পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একটি নতুন অটোরিকশা কিনতে খরচ হয় দেড় লাখ টাকা তবে তা রাস্তায় চালাতে চাঁদা দিতে হয় ২০ হাজার টাকা। গত ১০ বছর ধরে উলিপুরে বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি খুলে অভিনব ভাবে চলে আসছিলো এমন চাঁদাবাজি।
অনুসন্ধানে বের হয়, উপজেলার প্রায় ৩ হাজার অটোচালক থেকে গাড়ির নাম্বার প্লেট বাবদ ৫২০০ টাকা করে আদায় করা হয়। এভাবে এককালীন আদায় হয় প্রায় ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আর অটো নবায়নের নামে প্রতি বছর ১০৫০ টাকা করে প্রায় ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেয়া হয়। এতে দশ বছরে প্রায় ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা আদায় হয়। তাছাড়া প্রতিদিন সংগঠনের নামে অটোপ্রতি ১০ টাকা করে প্রায় ৩০ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়। এভাবে মাসে ৯ লাখ ও বছরে প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ টাকা আদায় করে নিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। তারা ১০ বছরে দৈনিক চাঁদার মোট ১০ কোটি ৮০ লাখ টাকা আদায় করে নিয়েছেন। এভাবেই ক্ষমতাসীন দলের দাপট দেখিয়ে গত ১০ বছর ধরে বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামে সর্বমোট প্রায় ১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।
সম্প্রতি উপজেলার এক অটোচালক পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মুকুল মিয়া ও পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি সোহেল খাঁসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও অটো চুরির মামলা করলে বের হয় এসব ঘটনা।
জানা গেছে, উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের জুম্মাহাট গ্রামের রাশেদুল উলিপুর বাজারে অটো নিয়ে আসলে তারা অবৈধ ভাবে চাঁদা দাবি করে। এক বছর আগে তারা আরো ৫২০০ চাঁদা আদায় করে নেন। গত সোমবার আসামিরা আরো ১৫০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে না চাইলে তাকে মারধর করে অটোগাড়িটি তারা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় রাশেদুল গত মঙ্গলবার বিকালে ঐ আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই দিন পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি সোহেল খাঁ ও তার সহযোগী ফরহাদ হোসেনকে গ্রেফতার করেন।
অটোচালক শামছুল আলম, মক্কেল আলী, উমর ফারুক, আরিফুল ইসলাস, লাভলু সরকারসহ অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামে তারা চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। উপজেলা সদর থেকে রাজারহাট সড়ক, মাঝবিল সড়ক, অনন্তপুর সড়ক, ফকিরেরহাট সড়ক, বজরা ও থেতরাই সড়কসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অটো সিরিয়াল মোতাবেক চালাতে হলে ওই সংগঠনকে অটোপ্রতি ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। এই চাঁদা আদায়ের জন্য নেতারা গড়ে তুলেছেন বিশাল ক্যাডার বাহিনী। চাঁদা না দিলে ক্যাডাররা মারধরসহ অটোর ব্যাটারি, সিট, চাকা খুলে নেয়। এভাবেও মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওই নেতারা।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির মূলহোতা জাহাঙ্গীর আলম, মুকুল মিয়া ও সোহেল খাঁ অটোচালক বা মালিক নন। তারা সংগঠনের নাম করে এবং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে দরিদ্র অটোচালকদের জিম্মি করে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে আসলেও ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পেত না।
উলিপুর থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। উলিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, এটা ব্যক্তিগত বিষয়। মামলার ব্যাপারে আমাদের কোন দায়-দায়িত্ব নেই। আওয়ামী লীগ কখনই চাঁদাবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।