পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার এর ঘটনা ঘটেছে। গত ২৫ জানুয়ারি শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক আজম খসরুকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করে ১ নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদককে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন নূর কুতুব আলম মান্নান। এরপর একই দিন সম্পাদক আজম খসরু শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নানসহ কেন্দ্রীয় কমিটির চারজনকে বহিষ্কার করেন।
জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরেই শ্রমিক লীগে অসন্তোষ চলছে। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মান্নান এবং খসরু আলাদা আলাদা অনুষ্ঠান করেন। এক মঞ্চে তারা কখনো শ্রমিক লীগের প্রোগ্রাম করেননি। সংগঠনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলও দেন আলাদা আলাদা ভাবে। সর্বশেষ একজন আরেকজনকে বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদককে সভাপতি বহিষ্কার করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নানকে বিষয়টি অস্বীকার করে ইনকিলাবকে বলেন, আমি তো সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করিনি। এর কোন প্রমাণ নেই। কে থাকবে আর কে থাকবে না এটা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার বিষয়।
সংগঠনের সভাপতিকে সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কার করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে আজম খসরু ইনকিলাবকে বলেন, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান আমাকে সংগঠন থেকে অপসারণ করে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি সম্মেলনে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। প্রথমে তিনি আমাকে অপসারণ করতে পারেন কিনা তাকে প্রশ্ন করুন। তিনি শ্রমিক লীগের কোন কার্যক্রমে থাকেন না। তিনি ভাই লীগ করেন। শ্রমিক লীগের সভাপতি মারা যাওয়ার পর জনাব নুর কুতুব আলম মান্নানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়, কিন্তু তারপর থেকে তিনি সব নিয়ম লঙ্ঘন করে ভাইলীগ করায় ব্যস্ত। তাই শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপের অপরাধে তাকেসহ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (১) খান সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (৩) বি এম জাফর ও দপ্তর সম্পাদক ফজলুল হক কে জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সভাপতি তাকে অপসারণ করেন নি এমন বক্তব্যের কথার প্রেক্ষিতে খসরু বলেন, আমি যখন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিষয়টি জানিয়েছি তাই তিনি ভয়ে এখন অস্বীকার করছেন।
মূলত গত ২৫ জানুয়ারি শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক বৈঠকে সাধারণ সম্পাদককে অপসারণ করে ১ নং যুগ্ম-সাধারণ খান সিরাজুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নান। কিন্তু এ ব্যাপারে কোন প্রেস রিলিস দেয়া হয়নি। তবে এ খবরে নেতাকর্মীরা শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করতে থাকেন। এ বিষয়টি দেখে সাধারণ সম্পাদক খসরু ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নানকে বহিষ্কার করেন।
নুর কুতুব আলম মান্নান বলেন, সংগঠনকে গতিশীল করতে চাইলেও তা হচ্ছে না। সাধারণ সম্পাদক কোন সহযোগিতা করেন না। তাই আলাদা ভাবেই শ্রমিক লীগের কর্মসূচি পালন করে থাকি আমরা।
এদিকে ২৬ ডিসেম্বর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির সই করা চিঠিতে একক সিদ্ধান্তে কমিটি গঠন করতে বারণ করার পাশাপাশি গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে সাধারণ সম্পাদক কে এম আজম খসরুকে সতর্ক করেছেন। এককভাবে সাধারণ সম্পাদক ময়মনসিংহ, কক্সবাজার, খুলনা ও ফরিদপুর জেলায় কমিটি দিয়েছে, যা অবৈধ। অন্যথায় সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় সেসময়।
এর আগে গত অক্টোবরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও বিভক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শ্রমিক লীগের শীর্ষ দুই নেতা-সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক আজম খসরু। আলা আলাদাভাবে সভাপতির নেতৃত্বে একটি অংশ এবং সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে আরেকটি অংশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। আজম খসরুর আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত থাকলেও সভাপতি সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি।
১৯৬৯ সালের ১২ অক্টোবর শ্রমজীবী মানুষের দাবি আদায় ও অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটি এখন বিভেদ ও বিভাজনে জর্জরিত। ২০১৯ সালে সংগঠনটির সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলন হয়েছে। এরপর দায়িত্ব পালনের এক বছরের কিছু বেশিদিন পর অর্থাৎ ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর মারা যান জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু। পরে সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব নেন নূর কুতুব আলম মান্নান। মন্টুর সঙ্গেও মানসিক দূরত্ব ছিল আজম খসরুর। এদিকে অন্যতম ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের এই বেহাল দশায় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড ক্ষুব্ধ। একাধিকবার সতর্ক করলেও কর্ণপাত করেননি সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।