আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মার্কিন যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া বিক্ষোভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে উল্লেখ করে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন
ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল রোববার বিক্ষোভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে উল্লেখ করে এক টুইট বার্তায় সেনা প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দেন তিনি। গত ২৫ মে দেশটির মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপলিস শহরে ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েড হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রথম দিকের সহিংস বিক্ষোভ বর্তমানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে রূপ নিয়েছে। এমন সময় ওয়াশিংটন ডিসি থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন তিনি। খবর নিউইয়র্ক টাইম, সিএনএনের।
গতকাল রোববার ট্রাম্প টুইটারে লেখেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসি থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। সবকিছু এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেনারা ব্যারাকে ফিরে যাচ্ছে। প্রয়োজনে তারা দ্রুত ফিরে আসবে। তবে গতরাতে প্রতিবাদকারীর সংখ্যা অনেক কম ছিল।’
গত ২৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপলিস শহরে ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েডকে ধাওয়া করার সময় এক পর্যায়ে তাকে মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে তার গলা চেপে ধরে পুলিশের কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিন ও তার তিন সঙ্গী।এতে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান ফ্লয়েড। এক প্রত্যক্ষদর্শীর তোলা ১০ মিনিটের ভিডিও ফুটেজে তাকে শ্বাস নিতে না পেরে কাতরাতে দেখা যায়। এ সময় তিনি বারবার ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে বলছিলেন, ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।’
এই ভিডিওচিত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে দেখা দেয় বিক্ষোভ। হাজার হাজার মানুষ সড়কে নেমে আসে। শুরু হয় ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ। বিক্ষোভকারীদের দমাতে দেশটির ২২টি অঙ্গরাজ্যের ৪০ শহরে কারফিউ জারি করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকশ’ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট
ডোনাল্ড ট্রাম্প।
প্রথম দিকের সহিংস বিক্ষোভ স্তিমিত হয়ে গেলেও বর্তমানে শান্তিপূর্ণভাবে দেশটির সড়কে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে জনতা। শনিবার বিক্ষোভের ১২তম দিনেও ১০ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী ওয়াশিংটনের রাস্তায় নামেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত চার পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন তারা।
পুলিশ বিভাগকে ঢেলে সাজানোর অঙ্গীকার মিনিয়াপোলিস সিটির
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশে^র অন্যান্য স্থানে বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠার পর মিনিয়াপোলিস সিটি কাউন্সিল স্থানীয় পুলিশ বিভাগকে ভেঙে দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। কাউন্সিলের ১৩ জন কাউন্সিলের মধ্যে ৯ জনই নতুন মডেলের জন নিরাপত্তা ব্যবস্থা সৃষ্টির পক্ষে মত দিয়েছেন। বলেছেন, যে শহরে বর্ণবাদের অভিযোগ রয়েছে আইন প্রয়োগকারীদের বিরুদ্ধে সেখানে পুলিশে সংস্কার আনা প্রয়োজন। প্রথমদিকে এমন উদ্যোগের বিরোধিতা করেছিলেন মেয়র জ্যাকব ফ্রে। ফলে বিক্ষোভ থেকে তার প্রতি দুয়োধ্বনি দেয়া হয়। অন্যদিকে এমন উদ্যোগের পক্ষের আন্দোলনকারীরা একে টার্নিং পয়েন্ট বলে আখ্যায়িত করেছেন।