মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্ব শান্তি বজায় রাখতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের ভিত্তিগুলো তার ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নড়বড়ে অবস্থানে চলে গেছে। জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব জেনারেল বান কি মুন প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পরিস্থিতিকে বহুপক্ষীয়তার মারাত্মক বিশৃঙ্খলা হিসেবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের এ প্রত্যন্ত সমাবেশে মার্কিন-চীন প্রতিদ্ব›িদ্বতা বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতার ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকা প্রথম’ বৈদেশিক নীতি ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে শুরু করে প্যারিস আবহাওয়া চুক্তিসহ বহুপাক্ষিক চুক্তিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে, যেখানে চীন দৃশ্যত নিজেকে জাতিসংঘের শক্তিশালী সমর্থক হিসাবে নিজের অবস্থান পাকা করছে। ক্রমবর্ধমান চীনা প্রভাবের একটি মূল্য আছে এবং বেইজিং যদি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো জাতিসঙ্ঘের অন্যান্য সংস্থাগুলোর তহবিলে আরও বেশি অর্থ ঢালে, ফলস্বরূপ তারা প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে আরো সমর্থন চাইবে।
বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রযুক্তি সব বিষয়েই দুই দেশের চরম প্রতিদ্ব›িদ্বতা ক্রমশ উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্ব মঞ্চে তার বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তব্যে করোনাকে চীনা ভাইরাস বলে অভিহিত করে তিক্ত লড়াইটি আরো উস্কে দিয়েছেন। মার্কিন নির্বাচনের ৪০ দিনেরও কম সময় বাকি থাকতে বেইজিংয়ের নিন্দাগাঁথা ট্রাম্পের প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ভাইরাস রফতানির জন্য চীনকে কট‚ক্তি করে ট্রাম্প মহামারি পরিচালনায় নিজের ব্যর্থতার সমালোচনাকে রদ করার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
আরেকটি শীতল যুদ্ধের সতর্কবার্তা বহন করা আমেরিকা বনাম চীন আধিপত্যের দুই বিপরীত মেরু পৃথিবীকে অবশেষে সামরিক সংঘাতের দিকে পরিচালিত করবে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্টতই জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্টোনিও গুতেরেজ উদ্বিগ্ন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের পৃথিবী এমন ভবিষ্যতের ভার বহন করতে সক্ষম নয়, যেখানে ২টি বৃহত্তম অর্থনীতি বিশ্বকে এক মহা-ভগ্নাংশে বিভক্ত করে দেয়, যার প্রত্যেকটির তার নিজস্ব বাণিজ্য এবং আর্থিক নিয়ম এবং ইন্টারনেট এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষমতা রয়েছে। একটি প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক বিভাজন ঝুঁকি অবশ্যম্ভাবী একটি ভূরাজনৈতিক এবং সামরিক বিভাজনে পরিণত হয়। আমাদের অবশ্যই এটি সর্বদাই এড়ানো উচিত।’
একটি মহা-বিভাজনের পরিণতি সম্পর্কে এ উন্মুক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, বিশ্ব কত দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং কূটনীতিকরা কীভাবে এর সাথে তাল মিলাতে গিয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছেন। যদিও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন যে, কোনও দেশের সাথে শীতল যুদ্ধ বা উত্তপ্ত যুদ্ধের লড়াইয়ের কোনও ইচ্ছা চীনের নেই, তবুও গুতেরেজ সংহতি নিয়ে বক্তব্য দেয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, সমস্ত বিশ্বনেতাদের তার উদাহরণ অনুসরণ করা উচিত এবং তাদের দেশকে প্রথমে রাখা উচিত।
ট্রাম্প যদি পুনরায় নির্বাচিত হন, তবে তার চীন বিদ্বেষ আরও প্রকট হয়ে উঠবে এবং সম্ভবত ওয়াশিংটনের কাছে জাতিসংঘ আরও নগন্য হয়ে উঠবে। সেক্ষেত্রে ন্যাটোর প্রতিও মার্কিন প্রতিশ্রুতি অসার হয়ে পড়তে পারে। জো বাইডেন যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তবে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাস পেতে পারে। তবে চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের মৌলিক প্রতিদ্ব›িদ্বতা থেকেই যায়। বিশ্ব এ মুহূর্তে পুনরায় দল সাজাচ্ছে এবং এখন প্রশ্ন হ’ল যে, নতুন একটি স্নায়ূ যুদ্ধের সম্ভাবনা পাশ কাটিয়ে পুরনো পরাক্রমশীলতা এর সাথে খাপ খাইয়ে নেবে কি না এবং কে পরিবর্তিত নতুন বিশ্বের নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছে। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।