মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীনের বিরুদ্ধে বিশ্বের চারটি গুরুত্বপূর্ণ দেশকে এক অবস্থানে আনতেই টোকিওতে কোয়াড সম্মেলন ডাকা হয়েছিল মূলত আমেরিকার উদ্যোগে। কিন্তু সেই সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব মাইক পম্পেও আগ্রাসী মনোভাব দেখালেও অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বক্তৃতা ছিল যথেষ্ট সংযমী। সম্মেলনের পরে কোনও যৌথ বিবৃতি না-আসায় বোঝা গিয়েছে, চার দেশ একমত হতে পারেনি। পরে তারা যে আলাদা আলাদা বিবৃতি দিয়েছে, তার মাধ্যমে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে।
আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে চীনা জুজুকে প্রধান বিষয় করতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন। কয়েক মাস ধরেই চীনের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার মন্ত্রী ও উপদেষ্টারা। তাদের সেই প্রচারে গুরুত্ব পেয়ে যাচ্ছে লাদাখে ভারত-চীন সংঘাতের বিষয়টিও। যদিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় পারস্পরিক মত বিনিময়ের রাস্তা খোলা রাখতে নরম সুরই নিয়ে চলেছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন শুক্রবার ভারতকে উস্কে দিয়ে দাবি করেন, আলোচনার মাধ্যমে লাদাখের সমস্যা মিটবে বলে তিনি মনে করেন না। কারণ, ‘শান্তি স্থাপনের সদিচ্ছা’ চীনের নেই। তার কথায়, গায়ের জোরে ভারতের ভূখন্ড দখল করে রাখাই তাদের উদ্দেশ্য।’
কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এখনই চীনের বিরুদ্ধে এতটা আক্রমণাত্মক হচ্ছে না। লাদাখের সমস্যা দ্বিপাক্ষিক স্তরে মেটাতে সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে নানা ধাপে আলোচনা শুরু হয়েছে। আক্রমণাত্মক কৌশল নিলে এই প্রক্রিয়া ধাক্কা খাবে মনে করেন ভারতের সংযমী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর। তবে, অস্ট্রেলিয়াও মার্কিন সুরে গলা না-মেলানোতে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। আসলে তাদের সঙ্গে রফতানি বাণিজ্যের ভারসাম্য এতটাই চীনের পক্ষে হেলে, ‘যুদ্ধং দেহি’ মনোভাবে অস্ট্রেলিয়া বিপাকে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তুলনায় জাপান খানিকটা কঠোর অবস্থান নিলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাল মিলিয়ে সরাসরি চীনের বিরোধীতায় আগ্রহী নয়।
কিন্তু মার্কিন মন্ত্রী-উপদেষ্টারা তাদের সুর ধরে রাখতে মরিয়া। ভারতকে চীনের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতেও তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। টোকিওর কোয়াড বৈঠকের পরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীসচিব মাইক পম্পেও শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে লাদাখে এলএসি-তে ৬০ হাজার চীনা সেনা মোতায়েন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পম্পেওর কথায়, ‘দখলদারি বজায় রাখতেই চীনের এই পদক্ষেপ। গোটা বিশ্ব ভারতের পাশে দাঁড়াচ্ছে। অনেক ছাড় এত দিন পেয়েছে চীন। ট্রাম্প প্রশাসন চীনকে আর ছাড় দিতে রাজি নয়।’ তিনি বলেন, ‘আজ বিশ্ব যদি লাদাখে ভারতীয় ভূখন্ড দখল দেখে চুপ করে থাকে, চীনের কাছে কাল ভূখন্ড হারাতে হবে অনেককে। সব দেশকে তাই ভারতের পাশে দাঁড়াতে হবে।’ পম্পেওর দাবি, ‘করোনার উৎপত্তি ও প্রসারে চীনের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত চাওয়া মাত্রই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আগ্রাসী হয়েছে চীন। কোয়াড-এ বিশ্বের চারটি গণতান্ত্রিক দেশ এক হয়ে চীনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সে বার্তা সব দেশেরই অনুধাবন করা উচিত।’ একই সুর মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও’ব্রায়েনের গলাতেও। তিনি বলেন, ‘অন্যের ভূখন্ডে দখলদারিকে কমিউনিস্ট চীন নীতি হিসেবে নিয়েছে। উদাহরণ লাদাখে হিমালয়ের কোলে ভারতের সঙ্গে এলএসি। সেখানে তারা যে দখলদারি কায়েম করেছে, তা সরে আসার জন্য নয়। আলোচনা করে তাদের সরানো যাবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, লাদাখ নিয়ে ভারতের থেকে তাদের উদ্বেগই বেশি। তবে যুক্তরাষ্ট্র যতই মায়া কান্না কাঁদুক, তাদের উপর ভরসা রাখতে পারছে না ভারত। বরং, তারা চীনের সঙ্গে সমস্যা মেটাতে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা প্রক্রিয়ার উপরেই ভরসা রাখছে। একইভাবে, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের মধ্যেও আস্থাহীনতা দেখা গিয়েছে। ফলে, চীনের বিরুদ্ধে চার দেশের জোট গঠনে সমর্থ হলেও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলো যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র : দ্য প্রিন্ট, টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।