Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মধুর বিড়ম্বনায় ইংল্যান্ড

অলিখিত ‘ফাইনাল’ কাল

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২০, ১২:০৩ এএম

সাউদাম্পটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে একরকম অসহায় আত্মসমর্পণ, ওল্ড ট্রাফোর্ডে অসম্ভবকে জয় করে সিরিজে ফেরা- এমন এক সময়ে সিরিজের তৃতীয় টেস্টকে ঘিরে মধুর এক সমস্যায় পড়েছে ইংল্যান্ড। দলটির কোচ হিসেবে ছোট্ট ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় এক চ্যালেঞ্জের সামনে এখন ক্রিস সিলভারউড। যদিও সমস্যাটি মধুর, সব দল ও কোচেরই কাক্সিক্ষত। তবে কোচের দূরদর্শিতা ও ‘ম্যান ম্যানেজমেন্ট’ দক্ষতার কঠিন পরীক্ষাও এটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টের ইংল্যান্ড একাদশে কাকে রেখে নেওয়া হবে কাকে!
তিন ম্যাচ সিরিকে এখন ১-১ সমতা। আগামীকাল থেকে এই ওল্ড ট্রাফোর্ডেই শুরু হবে অলিখিত ফাইনাল টেস্টটি। এই ম্যাচ জিতে তাই শিরোপা নিজেদের ঝুলিতে পুড়তে চাইছে স্বাগতিকরা। আর তাতে ‘সমস্যা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে দল নির্বাচন। মূল লড়াই পেস আক্রমণে জায়গা পাওয়া নিয়ে। প্রথম দুই টেস্টে পুরো ভিন্ন দুটি পেস আক্রমণ খেলিয়েছে ইংল্যান্ড। প্রথম টেস্টে অভিজ্ঞ জিমি অ্যান্ডারসনের সঙ্গে ছিলেন মার্ক উড ও জফ্রা আর্চার। পরের টেস্টে স্টুয়ার্ট ব্রডের সঙ্গী ছিলেন ক্রিস ওকস ও স্যাম কারান। কেবল পেস বোলিং অলরাউন্ডার বেন স্টোকস ছিলেন দুই টেস্টেই।
পেসারদের পারফরম্যান্সই জমিয়ে তুলেছে একাদশে জায়গা পাওয়ার লড়াই। প্রথম টেস্টে অ্যান্ডারসন ও আর্চার নিয়েছিলেন তিনটি করে উইকেট, মার্ক উড দুটি। পরের টেস্টে অ্যান্ডারসন ও উডকে দেওয়া হয় বিশ্রাম। শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় বাদ পড়েন আর্চার। প্রথম টেস্টের দলে জায়গা না পাওয়ায় প্রকাশ্যেই ক্ষোভ ঝেরেছিলেন ব্রড। দ্বিতীয় টেস্টে তার আগুনে বোলিংয়ে পুড়েছে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছেন ৬ উইকেট। চতুর্থ দিন বিকেলে তার দুর্দান্ত এক স্পেল ও শেষ দিনে নতুন বলের স্পেল ইংল্যান্ডকে এগিয়ে নিয়েছে জয়ের পথে। দারুণ বোলিংয়ে একই টেস্টে ৫ উইকেট নিয়েছেন ওকস, চমৎকার সুইং বোলিংয়ে কারান নিয়েছেন ৩টি।
শেষ টেস্টে হবে সিরিজের ফয়সালা। এমন ম্যাচে টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসার অ্যান্ডারসনকে বাইরে রাখতে চাইবে না ইংল্যান্ড। সিলভারউড এর মধ্যেই বলেছেন, ‘অ্যান্ডারসন বিশ্বমানের বোলার এবং আমাদের সেরা সম্পদ। গতি-বাউন্স ও ‘এক্স ফ্যাক্টর’ মিলিয়ে আর্চারকে বাইরে রাখাও কঠিন’। সেক্ষেত্রে লড়াই আর একটি জায়গা নিয়ে। অভিজ্ঞতা ও গত টেস্টের অসাধারণ বোলিং মিলিয়ে ব্রড এগিয়ে থাকবেন নিশ্চিতভাবেই। গত দুই বছরে শুধু ইংল্যান্ড নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেই দ্বিতীয় সফলতম টেস্ট পেসার ব্রড। তবে ওকস যে কার্যকারিতা দেখিয়েছেন এবং বাঁহাতি পেসার কারানের সুইং আক্রমণে যে বৈচিত্র যোগ করে, এসব ভাবনাকে উপেক্ষা করাও হবে কঠিন।
লড়াইয়ে আপাতত কিছুটা পিছিয়ে উড। নেটে দারুণ বোলিং করে গেলেও ক্রেইগ ওভারটন, অলিভার স্টোন ও অলিভার রবিনসনের আপাতত বাইরে বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই। ছয়জন থেকে তিনজনের কার্যকর পেস আক্রমণ বাছাই করাই শুধু নয়, ইংল্যান্ড কোচকে ভাবতে হবে বাদ পড়াদের ঠিকভাবে সামলানো নিয়েও। তাদের কাছে ব্যাখ্যা করা ও সন্তুষ্ট করা কতটা জরুরি, প্রথম টেস্টের সময় ব্রডের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া থেকেই ধারণা পাওয়া যায়। সিলভারউড সেই কঠিন পরীক্ষার জন্য তৈরি। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ইংল্যান্ড কোচ এটুকু জানালেন, শেষ টেস্টে কোনো বিশ্রাম বা পরীক্ষা-নিরিক্ষার পথে যাবেন না তারা, ‘সম্ভাব্য সবচেয়ে শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ নিয়েই মাঠে নামতে হবে আমাদের। সবাইকে সবসময় খুশি করা কঠিন। তবে সঠিক কারণে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে, আশা করি সবাই সেটি অনুধাবন করতে পারবে। ব্যাপারটি হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণে সৎ থাকা এবং যা করতে চাচ্ছি ও যে কারণে চাচ্ছি, সেটি নিয়ে খোলামেলা কথা বলা। সবাই চায় সব ম্যাচে খেলতে। ওরা সবসময় খেলতে না চাইলেই বরং আমি হতাশ হব। যখন বিশ্বমানের ক্রিকেটারদেরও একাদশের বাইরে রাখতে হয়, তার মানে ইংল্যান্ড দল দারুণ অবস্থায় আছে। কাজটি কখনোই সহজ নয় এবং সবসময়ই চাপে থাকতে হবে। তবে চেষ্টা করতে হবে যতটা সম্ভব সৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার।’
পেস আক্রমণ ছাড়াও আরও দুটি জায়গা নিয়ে আলোচনা আছে। একমাত্র স্পিনার ডমিনিক বেস ও কিপার-ব্যাটসম্যান জস বাটলারকে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নিয়মিতই। স্পিনে বাইরে অপেক্ষায় আছেন বাঁহাতি স্পিনার জ্যাক লিচ। বাটলারের রান খরায় জনি বেয়ারস্টোকে ফেরানোর দাবি জোরালো হচ্ছে ক্রমশ। তবে সিলভারউড ইঙ্গিত দিয়েছেন, পরের টেস্টেও বেস ও বাটলারের ওপর ভরসা রাখার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইংল্যান্ড


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ