Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পরিচয় শনাক্তের পরও আসছে না ২ লাশ

আসামে গণপিটুনীতে নিহত তিন বাংলাদেশী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

ভারতে আসাম রাজ্যে অমানবিক নির্যাতনে নিহত তিন বাংলাদেশি যুবকের মধ্যে দুজনের পরিচয় শনাক্তের সাত দিনেও লাশ দেশে না আসায় স্বজনরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। নিহতরা হলেন, এরা হলেন- বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে জুয়েল আহমদ (২৬) ও আকদ্দছ মিয়ার ছেলে নুনু মিয়া (৩২)। তারা সম্পর্কে চাচা ভাতিজা এবং পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক। অবশেষে গত ২০ জুলাই বিকালে দুজনকে বড়লেখায় শনাক্ত করে তার স্বজনরা।

ভারতীয় গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তরফ থেকে গত রোববার বিকাল পর্যন্ত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ) লাশের পরিচয় শনাক্তের তথ্য জানানো হয়নি। বাংলাদেশি বিভিন্ন মিডিয়ায় পরিচয় উদ্ধারের রেফারেন্স দিয়ে বিজিবিকে শেষমেষ চিঠি পাঠাবে বিএসএফ। সাড়া না পেলে বেওয়ারিশ হিসেবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করবে ভারত।
এদিকে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। এক সপ্তাহ আগে বিজিবি নিহতদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত ফিরিয়ে আনার তথ্য না পাওয়ায় দুই পরিবারে উদ্বেগ-আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ভারতের পাথারকান্দি বুবরীঘাট চা বাগানে শনিবার (১৯ জুলাই) রাতে গরু চোর সন্দেহে বাগান শ্রমিকরা কয়েক ব্যক্তিকে আটক করে। অমানবিক গণপিটুনিতে তিন জনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিএসএফ ১৩৪ ব্যাটালিয়নের আধিনায়ক ও করিমগঞ্জ সীমান্ত শাখার অতিরিক্ত পুলিশ অধিক্ষক প্রশান্ত দত্ত। বিএসএফ ও পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তিনটি লাশের সাথে থাকা নথিপত্র দেখে তারা বাংলাদেশি নাগরিক বলে নিশ্চিত হন। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করেন, মৃত ব্যক্তিরা মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জামকান্দি এলাকার বাসিন্দা। জুড়ী বিজিবি ও থানা পুলিশ জামকান্দি এলাকায় খোঁজ করেও বিএসএফের পাঠানো তথ্যমতে কাউকে পায়নি।
নিহত জুয়েল আহমদের ভাই রুবেল আহমদ ও সোহেল আহমদ জানান, তার ভাই ও চাচা সিএনজি চালান। গত কয়েক দিন থেকে বাড়ি ফিরছেন না। ভারতে ৩ বাংলাদেশি মারা যাওয়ার খবর শুনে জুড়ী থানায় যোগাযোগ করেন। ৩ জনের লাশের ছবির মধ্যে চাচাকে শনাক্ত করি। বাকিগুলো অস্পষ্ট হওয়ায় ওসি স্যার অন্য এঙ্গেলের ছবি যোগাড় করে দেখালে ভাইকেও শনাক্ত করি। লাশ আনার ব্যাপারে গত ২০ জুলাই বিজিবির লাঠিটিলা ক্যাম্পে গিয়ে তাদের এনআইডি কার্ড, ছবি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাত দিন অতিবাহিত হলেও বিজিবি তাদের কিছুই জানাচ্ছে না।
এছাড়া গত ২৪ জুলাই ভারতের একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদসূত্রে জানা গেছে, সাত দিন আগে দুই বাংলাদেশির লাশের পরিচয় উদ্ধার হলেও বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী (বিজিবি) বাহিনীর পক্ষ থেকে বিএসএফকে পরিচয় পাওয়ার তথ্য দেয়া হয়নি। গত ছয় দিনে চারবার দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দুই লাশের পরিচয় পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। বাংলাদেশি বিভিন্ন মিডিয়ায় লাশের পরিচয় উদ্ধারের রেফারেন্স দিয়ে বিজিবিকে শেষমেষ চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসএফ। বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গাজী শহীদুল্লাহ জানান, পরিচয় শনাক্ত দুই বাংলাদেশির লাশের নাম-ঠিকানা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অনেক আগেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পাঠানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ