Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে টক্কর! মঙ্গলে এবার মহাকাশযান পাঠাল চীন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২০, ৩:০২ পিএম

চীন বৃহস্পতিবার মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশ্যে একটি মহাকাশযান প্রেরণ করেছে। তাদের এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিযান সফল হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে লাল গ্রহে অবতরণকারী দ্বিতীয় দেশ হিসাবে নাম লেখাবে তারা।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত রিসর্ট প্রদেশ হাইনান দ্বীপ থেকে লং মার্চ-২ নামের একটি পরিবহণ রকেটে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এটি চীনের সর্ববৃহৎ মহাকাশযান। এটি একটি ল্যান্ড রোভার নিয়ে মঙ্গলে অবতরন করবে। এই অভিযানটির নাম দেয়া হয়েছে ‘তিয়ানওয়েন-১’। এর বাংলা অর্থ দাঁড়ায় ‘স্বর্গীয় সত্যের সন্ধান’। চীনের একটি বিখ্যাত কবিতা থেকে নামকরণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মহাকাশ অভিযানে আমেরিকার একচ্ছত্র শাসনকে অগ্রাহ্য করে নতুন চাল দিলেন শি জিনপিং।

এদিকে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা-নাসা চলতি মাসের ৩০ তারিখে তাদের প্রিজারভেন্স নামক মঙ্গলযান উৎক্ষেপণ করবে বলে জানিয়েছে । দুই দেশের উৎক্ষেপিত মহাকাশযানই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি নাগাদ মঙ্গলে পোঁছাবে, বলে আশা করা হচ্ছে। ২৩ জুলাই বাংরাদেশ সময় সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে মঙ্গল অভিযান শুরু করে চীন। এই পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বই এখন তাকিয়ে রয়েছে মূলত চীন-আমেরিকার মহাকাশ প্রতিযোগিতার দিকেই।

আন্তর্জাতিক সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রায় ৭ মাসের যাত্রা শেষে ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ মাইল পার করে মঙ্গলে পৌঁছাবে তিয়ানওয়েন-১। মূলত একটি কক্ষপথ প্রদক্ষিণকারী, একটি ল্যান্ডার ও একটি রোভারকে সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছে লং মার্চ ৫। এ বিষয়ে হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান কেন্দ্রের মহাকাশ গবেষক জোনাথন ম্যাকডওয়েল জানিয়েছেন, ‘প্রথম চেষ্টাতেই আমেরিকাকে চীন ছাপিয়ে যাবে, এমনটা আশা করা উচিত নয়।’ তিনি আরও জানান, ‘১৯৭৫-৭৬ সালে নাসার ভাইকিং অভিযানের ন্যায় তিয়ানওয়েন-১-এরও একটি ল্যান্ডার ও একটি প্রদক্ষিণকারী রয়েছে।’

ঠাণ্ডা যুদ্ধের আবহে আমেরিকা ও রাশিয়ার মহাকাশ অভিযানে সাফল্য দেখে চীনও কয়েক কোটি কোটি ডলার খরচ করে মহাকাশ অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনে মহাকাশ-বিদ্যা সংক্রান্ত গবেষণাকারী ওয়েবসাইট গোতাইকোনটস.কম-এর গবেষক চেন লেন জানিয়েছেন, ‘প্রায় অর্ধ-শতাব্দী ধরে মহাকাশে আমেরিকার যে আধিপত্য, তা শেষ করবে চীন।’ ইতিমধ্যে ২০০৩-এ মহাকাশে মানুষ প্রেরণ করেছে চীন। তাছাড়া ২০২২-এর মধ্যে নতুন মহাকাশ স্টেশন তৈরির দিকেও এগোচ্ছে তারা। দুইবার রোভার পাঠিয়ে চীন মহাকাশ অভিযান সম্বন্ধে অবহিত হলেও, আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষকদের মতে এই মঙ্গল-যাত্রা অনেকটাই দুঃসাধ্য।

ম্যাকডওয়েল জানিয়েছেন, ‘চীনের রোভার মঙ্গলে পৌঁছালেও তথ্য সংগ্রহে সময় লাগবে অনেক। এর কারণ হল দূরত্ব যত বাড়ে, ততই রেডিও সিগন্যালের পৃথিবীতে পৌঁছাতে সমস্যা বাড়ে। ফলত অতি ক্ষীণ সিগন্যাল গ্রহণ করতে দরকার অতি স্পর্শকাতর গ্রাউন্ড স্টেশন।’ চীনের সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, জিনজিয়াং ও হেইলংজিয়াং প্রদেশে গ্রাউন্ড স্টেশন সম্পূর্ণ করার দিকে এগোচ্ছে চীন। চেন জানিয়েছেন, ‘এখনও পর্যন্ত ১৯৬০ থেকে মঙ্গল-যাত্রার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে বহু দেশ। রাশিয়ার সাথে যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রেও ব্যর্থ হয়েছিল চীন। তবে তথ্যপ্রযুক্তির প্রভূত উন্নতির কারণে এইবারে আশাবাদী চীনা বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: টিওআই।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ