মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের বিরুদ্ধে সীমান্তে সংঘর্ষে একতরফাভাবে উসকানি দেয়ার অভিযোগ এনেছে বেইজিং। চীন বলছে, সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে দুই দেশের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল, তা লঙ্ঘন করেছে ভারত। ১৫ জুন রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে চীনা ভূখন্ডে ঢুকে পড়েছে। গতকাল দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ কথা জানানো হয়।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ভারতীয় ভূখন্ডে প্রবেশ নিয়ে ১৫ জুন লাদাখে চীনা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে ভারতীয় জওয়ানদের। এতে ২০ ভারতীয় সেনাবাহিনী নিহহ হন। তবে চীনের পক্ষ থেকে হতাহতের বিস্তারিত জানানো হয়নি।
চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সিনিয়র কর্নেল উ কিয়ান এক বিবৃতিতে বলেন, গালওয়ানে চীনের সার্বভৌম অধিকার রয়েছে। বহু বছর ধরে সেখানে নজরদারি চালিয়ে আসছে চীনা বাহিনী। এ বছর এপ্রিল থেকে সেখানে একতরফাভাবে নির্মাণকাজ শুরু করে ভারতীয় সেনা, একাধিকবার তার প্রতিবাদ করে চীন।
বেইজিংয়ের দাবি, ৬ মে সকালে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে চীনা ভূখন্ডে কাঠামো নির্মাণ শুরু করে ভারত। চীনা বাহিনীকে নজরদারি চালাতে বাধা দেয় তারা। তাতে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ৬ জুন দু’দেশের সামরিক স্তরে বৈঠক হয়। তাতে গালওয়ান উপত্যকায় নজরদারি না চালানো এবং কাঠামো নির্মাণ না করায় সম্মত হয় ভারত। সেখান থেকে দু’পক্ষই সেনা সরাতে রাজি হয়। কিন্তু ১৫ জুন সন্ধ্যায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় জওয়ানরা চীনের এলাকায় ঢুকে পড়লে চীনা বাহিনী তাদের সঙ্গে সমঝোতায় আসার চেষ্টা করে বলে দাবি করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে চার দশকের মধ্যে চীনের সাথে সবচেয়ে খারাপ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মুখোমুখি হওয়ার পরে ভারত রাশিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ ও যুদ্ধবিমানের বিক্রয় দ্রুত করার জন্য চাপ দিচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভিক্টরি ডে উৎসবে যোগ দিতে বর্তমানে তিনদিনের রাশিয়া সফরে রয়েছেন রাজনাথ। সূত্রের খবর, সেই ফাঁকে সেখানে এস-৪০০সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়ণ ও সামরাস্ত্র হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা করতে পারেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও তার টিম।
মস্কোয় গতকাল রাশিয়ার ৭৫তম বিজয় দিবসের প্যারেডে অংশ নেয় চীন ও ভারতের সেনাবাহিনী। প্যারেড দেখতে হাজির ছিলেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ইউ ফেঙ্গে ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। জানা গেছে, প্যারেড দেখতে দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকলেও তাদের মধ্যে কোনও কথা হয়নি।
ভারত ও রাশিয়া ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে উল্লখযোগ্য এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে ভারতে কালাশনিকভ রাইফেল ও কামোভ হেলিকপ্টার তৈরির বিষয়গুলি।
সূত্রের খবর, এস-৪০০ অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট (বিমান-বিধ্বংসী) এই ক্ষেপণাস্ত্র যাতে যত দ্রুত সম্ভব ভারতে আসে, তার জন্য জোর তদ্বির করবেন রাজনাথ। ২০১৮ সালে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি হয় ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ওই মিসাইল সিস্টেম ভারতে আসার কথা। কিন্তু, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারত এখন চাইছে, সময়ের আগেই ওই ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেতে।
এর পাশাপাশি, আরও বেশি সংখ্যক রুশ সুখোই-৩০ এমকেআই ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়েও কথা হবে। গত বছর, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে একটি পৃথক সম্মত কার্যবিবরণী স্বাক্ষরিত হয়েছিল। যার মাধ্যমে রাশিয়া থেকে ২০০টি কামোভ কেএ-২২৬ হেলিকপ্টার কেনার কথা ভারতের। এছাড়া, রাশিয়া থেকে আর-২৭ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল কেনার জন্য ১৫০০ কোটি টাকার চুক্তি করে ভারতীয় বিমান বাহিনী। ওই মিসাইলগুলো সুখোই-৩০এমকেআই যুদ্ধবিমানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক হচ্ছে না
রাশিয়ায় চীন ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মধ্যকার সম্ভাব্য বৈঠকটি আর হচ্ছে না। স¤প্রতি চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে ওই বৈঠকের খবর দিয়েছিল। তবে সূত্রের বরাত দিয়ে গতকাল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, দুই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বৈঠকের খবর নাকচ করে দিয়েছে দিল্লি।
চীনা পণ্য ছাড় হচ্ছে না : বিপাকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা
ইন্দো-চীন সীমান্তে উত্তেজনা। ভারতে চীনা পণ্য বয়কটের ডাক দেয়া হয়েছে। এর মধ্যেই চীন থেকে ভারতে আমদানিকৃত পণ্যে কাস্টমসের ছাড়পত্র মিলছে না বলে অভিযোগ। চেন্নাই ও মুম্বাই বন্দরে ঘোর বিপাকে আমদানিকারীরা। তবে, কেন এই পরিস্থিতি তার কোনও কারণ কাস্টমস বা অপ্রত্যক্ষ কর বোর্ডের তরফে ব্যাখ্যা করা হয়নি।
চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ছাড়পত্র পেতে যে দেরি হবে তার ইঙ্গিত স্পষ্ট। তবে এর নির্দিষ্ট কারণ বলা হয়নি এখনও। চেন্নাইয়ের এক আমদানিকারীর কথায়, ‘কাস্টমস অফিসারদের নির্দেশ, চীনা পণ্যে কন্টেনার দেয়া যাবে না। এমনকি তা ক্লিয়ারেন্সের জন্য আউট অফ চার্জ অর্ডার পেলেও করা যাবে না।’ উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্যে ক্লিয়ারেন্স পেতে অনেকগুলিস্তর পেরোতে হয়। নজরদারির সময় কোনও অসামঞ্জস্যতা না মিললে তবেই সেই পণ্যের উপর আউট অফ চার্জ অর্ডার পাওয়া যায়। সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, এনডিটিভি, রয়টার্স ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।