Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুয়েতে ২৫ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি কর্মী বিপাকে

রাতে দেশে ফিরেছে আরো ২৮৯ জন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২০, ৩:০২ পিএম

তেল সমৃদ্ধ দেশ কুয়েতের অর্থনীতি ভয়াবত ক্ষতির মুখে পড়ায় অভিবাসী কর্মী কমিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু করেছে দেশটি। দেশটিতে বসবাসকারী ১ লাখ ২০ হাজার অবৈধ অভিবাসী কর্মীর ইকামা আর নবায়ন করা হবে না। এতে দেশটিতে প্রায় ২৫ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি কর্মী বিপাকে পড়েছেন। দেশটি সাধারণ ক্ষমার আওতায় নিবন্ধিত প্রায় সাড়ে চার হাজার অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠানো অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইট যোগে দেশটি থেকে ২৮৯ জন অবৈধ প্রবাসী কর্মী খালি হাতে দেশে ফিরেছে। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর কল্যাণ ডেস্ক এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দেশটির চারটি অস্থায়ী ক্যাম্পে অপেক্ষমান অবৈধ কর্মীদেরও পর্যায়ক্রমে ফেরত পাঠানো হবে।
বিএমইটির সূত্র মতে, ১৯৭৬ সাল থেকে গত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দেশটিতে ৬ লাখ ৩০ হাজার ৪৭৩ জন কর্মী দেশটিতে চাকরি লাভ করেছে। গত জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটি থেকে প্রবাসী কর্মীরা ২৫০ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে।
কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী খালিদ আল সাবাহ অতিসম্পতি এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, দেশটিতে অভিবাসীর সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে। কুয়েতে মোট জনসংখ্যার সর্বোচ্চ ৩০ ভাগ পর্যন্ত অভিবাসী রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং তেলের দাম কমে যাওয়ায় দেশটির অর্থনীতি ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে।
দেশটিতে অভিবাসী কমিয়ে আনার এমন ঘোষণা অভিবাসী কর্মীরা চরম হতাশায় ভুগছেন। যারা নিজের দেশ ছেড়ে চড়া অভিবাসন ব্যয়ে কাজের আশায় কুয়েতে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
বর্তমানে দেশটিতে ৪৮ লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে অভিবাসীই রয়েছে প্রায় ৩৪ লাখ। প্রধানমন্ত্রী খালিদ আল সাবাহ বলেছেন, এই ভারসাম্যহীন অবস্থার পরিবর্তন আনা দরকার।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পদ্ধতিতে নিবন্ধিত ১ লাখ ২০ হাজার ইকামাবিহীন অবৈধ প্রবাসীদের মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকাসহ বিশ্বের মোট ১৫টি দেশের নাগরিক রয়েছেন। এসব প্রবাসীরা ভিসা বা ইকামা নবায়ন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
এদিকে, সম্প্রতি কুয়েত সরকারের সাধারণ ক্ষমার সুযোগ না নেওয়ায় দেশটির আবাসন আইন লঙ্ঘনকারী বা ইকামাবিহীন অবৈধ প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশির ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দেশের বাড়িতে তাদের পরিবার পরিজনরাও চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।
দেশটিতে ২৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মী বিপাকে পড়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জনশক্তি রফতানিকারক দিদারুল হক আজ বুধবার ইনকিলাবকে বলেন, চলমান মহামারীতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রায় ৭ লাখ বাংলাদেশি কর্মী চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে। তিনি বলেন, মরণঘাতী করোনা প্রাদুর্ভাবের মাঝেও প্রবাসী কর্মীরা গার্মেন্টস খাতের চেয়ে অনেক বেশি রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে। এসব রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিদেশে চাকরি সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে সরকারকে ব্যাপক কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনা মহামারীর কারণে কুয়েত থেকে ছুটিতে দেশে এসে অনেক প্রবাসী কর্মী আটকা পড়েছেন। এছাড়া প্রায় ১৭শ’ কুয়েতের নতুন ভিসার কর্মীরাও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। এতে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি চলমান মহামারীর মাঝেও জনশক্তি রফতানির খাতকে ধরে রাখতে এখন থেকেই যথাযথ উদ্যোগ নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। দিদারুল হক করোনা মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রিক্রটিং এজেন্সি ও ট্রাভেলস এজেন্সিগুলোর প্রতি সরকারের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ার জোর দাবি জানান।

প্রবাস জীবন বিভাগে সংবাদ পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]



 

Show all comments
  • didarul huq ১০ জুন, ২০২০, ৩:২৭ পিএম says : 0
    proper news
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুয়েত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ