Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

২ মন্ত্রী গরু পাচারকারী : রাজু

‘কোকাকোলা’, ‘পেপসি’ বিশেষ কোডের ব্যবহারেই গরু পাচার : সিবিআই

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৭ এএম

গরু পাচারের টাকার ভাগ নিচ্ছেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। শিলিগুড়িতে এসে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় । শনিবার শিলিগুড়িতে কৃষি আইনের পক্ষে বিজেপির মিছিলে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সেখানেই এই অভিযোগ করেন রাজু। মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পালটা রাজুকেই ‘গরু চোর’ বলে আক্রমণ করেন। অন্যদিকে দার্জিলিং জেলা তৃণম‚লের তরফে শিলিগুড়িতে রাজুবাবুর বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করা হবে বলে জানালেন তৃণম‚ল জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার। সুপ্রিম কোর্টেও যাওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিজেপি নেতার অভিযোগ, ‘সামনেই ফাসিদেওয়ায় বাংলাদেশ সীমান্ত। সেখান দিয়ে যে গরু পাচার হচ্ছে তার টাকা নিচ্ছেন মন্ত্রী গৌতম দেব ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।” তার এই বক্তব্য শুনে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “গরুচোরের মন্তব্যের কোনও জবাব দিতে চাই না।” তৃণম‚লের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, “প্রমাণিত সত্য যে গরুপাচারের সঙ্গে কিছু বিএসএফ কর্মকর্তা, শুল্ক দপ্তরের বেশ কয়েকজন যুক্ত। কোনও প্রমাণ ছাড়া দু’জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কীভাবে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ করতে পারেন। আমরা এর বিরুদ্ধে এফআইআর করব ও সুপ্রিম কোর্টেও যাব।”এদিন কৃষি আইনের সমর্থনে শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক থেকে মাল্লাগুড়ি পর্যন্ত মিছিল করে বিজেপি। এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরূপা মিত্র, শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল, শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা যুব সভাপতি কাঞ্চন দেবনাথ-সহ জেলা একাধিক নেতানেত্রী। মিছিল শুরুর আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মানুষকে কৃষি আইনের নামে ভুল বোঝাচ্ছে বিরোধীরা। কাটমানি বন্ধ হয়ে যাবে সে কারণেই বিরোধিতা করছে তৃণম‚ল।” মালদহ থেকে অপর এ খবরে জানা যায়, ২০১৭-১৮ সালে ‘পেপসিকে’ ‘কোক’ বানিয়ে কোটি কোটি টাকা লাভ করেছিল গরু পাচারকারী সিন্ডিকেটের মাথা তথা হাওলা ট্রেডার্স এনামুল হক। লাভের সেই টাকা থেকে মোটা টাকা বখরা পেতেন বিএসএফের কমান্ডেন্ট সতীশ কুমার-সহ বেশ কিছু বিএসএফ কর্মকর্তা। তারা প্রত্যেকেই এখন সিবিআই-এর নজরে। সেই সময় মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গরু পাচার হতো। বিএসএফ ও কাস্টমসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে নির্দিষ্ট সময়ে লাইন মারফত সীমান্তহীন করে দেওয়া হতো গরুগুলিকে। আর সেই সুযোগ নিয়েই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাখের আলী, মাসুদপুর এই বিট খাটাল গুলি থেকে গঙ্গানদী পার করে মালদহের বৈষ্ণবনগর ও মুর্শিদাবাদ জেলার বিস্তীর্ণ সীমান্ত দিয়ে গরু পাঠানো হতো সীমান্তের ওপারে। লোক দেখানোর জন্য কিছু গরু আটক করতো বিএসএফ। পরে সেগুলি কাস্টমসের মারফত নিলাম করা হতো। পাচারকারীদের কোড অনুযায়ী বড় গরু গুলিকে বলা হত ‘কোকাকোলা’ ও ছোট গুরুকে বলা হতো ‘পেপসি’। বাজেয়াপ্ত গরু নিলামের সময় বড় গরুকে ‘ছোট গরু’ দেখিয়ে অর্থাৎ ‘কোকাকোলাকে’ ‘পেপসি’ দেখিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হতো। যার ফলে গরুর দাম কমে যেত এবং সেখান থেকেই প্রচুর টাকা রোজগার করত এনামুল হক ও তার সিন্ডিকেট। কারণ তারাই এই গরু গুলি নিলাম করতো। কিন্তু পরে ওই গ্রæপে আবার পাচার করা হতো। গরু প্রতি আড়াই হাজার টাকা পেত বিএসএফ ও কাস্টমস কর্মকর্তারা। তার মধ্যে বিএসএফ পেতো ২০০০ টাকা ও কাস্টমস গরু প্রতি ৫০০ টাকা। ২০১৭-১৮ সাল নাগাদ বিএসএফ ওই এলাকায় প্রায় কুড়ি হাজার গরু আটক করে নিলাম করেছিল। তাহলেই বোঝা যায় কত টাকা লুটপাট হয়েছিল। বড় গরু গুলিকে কাগজে-কলমে ছোট গরু দেখানো হতো। কাস্টমসের কর্মকর্তাদের একাংশ এই কারবার করত। সিবিআইয়ের হাতে এই ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এসেছে। এর ফলে প্রচুর রাজস্ব ক্ষতি হয়েছিল সরকারের। শিলিগুড়ি টাইমস, সংবাদ প্রতিদিন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিবিআই


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ