পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০২০ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ১৮৮ জন। মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছেন ১১২ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার মানবাধিকার পরিস্থিতি-২০২০ নিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আসক সদস্য আবু আহমেদ ফজলুল কবির।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বছরজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নিহত হয়েছেন ১১ জন। গ্রেফতারের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে মারা গেছেন ১৩ জন। অসুস্থতাসহ নানা কারণে দেশের কারাগারগুলোতে মারা গেছেন ৭৫ জন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনে নিহত হয়েছেন ৪৯ বাংলাদেশী। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০২০ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় মহামারির মধ্যে অর্থনীতি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অধিকারের ক্ষেত্রে অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রয়েছে।
তবে এর মাঝেও চিকিৎসা খাতে চরম অনিয়ম, ত্রুটিপূর্ণ করোনা পরীক্ষা, অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর চরম মূল্য মানুষকে ভুগিয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টেকনাফের মেরিন ড্রাইভে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে হত্যা করা হয় ‘বন্দুক যুদ্ধ’র নামে। এ ঘটনা বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড নিয়ে চলমান প্রশ্ন আবারও সামনে উঠে আসে। মেজর সিনহা হত্যাকান্ডের পর জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ‘ক্রসফায়ার-বন্দুক যুদ্ধ’র ঘটনা ২০২০ সালে অপেক্ষাকৃত কম সংঘতি হলেও বছরজুড়ে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে, বিশেষ করে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর অনেক ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ ও গুমের ঘটনাও থেমে থাকেনি এ সময়ে। ১১ মার্চ ঢাকার হাতিরপুল এলাকার পক্ষকাল অফিস থেকে বের হয়ে ‘নিখোঁজ’ হন ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। ‘নিখোঁজ’-এর ৫৩ দিন পর ৩ মে গভীর রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্তের ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ সংলগ্ন এলাকা থেকে কাজলকে উদ্ধারের দাবি করে বিজিবি। এ ছাড়া বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নির্যাতন ও গুলি করে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে বছরজুড়ে।
আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর কয়েকটি ঘটনাও আলোচনার জন্ম দেয়। গ্রেফতারের পর তাদের হেফাজতে নিহত হন ১১ জন। এছাড়া গ্রেফতারের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে মারা যান ৫ জন এবং গুলিতে নিহত হয়েছেন ৮ জন। অন্যদিকে এ বছর দেশের কারাগারগুলোতে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা গেছেন ৭৫ জন।
আসকের তথ্য অনুযায়ী গত ১১ অক্টোবর সিলেটের কোতয়ালী থানার বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমেদ নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহতের স্বজনরা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে রায়হানের লাশ দেখেন। মৃত রায়হানের হাতের নখ উপড়ানো এবং কোমর-পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় ‘হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ’ আইনে মামলা করেন।
গত ১৮ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যায় সাদা পোশাকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ৮-১০ জন সদস্য বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় ইয়াসমিন বেগম নামে এক নারীকে। আটকের আগে ইয়াসমিনকে লাঠি দিয়ে পেটায় ডিবি পুলিশ। মারতে মারতে তাকে গাড়িতে তোলা হয়। সে সময় ইয়াসমিনের ৬ বছরের মেয়ে বাধা দিতে গেলে তাকেও নির্যাতন করা হয়। ওমান প্রবাসী মো. জাফর ছুটিতে দেশে আসার পর গত ২৯ জুলাই চট্টগ্রামের পটিয়া থানা এলাকার দিঘিরপাড় গ্রামে বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান ও ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম। পরে চকরিয়া থানার ওসি পরিচয়ে জাফরের স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে বলা হয়, জাফর ইয়াবা ব্যবসায়ী। তাকে ছাড়াতে হলে ৫০ লাখ টাকা লাগবে। দু’দিন পর ৩১ জুলাই চকরিয়া থানা থেকে স্থানীয় এক ইউপি মেম্বারকে ফোন করে জানানো হয়, জাফর চকরিয়া এলাকায় ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনাও ছিল আলোচিত।
২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দর কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরআন শরীফ অবমাননার গুজব রটিয়ে আবু ইউনুস শহীদুন্নবী জুয়েল নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়। ‘বিচারবহিভর্‚ত হত্যাকান্ড’ হিসেবে এ ঘটনাও ছিল আলোচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।