Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের ৪০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ইরানে

ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য ও সামরিক অংশীদারিত্ব-১

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০২০, ১২:০১ এএম

যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে ইরানে একটি বিনিয়োগ এবং সুরক্ষা চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে চীনের প্রভাবকে ব্যাপকভাবে প্রসারিত করতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ পদক্ষেপ ইরানকে অর্থনৈতিকভাবে চাঙ্গা করে তুলবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীন ও ইরানের বিরোধে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে। এ প্রেক্ষিতে প্রকাশিত দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্সের প্রতিবেদনটি ২ পর্বে প্রকাশ করা হ’ল :
ইরান ও চীন একটি বৃহৎ অর্থনৈতিক ও সামরিক সুরক্ষাভিত্তিক অংশীদারিত্বের খসড়া তৈরি করেছে যা জ্বালানি ও অন্যান্য খাতে সর্বমোট ৪০ হাজার কোটি ডলার চীনা বিনিয়োগের পথ সুগম করবে, যা ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক উচ্চাকাক্সক্ষায় বাধা দিতে ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত অর্থনৈতিক অবরোধকে বুড়োআঙ্গুল দেখিয়ে দিয়েছে। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্সের সংগৃহীত নথি থেকে জানা গেছে, ১৮ পৃষ্ঠার এ অংশীদারিত্ব প্রস্তাবে ব্যাংকিং, টেলিযোগাযোগ, সমুদ্র বন্দর, রেলপথ এবং কয়েক ডজন অন্যান্য প্রকল্পে ব্যাপকভাবে চীনা বিনিয়োগের প্রসার ঘটবে। বিনিময়ে, চীনকে আগামী ২৫ বছর ধরে নিয়মিতভাবে এবং ব্যাপক মূল্যছাড়ে তেল সরবরাহ করবে ইরান। এ প্রস্তাবনায় আরও গভীরতর সামরিক সহযোগিতার বর্ণনা করা হয়েছে, যা কয়েক দশক ধরে এঅঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থান রয়েছে এমন স্থানগুলিতে সম্ভাব্যভাবে চীনকে প্রবেশের সুযোগ করে দেবে।
এ অংশীদারিত্বে সন্ত্রাসবাদ, মাদক ও মানব পাচার এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে সর্বোতভাবে লড়াই করার জন্য যৌথ প্রশিক্ষণ ও মহড়া, যৌথ গবেষণা এবং অস্ত্র উন্নয়ন এবং গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির আহ্বান জানানো হয়েছে। খসড়া চুক্তিতে প্রায় ১শ’টি প্রকল্প উদ্ধৃত হয়েছে, যা ইউরোপ ও এশিয়া জুড়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং’র অর্থনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাবকে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বা বিস্তৃত সহায়তা ও বিনিয়োগ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রসারিত করার জন্য একটি উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ। বিমানবন্দর, দ্রুতগতির রেলপথ এবং পাতাল রেলসহ প্রকল্প লাখ লাখ ইরানীর জীবনকে বদলে দেবে। চীন উত্তর-পশ্চিম ইরানে অবস্থিত আবাদানের মাকুতে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তুলবে, যেখানে শাত-আল-আরাব নদী পারস্য উপসাগরের দিতে প্রবাহিত। চুক্তিতে চীনকে ইরানের জন্য একটি ৫জি টেলিযোগযোগ নেটওয়ার্কের অবকাঠামো তৈরি, নতুন চীনা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বিডৌ ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার জন্য এবং ইরানকে সাইবার নেটওয়ার্কের ওপর বৃহত্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্যেও আহ্বান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দু’দেশের সামরিক সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং গোয়েন্দা কার্যক্রম সম্প্রসারণকে সতর্কতার সাথে দেখছে ওয়াশিংটন। মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইতোমধ্যে পারস্য উপসাগরে ইরানী বাহিনীর সাথে নিয়মিত মুখোমুখি হতে শুরু করেছে এবং দক্ষিণ চীন সাগরের বেশিরভাগ অংশে চীনের আন্তর্জাতিক দাবির বিরোধিতা করে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। পাশাপাশি, চীনকে প্রতিপক্ষ হিসাবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, ইরানি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে বলেছেন যে, চীনের সাথে একটি চুক্তি বিবেচনাধীন রয়েছে এবং চুক্তি সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন যে, দ্য টাইমসের প্রাপ্ত নথিটিকে প্রস্তাবনাটির চ‚ড়ান্ত সংস্করণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাতে তারিখ হিসেবে ২০২০ সালের জুনের উল্লেখ রয়েছে। এটি এখনও ইরানের সংসদে অনুমোদনের জন্য জমা দেয়া হয়নি বা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। ইরান সরকার চীনকে কতটা ছাড় দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ইরানি বিশেষজ্ঞদের।
ইরানের সাথে বানিজ্য রয়েছে এমন যেকোনও সংস্থার আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় প্রবেশ বন্ধ করার হুমকিসহ নবায়নকৃত মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলি ইরানকে চীনের বলয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে, যার ইরানের তেলের প্রতি ক্ষুধা এবং ইরানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি রয়েছে। ইরান বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদক দেশগুলির অন্যতম এবং চীন বিদেশ থেকে প্রায় ৭৫ শতাংশ তেল আমদানি করে ও বিশ্বের বৃহত্তম আমদানিকারক। গত বছর এক কোটি ব্যারেলেরও বেশি তেল আমদানি করেছে চীন। (চলবে)



 

Show all comments
  • Mohammad Shamsuddoha Tapos ১৪ জুলাই, ২০২০, ২:২৭ এএম says : 0
    good planing
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Hasan ১৪ জুলাই, ২০২০, ২:৪৪ পিএম says : 0
    চীন ও ইরানের এই সম্পর্ক বিশ্বের জন্য একটা ভালো অধ্যায়ের সুচনা করবে
    Total Reply(0) Reply
  • তানিয়া ১৪ জুলাই, ২০২০, ২:৪৬ পিএম says : 0
    ইরানের আছে তেল আর চীনের আছে অর্থ। দুই দেশ এক সাথে কাজ করলে বিশ্বে আমেরিকার প্রভাব অনেকটাই কমে যাবে
    Total Reply(0) Reply
  • জাহিদ ১৪ জুলাই, ২০২০, ২:৪৭ পিএম says : 0
    এই ধরনের চুক্তি আরও আগে হলে অনেক ভালো হতো
    Total Reply(0) Reply
  • জান্নাতুল নাঈম মনি ১৪ জুলাই, ২০২০, ২:৫০ পিএম says : 0
    আমেরিকা, ইসরাইল ও ভারত পৃথিবীর জন্য হুমকি। তাই চীন রাশিয়া তুরস্ক ইরান ও পাকিস্তানকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তাহলেই হয়তো বিশ্বে কিছুটা হলেও আগ্রাসী রোষানল বন্ধ হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • আবেদ খান ১৪ জুলাই, ২০২০, ২:৫১ পিএম says : 0
    এতে দুই দেশেরই লাভ, ইরান এই মূহূর্তে একটা শেল্টার পেলো আর চীন তার বাণিজ্য প্রসার ঘটালো এবং তেল পেলো
    Total Reply(0) Reply
  • টয়া ১৪ জুলাই, ২০২০, ২:৫৪ পিএম says : 0
    ইরান ও চীন, দুই দেশের জন্যই রইলো অনেক অনেক শুভ কামনা।
    Total Reply(0) Reply
  • কামরুজ্জামান ১৪ জুলাই, ২০২০, ২:৫৬ পিএম says : 0
    আমাদেরও উচিত চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করা। তাহলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে যেমন লাভবান হবো, তেমনি পার্শ্ববর্তী দেশের আগ্রাসন থেকে কিছুটা হলেও পরিত্রাণ পাবো।
    Total Reply(0) Reply
  • শফিকুল ইসলাম ১৪ জুলাই, ২০২০, ২:৫৯ পিএম says : 0
    এবার আর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞায় কোন কাজ হবে বলে মনে হচ্ছে না।
    Total Reply(0) Reply
  • মিনার মুর্শেদ ১৪ জুলাই, ২০২০, ৩:০৪ পিএম says : 0
    ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত অর্থনৈতিক অবরোধকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দিয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Kabir Ahmed ১৪ জুলাই, ২০২০, ৩:০৯ পিএম says : 0
    Thanks to Iran And china, Go Ahead...........................
    Total Reply(0) Reply
  • Sanjay ১৪ জুলাই, ২০২০, ৬:১৩ পিএম says : 1
    Aakhono chinar chamcha giri korar ato lok?
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফুল ইসলাম ১৪ জুলাই, ২০২০, ৮:৩২ পিএম says : 0
    মুসলিম বিশ্বকে খুব সতর্কতার সাথে এগিয়ে যেতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • নাজিম উদ্দিন ১৪ জুলাই, ২০২০, ৮:৩৪ পিএম says : 0
    ইরান একটি সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • রাসেল ১৪ জুলাই, ২০২০, ৮:৩৬ পিএম says : 0
    এই বিনিয়োগ এবং সুরক্ষা চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বয়ে আনতে সহায়তা করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Shekh Shadi ১৫ জুলাই, ২০২০, ৭:৩২ এএম says : 0
    Thank Iran and China
    Total Reply(0) Reply
  • Rohit Maity ১৫ জুলাই, ২০২০, ৫:৩৯ পিএম says : 0
    Joto jon comment koreche sob molla.sorry ...
    Total Reply(0) Reply
  • Uttam Samaddar ১৬ জুলাই, ২০২০, ৮:১১ এএম says : 0
    কমিউনিস্টদের যারা এখনও সঠিক ভাবে চিনতে পারেনি তাঁদের অবস্থান এখনও মায়ের গর্ভে। এখন পর্যন্ত যে দেশগুলো এই বিস্তারবাদি দেশ চীনের ফাঁদে পা গলিয়েছে তাঁদের বর্তমান অবস্থাই প্রমাণ করে।পাকিস্তান, সিংহল,নেপাল ও আফ্রিকার কিছু দেশ। একেবারে ছিবড়ে করে দেবে অদূর ভবিষ্যতে। বিশেষ সূত্রের খবর যে বাংলাদেশও নাকি পা গলাতে চলেছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ