মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চীনের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১১০ জন ভারতীয় সেনা গুরুতর আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে দিল্লি। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে ভারতীয় সেনাসূত্র জানিয়েছে, নিহত সেনার সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। গভীর রাতে জরুরি বৈঠক করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার গভীর রাতে লাদাখের সুউচ্চ পর্বতমালায় গালওয়ান নদীর পূর্ব পার ধরে পেট্রোলিংয়ে বেরিয়েছিল ভারতীয় সেনার বিহার রেজিমেন্টের একটি পেট্রোলপার্টি। তাদের সঙ্গেই চীনা সেনাদের তীব্র সংঘাত হয়। গত প্রায় এক মাস ধরে এই অঞ্চলটি নিয়ে বিতর্ক চলছে। ভারতের অভিযোগ, লাইন অফ কন্ট্রোল উপেক্ষা করে ভারতে ঢুকে পড়েছে চীনা সেনারা। বেইজিং-এর পাল্টা অভিযোগও একই রকম। এ নিয়ে সীমান্তে ভারত এবং চীনের সেনারা একাধিকবার হাতাহাতিতে জড়িয়েছে। দুই পক্ষই সেনা এবং অস্ত্র মজুত করেছিল সীমান্তের খুব কাছে। তারই জেরে গত সপ্তাহে দুই পক্ষের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও হয়। তবে সোমবার রাতের ঘটনা সেই পুরো পরিস্থিতিই ঘোলাটে করে দিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক আহত জওয়ান ডয়চে ভেলেকে বলেন, মাঝ রাতে পেট্রোলিংয়ের সময় বিহার রেজিমেন্ট দেখতে পায় গালওয়ান নদীর পশ্চিম প্রান্তে লাইন অফ কন্ট্রোল পার করে পেট্রোল পয়েন্ট ১৪ তে টেন্ট তৈরি করেছে চীনের পিপলস আর্মি। দিল্লির দাবি অনুযায়ী ওই এলাকাটি ভারতের। ফলে পেট্রোলপার্টি দ্রুত সেখানে পৌঁছায় এবং তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে সামান্য হাতাহাতি শুরু হতেই চীনের সেনারা রডে কাঁটাতার জড়িয়ে আক্রমণ করে। পাল্টা আঘাত করে ভারতীয় সেনাও। ওই উচ্চতায় এমন রাতে তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের অনেক নীচে। সঙ্গে অক্সিজেনের সমস্যা। তার মধ্যে দুই পক্ষের সংঘর্ষ চরমে পৌঁছায়। আহত সেনা জওয়ানদের কেউ কেউ নদীতে পড়ে যায়। তাদের দাবি, মঙ্গলবার সকালে বহু সেনার মৃতদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় আট ঘণ্টা ধরে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই চলতে থাকে। দুই পক্ষের সেনাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ভারতের অভিযোগ, চীন বেশ কিছু ভারতীয় সেনাকে আটক করে নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের উপর অত্যাচার চালানো হয়। পরে মঙ্গলবার সকালে দুই পক্ষ বৈঠকে বসলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম সংঘাতের কথা স্বীকার করে বিবৃতি প্রকাশ করেছিল ভারতীয় সেনা। গভীর রাতে তারা নতুন বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে একজন অফিসার। আহত আরও অনেক। ডয়চে ভেলেকে ভারতীয় সেনা সূত্র জানিয়েছে, বুধবার সকালে নিহতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
চীনা সেনাবাহিনীর তরফ থেকে অবশ্য এখনও কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। সরকারিভাবে ক্ষয়ক্ষতির কথাও জানানো হয়নি। তবে চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সে দেশেও বেশ কিছু সেনার মৃত্যু হয়েছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের দাবি ভারতের সেনা চীনের রেডিও ইন্টারসেপ্ট করে জানতে পেরেছে অন্তত ৪৩ জন চীনের সেনা নিহত হয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, লাদাখে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। এনিয়ে দুপুরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ তিন বাহিনীর প্রধান এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়। এ দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
এই সংঘর্ষের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তাব বলেন, সীমান্তের নিয়ম অনুযায়ী এলএসির ভেতরেই রয়েছে ভারত। আমাদের আশা চীনও সেটাই করবে। ভারত চায় এলাকায় শান্তি ও বজায় রাখতে। যে সমস্যা রয়েছে তা আলোচনার মধ্যমে মিটিয়ে ফেলা হবে। পাশাপাশি, ভারতের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপোস করা হবে না।
প্রসঙ্গত, আগেই ঠিক হয়েছিল, দুদেশ তার বর্তমান অবস্থান থেকে দু কিলোমিটার পিছিয়ে আসবে। সঙ্গে সমস্যা নিরসনে আলোচনা চলবে।
১৯৭৫ সালের পর এই প্রথম চীন ও ভারতের মধ্যে প্রাণহানি হওয়ার মতো এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো। ১৯৬২ সালে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধ হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।