ রক্ষায নেই তাদের কোন প্রকার নজরদারি। কে শুনে কার কথা। অযত্ন-অবহেলা আর উদাসীনতায় সরকারী সম্পদ দখল করে খাচ্ছে কতিপয় ভূমিদস্যুরা। স্হানীয়রা জানায় রামগতি উপজেলার পুর্ব চরসীতা মৌজার ৮০২০ নং দাগের সিডিএসপি কলোনি সংলগ্ন স্হানীয় চরবাদাম ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার খুরশিদ,শাহাদাত মাঝি,আমিনুল হক ও ফিরোজ ভুইয়া নামের তিনজন ভূমি দস্যু সরকার কে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ২ কোটি টাকা মুল্যের প্রায় ২৪ একর ৪৮ শতক জমিতে ৪ টি বিশাল মাছের প্রজেক্ট তৈরী করে রেখেছেন।অথচ এলাকার অসহায় গরীব মানুষ চরবাদাম ইউনিয়নের ভূমি (তহসিল) অফিসে খাসজমি বন্দোবস্ত নেওয়ার জন্য গেলে তহসিলদার খাস জমি নেই জানিয়ে বলেন চরবাদাম এলাকায় কোন খাস জমি নেই।খাস জমি পেতে হলে চরগজারিয়াতে যাও এমন হুমকিতে গরীব ও নিরিহ মানুষ খাস জমি নিতে পারেনি। চরবাদাম এলাকায় তিন ভূমিদস্যুর কব্জায় রয়েছে ২ কোটি টাকা মুল্যের ২৪ একর ৪৮ শতক খাস জমি। সরকারী খাস জমি থাকলেও তিনি তা দিচ্ছেন না এমন অভিযোগ করেছেন একাধিক কৃষক। ঐ এলাকার কৃষক আমিনুর রহমান, আব্দুস সাত্তার মৃধা, আবুল শেখ, সিরাজুল ইসলাম ও শেখ রেজাউল ইসলাম বলেন মুলত এই জমিগুলো সম্পুর্ন খাস।স্হানীয় তহসিলদার কে ম্যানেজ করেই এরা মাছের প্রজেক্ট তৈরী করেন।সরকারকে কোন প্রকার রাজস্ব দিচ্ছেনা তারা ।গরিব অসহায় মানুষের মাঝে বন্দোবস্ত দিলেও তারা উপকৃত হতো।এই সব ভূমিদস্যুরা মাছের প্রজেক্ট করে পানি আটকে দেওয়ায় ফসলও করতে পারছেন না শত শত কৃষক।
এলাকাবাসীর দাবী রামগতির চরবাদাম ইউনিয়নের তিন ভূমিদস্যুর কব্জা থেকে এই খাস জমি উদ্ব্যার করে নদী ভাংগা মানুষের নামে বন্দোবস্ত দেওয়ার দাবী তাদের।
এবিষয়ে অভিযুক্ত খুরশিদ মেম্বারের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ছেলে সাইফুদ্দীন জানান,এই জমির কিছু অংশ আমাদের রেকর্ডি সম্পত্তি। বাকি গুলো খাস,সরকার বন্দোবস্ত দিলে আমরা বন্দোবস্ত নিতে রাজি।
চরবাদাম ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মাহে আলম বলেন এই জমিগুলো খাল শ্রেনীর হয়।তবে খাস খতিয়ান ভুক্ত। অচিরেই সরকারের এই জমি ভূমিদস্যুদের কব্জা থেকে দখল মুক্ত করতে অভিযান চালানো হবে।
চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন জসিম বলেন ঐ জমিগুলো সম্পুর্ন খাস। তহসিলদার কি ভাবে এতোগুলা জমি এদের কে দখল দিলে তা আমার বুজে আসেনা।
রামগতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুচিত্র রন্জন দাস বলেন বিষয়টি খতিয়ে দেখে ঐ জমি দখলমুক্ত করে ভূমিহীনদের মাঝে বন্টন করে দেওয়া হবে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মোমিন জানান,বিষয়টি আমার জানা নেই।খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।