মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে বলা হয় মসজিদের নগরী। সরকারী হিসাবে ঢাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে ছড়িয়ে আছে প্রায় ৬ হাজার মসজিদ। বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় সুত্রে এ তথ্য জানা গেলেও ইংল্যান্ডেও যে আছে মসজিদের নগরী তা জানা গেছে কমনওয়েলথ গেমস কাভার করতে বার্মিংহামে এসে। বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলের তথ্য মতে এখানে রয়েছে প্রায় ২ হাজার মসজিদ। যেখানে নিয়মিত জামাতে নামাজ পড়েন বার্মিংহামে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা।
কমনওয়েলথ গেমস কাভার করতে এসে বার্মিংহামে পা রেখেছি গত ২৬ জুলাই। শহরের প্রাণকেন্দ্র অ্যারেনা বার্মিংহামের মেইন মিডিয়া হাব থেকে নিজের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বুঝে নিয়ে দীর্ঘ ভ্রমণকøান্তি দূর করতে ট্যাক্সিযোগে রওয়ানা হলাম এখানকার আবাসস্থল অ্যাস্টনের ব্রেন্ডলি রোডের বাড়ির উদ্দ্যেশে। যাত্রা পথে দেখলাম ছোট্ট ছোট্ট দলে ভাগ হয়ে মাগরিবের নামাজ আদায় করতে মসজিদের উদ্দেশ্যে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন বাংলাদেশি, পাকিস্তানী, ইংরেজ ও ভারতীয়রা। আমাদের পাকিস্তানী ট্যাক্সি ড্রাইভার মোহাম্মদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলাম ‘ওরা কোথায় নামাজ পড়বে’? হোসেনের উত্তর, ‘অ্যাস্টনের আশে-পাশে অনেকগুলো মসজিদ আছে। মসজিদগুলোতে নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায় করেন বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা। তবে মুসল্লিদের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও ভারতীয় নাগরিকদের সংখ্যাই বেশী।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বার্মিংহাম শহরে থাকা প্রায় ২০০০ মসজিদের পাশাপাশি অনেক মুসলিম বাড়িতেও ছোট ছোট জামাতের আয়োজন করা হয়। এখানকার স্থানীয় নন-ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা জানান, বার্মিংহামের অ্যাস্টনেই আছে প্রায় ৩০টি মসজিদ, লজেলসে আছে ১০টি, এখানকার লজেলস রোড বাঙালি পাড়া হিসেবে খ্যাত। কাজ শেষে মসজিদে নামাজ আাদায় করে প্রতিদিন এই এলাকার অ্যারোমা কফিবারে ক্ষণিকের আড্ডায় মিলিত হন প্রায় শ’খানেক বাংলাদেশি। এদেরই একজন নন-ব্রিটিশ বাঙালি গাজিপুরের হাসান খান মিল্টন। তিনি জানান, বার্মিংহামে বড় মসজিদগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- লজেলস রোডস্থ সেন্ট্রাল মসজিদ ও অ্যাস্টনের বার্মিংহাম জামে মসজিদ। এ দুই মসজিদে এক সঙ্গে প্রায় ৫ হাজার করে মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
জামে মসজিদের আগে নাম ছিল সাদ্দাম মসজিদ। পরে এর নামকরণ হয় বার্মিংহাম জামে মসজিদ। মিল্টন বলেন, ‘ইরাকের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ১৯৮৮ সালে বার্মিংহাম সফরে এসে নিজ অর্থায়নে এই মসজিদ নির্মাণ করার ব্যবস্থা করেন। তখন সাদ্দাম হোসেন এখানে জায়গা কিনে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করে দেশে ফেরেন। পড়ে নির্মাণ কাজ শেষ হলে ফের তিনি এখানে এসেছিলেন।’ তিনি যোগ করেন, ‘সাদ্দামের মৃত্যুর পরই এই মসজিদের নাম বদলে রাখা হয় বার্মিংহাম জামে মসজিদ! এর পাশেই আছে মসজিদ-উল-মদিনা। মসজিদগুলো পরিচালনার দায়িত্বে আছেন বাংলাদেশি ও পাকিস্তানীরা।’
হ্যান্ডসওয়াট রোডের বাসিন্দা শরিয়তপুরের মোশারফ হোসেন জানান, বার্মিংহামের মসজিদগুলোতে মাদ্রাসাও রয়েছে। এই মাদ্রাসাগুলোতে বাংলাদেশের মতই শিক্ষা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে থাকাকালে এখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে অনেকেই নামাজ পড়তেন না। কিন্তু বার্মিংহামে এসে তাদের বেশিরভাগই নামাজ পড়া শুরু করেছেন। ধর্মের প্রতি আসক্তি হয়ে নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলেছেন প্রায় সবাই।’ কুমিল্লার মোনায়েম মজুমদার বলেন, ‘আমি আগে ইতালিতে ছিলাম। সেখানে থাকতে নামাজ পড়তাম না। বার্মিংহামে আসার পর নামাজ ধরেছি। এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। শত ব্যস্ততার মাঝেও মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করার পর খুবই শান্তি লাগে।’
কমনওয়েলথ গেমস শেষে ৯ আগস্ট লন্ডন শহরে এসেও দেখা মিললো একই দৃশ্যের। নামাজ আদায় করে এখানকার হোয়াইট চ্যাপেল এলাকার বিখ্যাত ইস্ট লন্ডন মসজিদ থেকে ব্রিটিশ-নন ব্রিটিশ বাঙালিদের বেরিয়ে যাওয়ার দৃশ্য যেন মনে করিয়ে দেয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা’কে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।