মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে ইরানে একটি বিনিয়োগ এবং সুরক্ষা চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে চীনের প্রভাবকে ব্যাপকভাবে প্রসারিত করতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ পদক্ষেপ ইরানকে অর্থনৈতিকভাবে চাঙ্গা করে তুলবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীন ও ইরানের বিরোধে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে। এ প্রেক্ষিতে প্রকাশিত দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্সের প্রতিবেদনটি ২ পর্বে প্রকাশ করা হ’ল :
ইরান ও চীন একটি বৃহৎ অর্থনৈতিক ও সামরিক সুরক্ষাভিত্তিক অংশীদারিত্বের খসড়া তৈরি করেছে যা জ্বালানি ও অন্যান্য খাতে সর্বমোট ৪০ হাজার কোটি ডলার চীনা বিনিয়োগের পথ সুগম করবে, যা ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক উচ্চাকাক্সক্ষায় বাধা দিতে ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত অর্থনৈতিক অবরোধকে বুড়োআঙ্গুল দেখিয়ে দিয়েছে। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্সের সংগৃহীত নথি থেকে জানা গেছে, ১৮ পৃষ্ঠার এ অংশীদারিত্ব প্রস্তাবে ব্যাংকিং, টেলিযোগাযোগ, সমুদ্র বন্দর, রেলপথ এবং কয়েক ডজন অন্যান্য প্রকল্পে ব্যাপকভাবে চীনা বিনিয়োগের প্রসার ঘটবে। বিনিময়ে, চীনকে আগামী ২৫ বছর ধরে নিয়মিতভাবে এবং ব্যাপক মূল্যছাড়ে তেল সরবরাহ করবে ইরান। এ প্রস্তাবনায় আরও গভীরতর সামরিক সহযোগিতার বর্ণনা করা হয়েছে, যা কয়েক দশক ধরে এঅঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থান রয়েছে এমন স্থানগুলিতে সম্ভাব্যভাবে চীনকে প্রবেশের সুযোগ করে দেবে।
এ অংশীদারিত্বে সন্ত্রাসবাদ, মাদক ও মানব পাচার এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে সর্বোতভাবে লড়াই করার জন্য যৌথ প্রশিক্ষণ ও মহড়া, যৌথ গবেষণা এবং অস্ত্র উন্নয়ন এবং গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির আহ্বান জানানো হয়েছে। খসড়া চুক্তিতে প্রায় ১শ’টি প্রকল্প উদ্ধৃত হয়েছে, যা ইউরোপ ও এশিয়া জুড়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং’র অর্থনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাবকে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বা বিস্তৃত সহায়তা ও বিনিয়োগ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রসারিত করার জন্য একটি উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ। বিমানবন্দর, দ্রুতগতির রেলপথ এবং পাতাল রেলসহ প্রকল্প লাখ লাখ ইরানীর জীবনকে বদলে দেবে। চীন উত্তর-পশ্চিম ইরানে অবস্থিত আবাদানের মাকুতে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তুলবে, যেখানে শাত-আল-আরাব নদী পারস্য উপসাগরের দিতে প্রবাহিত। চুক্তিতে চীনকে ইরানের জন্য একটি ৫জি টেলিযোগযোগ নেটওয়ার্কের অবকাঠামো তৈরি, নতুন চীনা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বিডৌ ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার জন্য এবং ইরানকে সাইবার নেটওয়ার্কের ওপর বৃহত্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্যেও আহ্বান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দু’দেশের সামরিক সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং গোয়েন্দা কার্যক্রম সম্প্রসারণকে সতর্কতার সাথে দেখছে ওয়াশিংটন। মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইতোমধ্যে পারস্য উপসাগরে ইরানী বাহিনীর সাথে নিয়মিত মুখোমুখি হতে শুরু করেছে এবং দক্ষিণ চীন সাগরের বেশিরভাগ অংশে চীনের আন্তর্জাতিক দাবির বিরোধিতা করে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। পাশাপাশি, চীনকে প্রতিপক্ষ হিসাবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, ইরানি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে বলেছেন যে, চীনের সাথে একটি চুক্তি বিবেচনাধীন রয়েছে এবং চুক্তি সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন যে, দ্য টাইমসের প্রাপ্ত নথিটিকে প্রস্তাবনাটির চ‚ড়ান্ত সংস্করণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাতে তারিখ হিসেবে ২০২০ সালের জুনের উল্লেখ রয়েছে। এটি এখনও ইরানের সংসদে অনুমোদনের জন্য জমা দেয়া হয়নি বা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। ইরান সরকার চীনকে কতটা ছাড় দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ইরানি বিশেষজ্ঞদের।
ইরানের সাথে বানিজ্য রয়েছে এমন যেকোনও সংস্থার আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় প্রবেশ বন্ধ করার হুমকিসহ নবায়নকৃত মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলি ইরানকে চীনের বলয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে, যার ইরানের তেলের প্রতি ক্ষুধা এবং ইরানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি রয়েছে। ইরান বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদক দেশগুলির অন্যতম এবং চীন বিদেশ থেকে প্রায় ৭৫ শতাংশ তেল আমদানি করে ও বিশ্বের বৃহত্তম আমদানিকারক। গত বছর এক কোটি ব্যারেলেরও বেশি তেল আমদানি করেছে চীন। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।