মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
হংকংয়ের বিষয়ে চীনের লাগাতার হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে কড়া জবাব দিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। হংকংয়ের ওপর চীনের বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা বিল কার্যকর হলে ৩ লাখেরও বেশি হংকংবাসীর জন্য ব্রিটেনের দ্বার উন্মুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
গত বুধবার সংবাদমাধ্যম লন্ডন টাইমস ও সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে প্রকাশিত নিবন্ধে চীনকে সতর্ক করে দিয়ে জনসন বলেন, ‘চীন যদি জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করে, ব্রিটিশ সরকার আমাদের ইমিগ্রেশন আইন পরিবর্তন করবে।’ তিনি বলেন, ‘চীন যদি জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর করে, তবে কয়েক লাখ হংকংবাসীর জন্য ব্রিটেনের ভিসা ও এমনকি নাগরিকত্ব প্রদানেরো ব্যবস্থা করা হবে।’
গত ২৮ মে, চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার আধা স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল হংকংয়ের চলমান বিক্ষোভ দমনের জন্য চীনের পার্লামেন্টে বিতর্কিত হংকং জাতীয় নিরাপত্তা বিল অনুমোদন করে। চীনের এপদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে হংকংয়ের নেতা ক্যারি লাম প্রস্তাবিত আইন সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য বুধবার সকালে বেইজিং পৌঁছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এপ্রেক্ষিতে বলেছেন, ‘হংকংকে বেইজিং যে প্রস্তাব দিচ্ছে সেটি এর স্বাধীনতাকে খর্ব করবে এবং নাটকীয়ভাবে এর স্বায়ত্ত¡শাসনের বিলোপ ঘটাবে।’
এ আইনের অধীনে হংকংয়ের আইন প্রণেতা ছাড়াই সেসব অপরাধে অভিযুক্তদের সরাসরি সাজা দেওয়ার সুযোগ পাবে চীনা কর্তৃপক্ষ। যদিও বেইজিং দাবি করে যে, হংকংয়ের বিচ্ছিন্নতা, সন্ত্রাসবাদ ও বৈদেশিক হস্তক্ষেপ মোকাবিলায় আইনটি ব্যবহার করা হবে, তবে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থিদের দাবি, এর মাধ্যমে তাদের বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করছে চীন।
এর মধ্যেই গত সোমবার বিগত ৩০ বছরের মধ্যে প্রথমবার তিয়ানআনমেন স্কয়ারে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের বর্ষপূর্তি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে হংকং পুলিশ। নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলনকে দমাতে চীনের প্রতি অনুগত হংকং প্রশাসন এটি করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।
চীনের কার্যকলাপ সম্পর্কে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান যে, আন্তর্জাতিক ব্যবসা কেন্দ্র হংকংয়ের ওপর বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লন্ডন উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে লন্ডন হংকংবাসীদের থেকে দূরে সরে যাবে না।’ বরিস আরো বলেন, নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ হবে ‘যৌথ ঘোষণায় চীনের দেওয়া প্রতিশ্রæতির সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক, যা জাতিসংঘে নিবন্ধিত আইনি বাধ্যকতার চুক্তি ছিল।’
সাবেক উপনিবেশকে বেইজিংয়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার শর্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনের শাসকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপ‚র্ণ ধারণা ছিল এক দেশ দুই ব্যবস্থা। এটি নগরীর মৌলিক আইন হিসেবে ব্রিটেন-চীন স্বাক্ষরিত যৌথ ঘোষণায় সন্নিবেশিত করা হয়।’
এদিকে, হংকং ইস্যুতে ব্রিটেনের হস্তক্ষেপের ফল ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, চীনের পার্লামেন্টে পাশ হওয়া হংকং জাতীয় নিরাপত্তা বিল নিয়ে ব্রিটিশ নেতাদের মন্তব্যের জবাবে এই হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘আমরা ব্রিটেনকে পরামর্শ দেব আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে সরে দাঁড়াতে। ঠান্ডা যুদ্ধের মানসিকতা ও ঔপনিবেশিক মনোভাব থেকে সরে দাঁড়ান। সত্যকে স্বীকার করে নিন যে, হংকং এখন (চীনে) ফিরে এসেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘লন্ডনের উচিত অবিলম্বে হংকং ও চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ করা। তা না হলে উল্টোটা ঘটতে পারে।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে হংকং হস্তান্তর করার বিষয়ে ব্রিটেন ও চীনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তিতে বলা হয়েছিল, হংকং একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসাবে প্রাধান্য পাবে। নিজেদের স্বায়ত্তশাসন আগের মতোই অক্ষুণœ থাকবে এবং সর্বোপরি ভবিষ্যতে এ নিয়ে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করা যাবে না।
কিন্তু চীন শর্ত লঙ্ঘন করে নিজের আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে হস্তক্ষেপ করে চলেছে। সেই সঙ্গে হংকংয়ের জনগণের অধিকার খর্ব করে চলেছে। সূত্র : দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।