পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইসরাইলের সঙ্গে উপসাগরীয় দুটি দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে গাজার ফিলিস্তিনিরা। শনিবারের হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার এ বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের ছবি পোড়ায় ফিলিস্তিনিরা, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এর আগে শুক্রবার এক ঘোষণায় ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি হওয়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের পদক্ষেপ অনুসরণের ঘোষণা দেয় বাহরাইন। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমশ প্রভাবশালী হয়ে ওঠা ইরানকে ঠেকাতে সৌদি আরবের মিত্র দেশ হিসেবে পরিচিত এ দেশ দুটো তেল আবিবের সঙ্গে হাত মেলাতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাদের এ পদক্ষেপ স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের দাবিতে কয়েক দশক ধরে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিদেরকে আরও বিপাকে ফেলবে বলে অনুমান পর্যবেক্ষকদের। গাজায় বিক্ষোভটি আয়োজন করেছিল ভ‚খÐটির নিয়ন্ত্রণে থাকা ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস। “সম্পর্ক স্বাভাবিক করার এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে হবে আমাদের; এর ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে এটির সফল হওয়ার সব পথও রুদ্ধ করে দিতে হবে,” বলেছেন হামাস কর্মকর্তা মাহের আল-হোলি। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, বাহরাইনের বাদশা হামাদ বিন ইসা আল খলিফা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতভ্ক্তু আবু ধাবির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের ছবিতে আগুন দিয়েছে। এদিকে, ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় বাহরাইনের পদক্ষেপের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ। হিজবুল্লাহ বলেছে, বাহরাইন সরকার এ কাজ করে ফিলিস্তিনি জাতির প্রতি ‘চরম বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে। শনিবার এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়াসহ এই অবৈধ রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে সিদ্ধান্ত বাহরাইন নিয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে বাহরাইনের একনায়কতান্ত্রিক সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হিজবুল্লাহর বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আরব দেশগুলোর ভাড়াটে শাসকরা যারা কিনা তাদের জাতিগুলোর প্রতি বিশ্বাসঘাতক তারা এতদিন ইসরাইলের সঙ্গে গোপনে যে সম্পর্ক বজায় রাখত এখন তা প্রকাশ করে দিয়েছে মাত্র। কিন্তু কোনো যুক্তি দিয়েই মুসলমানদের প্রথম কেবলা জবরদখলকারী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব নয়। রয়টার্স বলছে, ইসরাইল, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন সম্পর্ক স্বাভাবিকের এ ক‚টনৈতিক পদক্ষেপগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ মনে করলেও ফিলিস্তিনিরা একে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখছে। তাদের ভয়, এভাবে একের পর এক দেশ তেল আবিবের সঙ্গে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুললে ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্যান-আরব অঞ্চলের এতদিনকার শক্ত অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে। আরব দেশগুলো এতদিন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মেনে নেওয়া এবং দখল করা অংশগুলো ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে ইসরাইলের সঙ্গে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের কথা বলে আসছিল। দুই উপসাগরীয় দেশের তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা ফিলিস্তিনের বিবদমান দুটি পক্ষ প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) ও হামাসকেও এক করেছে। ২০০৭ সালে এই দুই অংশের মধ্যে দ্ব›দ্ব মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। ইসরাইলের দখল করা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন কর্তৃপক্ষের সীমিত শাসন বিদ্যমান; অন্যদিকে গাজার নিয়ন্ত্রণ আছে হামাসের হাতে। রয়টার্স, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।