Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনে ট্রাম্পকে নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্বে রিপাবলিকানরা

নিউ ইয়র্ক টাইম্স | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২০, ৯:০৮ পিএম

আমেরিকার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং সিনেটর মিট রোমনি ট্রাম্পকে পুনর্র্নিবাচিত করার পক্ষে নন এবং অন্য রিপাবলিকান কর্মকর্তারা বিরোধী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে ভোট দেয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড জে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকানদের অবস্থানটি সুস্পষ্ট ছিল। কারণ তার জয়ের কোনো সম্ভাবনা ছিল না এবং বর্তমান সময়ের মতো তখন দলটির রক্ষণশীল শাসন পরিকল্পনা বিপন্ন হওয়ার মতো অবস্থাও তৈরি হয়নি। কিন্তু ২০২০ সালের নির্বাচনী আবহটি আলাদা। নিজ দল থেকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের বিরোধিতা করা মানে দলের নীতিগত অগ্রাধিকারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়া।
এক্ষেত্রে, রক্ষণশীল বিচারক নিয়োগ, ব্যবসাবান্ধব নিয়মনীতি বজায় রাখা এবং কর কাটার পাশাপাশি ট্রাম্পের ফুঁসে ওঠা আগ্নেয়গিরির মতো ক্রোধের মতো বিষয়গুলি গভীর সমস্যায় ফেলে দিয়েছে আমেরিকার রক্ষণশীল দল রিপালিকানদের। তাদের আশঙ্কার চেয়ে দ্রæত হারে প্রখ্যাত রিপাবলিকানদের ক্রমবর্ধমান অংশ বিতর্কে লিপ্ত হয়েছেন যে, পুনর্র্নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন দিতে তাদের কতো দূর পর্যন্ত ছাড় দিতে হবে বা তারা শেষ পর্যন্ত ডেমোক্র্যাট মনোনীত প্রার্থী জোসেফ আর বাইডেন জুনিয়রকে ভোট দিয়ে বসবেন কি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাক্ষাতকার দেয়া কিছু রিপাবলিকান কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনা মহামারী মোকাবেলায় ব্যর্থতার পাশাপাশি পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের বিষয়ে ট্রাম্পের হিংসাত্মক প্রতিক্রিয়ার কারণে তারা নতুন করে ভাবার তাগিদ অনুভব করছেন। অবসরপ্রাপ্ত সামরিক নেতা, যারা তাদের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতামত আড়াল করতেন, তারাও প্রেসিডেন্টের নেতৃত্ব সম্পর্কে প্রকাশ্যে ক্রমবর্ধমান অস্বস্তি প্রকাশ করছেন। তবে তারা তার প্রতিপক্ষ বাইডেনকে সমর্থন করবেন কিনা তা এখোনো অনিশ্চিত।
এদিকে, বাইডেনও পুরোদমে নিজ দলকে সুসংহত করে দলের সীমানা পেরিয়ে সমর্থন জিততে আগ্রহী এবং তার পরবর্তী প্রচারণায় ‘বাইডেনের পক্ষে রিপাবলিকান’ জোটের সুবিধা নেয়ার পরিকল্পনায় নিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের আচরণ কিছু নেতাকে নিশ্চিত করেছে যে, তাদের আর চুপ করে থাকা চলবে না। সাম্প্রতিক দিনগুলিতে রিপাবলিকান এবং সামরিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অংশ থেকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিরোধিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবাদকারীদের ওপর শারীরিক বল প্রয়োগ করে আধিপত্য বজায় রাখার জন্য ট্রাম্পের লাগাতার নির্দেশ এবং তিনি যেনো ফটো তোলার জন্য বাইরে যেতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে হোয়াইট হাউসের বাইরের রাস্তাগুলো জোরপূর্বক খালি করার জন্য তার প্রশাসনের আদেশের তীব্র বিরোধিতা প্রকাশ করেছেন তারা।
ওসামা বিন লাদেন হত্যা অভিযান পরিচালনাকারী অবসরপ্রাপ্ত নেভি অ্যাডমিরাল উইলিয়াম এইচ. ম্যাকর‌্যাভেন ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘রিপাবলিকান, ডেমোক্র্যাট বা স্বতন্ত্র, এই বিপর্যয়ে এদেশে নতুন নেতৃত্বের সময় এসেছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেখিয়েছেন যে, একজন ভাল কমান্ডার ইন চিফ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় গুণাবলী তার নেই’।
তবু ট্রাম্প প্রশাসনের প্রাক্তন কর্মকর্তা এবং সুপরিচিত রিপাবলিকানরা বলে মনে করছেন যে, নিজ দলের মানদন্ড বহনকারী প্রতিনিধিকে প্রত্যাখান করাটা তীব্র ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হবে। তারা আলাদাভাবে, বিশেষত এই গভীর মেরুকরণের সময় বেশি ভোট টানতে পারবেন না। তবে, ট্রাম্প-সংশয়ী রিপাবলিকানদের সম্মিলিত বিরোধিতা বা চরম নিস্পৃহতা দলের আনুগত্যকে পাশ কাটানোর জন্য তাদেরকে অনুমতি সংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়াতে বর্তমান রিপাবলিকান আইন প্রণেতা এবং গভর্নরদের অনেককেই নিজেদের বিবেক, আদর্শ, নির্বাচনী ঝুঁকি এবং সংগঠকদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা কী করবেন এবং কী বলবেন, এবিষয়ে নিজের সাথে অন্তর্দ্বন্দ্বে রয়েছেন তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ