বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
টেকনাফে মাদক প্রতিরোধের আড়ালে খুন ধর্ষণ চাঁদাবাজি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে বহিষ্কৃত টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এর বিশ্বস্ত সহযোগী ছিল টেকনাফ শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি দুর্ধর্ষ কিলার লিয়াকত আলী। টেকনাফ থানা এলাকায় সাজানো বন্দুকযুদ্ধের নামে ১৪৪ টি ক্রসফায়ারে ১৬১ জন মানুষ হত্যার মিশন সফল করে এই খুনি লিয়াকত।
মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা মোঃ রাশেদ খাঁন হত্যা মামলার প্রধান আসামী টেকনাফ বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী ছিলেন পুলিশের সোয়াত ও এন্টি টেরিরিজম টিমের সদস্য। এই টিমে যোগদানের পর থেকে গুলি করা তার নেশা ও পেশায় পরিণত হয়। মানুষের গায়ে গুলি করতে সে দ্বিধাবোধ করত না। সে বেশ কয়েকটি জঙ্গি অভিযানে অংশগ্রহণ করে অনেক কথিত জঙ্গি সদস্যকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে।
এক বছর আগে টেকনাফ থানায় যোগদানের পর ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নেতৃত্বে মাদক কারবারি নির্মূল অভিযানের নামে ওসি প্রদীপের সাথে ১৬১টি বন্দুকযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন লিয়াকত আলী। সেখানে ছোট ইয়াবা কারবারিসহ কতিপয় নিরীহ মানুষকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নির্দেশে কথিত “বন্দুকযুদ্ধে” গুলি চালাতেন লিয়াকত আলী। গত জানুয়ারী থেকে টেকনাফ বাহারছরা শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে আইসির দায়িত্ব পান ওসি প্রদীপের বিশ্বস্থ এই পুলিশ কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৫ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন ইছানগ এলাকায় এক জঙ্গি অভিযানে ১৫ বছরের ১ কিশোর সহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করে হাত পাকা করে লিয়াকত আলী। এছাড়া ২০১৬ সালে সীতাকুন্ডে এক কথিত জঙ্গি অভিযানে আরো ২ জনকে গুলি করে হত্যা করে লিয়াকত আলী। তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের কিলিং টিমের সাথে লিয়াকত আলী কাজ করতো বলে জানা গেছে।
পটিয়া উপজেলার পূর্ব হুলাইন গ্রামের মৃত সাহেব মিয়ার ৬ পুত্রের মধ্যে লিয়াকত আলী সর্বকনিষ্ঠ। ২০১০ সালে সে সরাসরি পুলিশের এস.আই.পদে চাকুরী পায়। জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর সুপারিশে তার চাকুরী নিশ্চিত হয়। বিএনপি পরিবারের সদস্য বিএনপির মতাদর্শী লিয়াকত এবং নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে পটিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইসচেয়ারম্যনের অনুরোধ ক্রমে এমপি শামসুল হক তার পক্ষে সুপারিশ করেন। তবে চট্টগ্রাম কলেজে লেখাপরার সময় লিয়াকত আলী ছাত্র শিবিরের ক্যডার ছিল বলে জানা গেছে।
৩১ জুলাই রাতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খানকে টেকনাফ শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি লিয়াকতই ওসি প্রদীপে নির্দেশে গুলি করে নির্মম ভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের পরে মেজর সিনহার বোনের করা একটি হত্যা মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ ও আইসি লিয়াকত আলীসহ ৭ আসামী এখন কারাগারে। মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে যেকোনো সময় জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি চলছে।
২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারাদেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করে সরকার। মাদক বিরোধী এই অভিযানকে পুঁজি করেই টেকনাফের বহিস্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার ও লিয়াকতসহ তার সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিয়েছে শত শত নয় হাজার হাজার কোটি টাকা। হত্যা করে দেড় শতাধিক নিরীহ মানুষ। আর ওই টাকায় ওসি প্রদীপ ও লিয়াকত গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। ম্যানেজ করতো রাজনৈতিক নেতা, সংবাদ মিডিয়া ও দাপ্তরিক তদন্ত।
খবর নিয়ে জানা গেছে, মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় লিয়াকত আলী ১ নম্বর আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া সারাদেশের মানুষের মতো তার এলাকার মানুষ ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এবং তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন তার এলাকার মানুষও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।