মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দুমাস আগে যা ধারণা করা হচ্ছিল, বিশ্ব অর্থনীতিতে তার চেয়েও ব্যাপক ও গভীর ক্ষত তৈরি করেছে করোনাভাইরাস মহামারী। এই মন্দার মধ্যে বৈশ্বিক উৎপাদন যতটা সঙ্কুচিত হবে বলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল গত এপ্রিলে প‚র্বাভাস দিয়েছিল, এখন তা আরও বেশি সঙ্কুচিত হবে বলে তারা মনে করছে। বুধবার প্রকাশিত আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক আউটলুকের জুন আপডেট বলছে, ২০২১ সালে উৎপাদন বাড়লেও তার গতি হবে ধীর। এখন তারা আগামী বছরের জন্য ৫.৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির প‚র্বাভাস দিচ্ছে, যদিও এপ্রিলে তাদের প্রাক্কলন ছিল ৫.৮ শতাংশ। মহামারীর ধাক্কা ২০২১ সালে নতুন করে দেখা দিলে প্রবৃদ্ধি আরও কমবে। আর এই হিসাবও যদি ঠিক থাকে, তাতে দুই বছরে বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১২ ট্রিলিয়ন ডলার। আইএমএফ-এর প‚র্বাভাস সত্যি হলে ১৯৩০-এর দশকের মহামন্দার পর এ বছর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব। ২০১৯ সালে বিশ্বের গড় উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২.৯ শতাংশ। জানুয়ারিতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ যখন কেবল চীনে ব্যাপক মাত্রা পেতে শুরু করেছে, তখন আইএমএফ ২০২০ সালে বিশ্বের জন্য ৩.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প‚র্বাভাস দিয়েছিল। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্য দিয়ে চীন এপ্রিলের শুরুতে মহামারী পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলেও ততদিনে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বে। দেশে দেশে লকডাউনে উৎপাদন ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বিশ্ব যে বড় ধরনের মন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে, আইএমএফ এপ্রিলেই সে প‚র্বাভাস দিয়েছিল। তখন তারা বলেছিল, ২০২০ সালে বিশ্বের গড় উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। আরও দুইমাস পেরিয়ে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এখন বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল করার চেষ্টায় আছে। কিন্তু অনেক উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশে ভাইরাস সংক্রমণের গ্রাফ এখনও ঊর্ধ্বমুখী। গত দুই মাসের লকডাউনের মধ্যে দেশে দেশে উৎপাদন কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার হিসাব করে আইএমএফ এখন বলছে, ২০২০ সালে বিশ্বের গড় উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় হ্রাস পাবে ৪.৯ শতাংশ। ১৯৩০-এর দশকের মহামন্দার সময় বিশ্বের উৎপাদন ১০ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছিল। সেই হিসাবে আসন্ন পরিস্থিতিকে ত্রিশের মহামন্দার পর সবচেয়ে বাজে সঙ্কট হিসেবে দেখছে আইএমএফ। আইএমএফ বলছে, বিশ্বের অনেক দেশ এখন একসঙ্গে তাদের অর্থনীতি সচল করার চেষ্টায় আছে। কিন্তু বিধিনিষেধ এবং সামাজিক দ‚রত্বের নিয়মের কারণে বিনিয়োগ আর ভোগের পরিমাণে স্বাভাবিকভাবেই বড় ধাক্কা লেগেছে। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক আউটলুকের উপাত্ত অনুযায়ী, উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোই এ মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। জুনের প‚র্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ কমে যাবে। ইউরো জোনের ক্ষেত্রে তা হবে ১০.২ শতাংশ। দুই ক্ষেত্রেই এই হার আইএমএফের এপ্রিলের প‚র্বাভাসের চেয়ে ২ শাতংশ পয়েন্ট করে বেশি। আইএমএফ ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।