মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীনের হাতে এখন বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনী রয়েছে এবং তারা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে লজিস্টিকাল ঘাঁটি স্থাপনের চেষ্টা করছে। পাশপাশি তারা আগামী এক দশকের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে। মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে উপস্থাপিত এক বিশদ প্রতিবেদনে পেন্টাগন চীনের সামরিক শক্তির বৃদ্ধি সম্পর্কে তাদের সর্বশেষ মূল্যায়ন তুলে ধরে। সেখানে চীনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে একীভূত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, মহাকাশ এবং বৈদ্যুতিন অস্ত্রের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে চীনের সামরিক বাহিনী আরও শক্তিশালী হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই রিপার্টে চীনের ক্ষমতাবৃদ্ধি নিয়ে বেশ কিছু সতর্কবাণী শোনা যায়। সেখানে চীনের নৌবাহিনীর শক্তি নিয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনা হয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই মহূর্তে চিনের কাছে বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনী রয়েছে। যার মধ্যে ৩৫০ টি বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধ জাহাজ এবং সাবমেরিনও রয়েছে। একইসাথে এই খাতে উত্তরোত্তর নিজেদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেই চলেছে বেইজিং। সেই দিক থেকে দেখলে বিশ্বের অন্যতম সামরিক শক্তিধর দেশ আমেরিকার কাছেও এই মুহূর্তে মাত্র ২৯৩টি যুদ্ধ জাহাজ রয়েছে।
চীন এমনভাবে বিভিন্ন দেশে সামরিক সাজসজ্জা করছে যে মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে তারা কোনও না কোনও রকমের হামলা করতে বা হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হবে। ভারতের একেবারে গা ঘেঁষে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার তো বটেই, তা ছাড়াও থইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কেনিয়া, সেশেলস, তানজানিয়া, অ্যাঙ্গোলা, তাজিকিস্তানের মতো দেশগুলিতেও মিলিটারি লজিস্টিক্সের ঘাঁটি তৈরি করছে চীন।
নামিবিয়া, ভানাতু, সলোমন আইল্যান্ডের মতো ভালো স্ট্র্যাটেজিক লোকেশনে ইতিমধ্যেই চিন পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে। আফ্রিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে মরিয়া চীন। তারা একদিকে এলাকা ঘিরছে, আবার সামরিক পরিকাঠামো গড়ে তুলছে দ্রুত। আফ্রিকার জিবুতিতে নিজেদের সেনা ঘাঁটি যে তৈরি হয়ে গিয়েছে সে কথা সরকারি ভাবে নিজেই জানিয়েছে তারা। সেই ঘাঁটি কেন্দ্র করে শাখা প্রশাখা তৈরি হয়ে যাবে আফ্রিকার অন্যান্য দেশে। ব্যাপারটা আমেরিকা তো বটেই, নিজের প্রতিবেশী দেশগুলোর দিকে তাকালে ভারতের কপালেও ভাঁজ পড়তে বাধ্য।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন তার পরমাণু অস্ত্র আধুনিকীকরন করছে এবং বাড়াচ্ছে। সেক্ষেত্রে আগামী এক দশকের মধ্যে চিনের পরমাণু ওয়ারহেডের সংখ্যা বর্তমান সংখ্যার চেয়ে অন্তত দ্বিগুণ হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনের কাছে বর্তমানে ২০০’র কিছু কম পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে চিন সরকার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা অনেক বেশি বাড়াবে যা আমেরিকার জন্য উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হুমকি হয়ে দেখা দেবে। এসব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরমাণু ওয়ারহেড বহনে সক্ষম বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। চীন এরইমধ্যে জাহাজনির্মাণ, ভূমি-ভিত্তিক কনভেনশনাল ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও সমন্বিত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ সামরিক সরঞ্জামাদি আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে আমেরিকার সমকক্ষ হয়েছে অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমেরিকাকে ছাড়িয়ে গেছে।
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ অ্যাসোসিয়েশনের নিরস্ত্রীকরণ এবং ঝুঁকি হ্রাসকরণ বিভাগের মহাপরিচালক কিংস্টন রিফ পেন্টাগনের প্রতিবেদন সম্পর্কে জানিয়েছেন, এই প্রতিবেদনে চীনের পরমাণু অস্ত্র সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা যদি সত্য হয় তাহলেও রাশিয়া এবং আমেরিকা চীনের চেয়ে তখনও পরমাণু অস্ত্রের দিক দিয়ে অনেক বেশি ক্ষমতাধর থাকবে। তার মতে, চীনের পরমাণু অস্ত্র সম্পর্কে অতিমাত্রায় উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র প্রতিযোগিতা থেকে সবার দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। সূত্র: টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।