Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অণুনিবন্ধ

| প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০২০, ১২:০৩ এএম

প্রত্যেকে আমরা পরের তরে

মো. আবদুল লতিফ নেজামী
[গত ১১ মে সন্ধ্যায় লেখক ইন্তেকাল করেছেন, মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করে অপ্রকাশিত লেখাটি প্রকাশ করা হলো]
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘তোমরা যা ভালবাস, প্রিয় ও পছন্দ কর, তা হতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পূণ্য লাভ করতে পারবে না। তোমরা যা কিছু ব্যয় কর আল্লাহ সে সম্পর্কে বিশেষভাবে অবহিত’ (সুরা ইমরান: ৯২)। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘সমস্ত সৃষ্টিই আল্লাহর পরিজনস্বরূপ। আর যে আল্লাহর পরিজনের প্রতি অনুগ্রহ করে সে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়’ (বায়হাকী শুয়াবুল ঈমান)। মহানবী (সা.) আরো বলেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি আমার উম্মতের কাউকে সন্তুষ্ট করার জন্যে তার একটি প্রয়োজন পূরণ করে দেয়; তাহলে সে যেন আমাকে সন্তুষ্ট করলো। আর যে আমাকে সন্তুষ্ট করলো, সে যেন আল্লাহকে সন্তুষ্ট করলো। (প্রতিদানে) আল্লাহ তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন’ (বায়হাকী শুয়াবুল ঈমান)।
শতাব্দির ভয়াবহ করোনাভাইরাস যেমন মানুষের জন্যে এক পরীক্ষা, তেমনি এই ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি দায়িত্বের ক্ষেত্রে বিত্তবানদের জন্যেও এক মহাপরীক্ষা হিসেবে দেখা দিয়েছে। শুধু করোনাভাইরাস নয়, বরং রোগবালাই বা যেকোন দুর্বিপাকে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের পাশে দাঁড়ানো সামর্থ্যবান সকলেরই নৈতিক কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়।
রিলিফ কর্মসূচির কাজ ইসলামী অনুশাসনের একটি বিশেষ অনুষঙ্গ, ঈমানের অঙ্গ। কেননা অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসা ইবাদাত-বন্দেগীর অন্তর্ভুক্ত। মুসলমানের জীবন মানুষের জন্যে নিবেদিত। ইসলামের সকল ব্যবস্থা মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্যে। একজন মুসলমান নিজেকে পারস্পরিক দয়া, সহানুভূতি এবং সম্প্রীতির মধ্যে দেখতে পায়। মুসলমানের দৃষ্টিভঙ্গি শুভ ও কল্যাণ দ্বারা পরিপূর্ণ। ইসলামে প্রতিবেশী, দুঃখী-দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন আচরণের খুব গুরুত্ব রয়েছে। আশপাশের অভাবগ্রস্ত লোকদের সাথে আচরণের মাধ্যমেই একটি লোককে চেনা যায়। অপরের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণের মাধ্যমেই আল্লাহতাআলার নৈকট্য লাভ করা যায়। সকল প্রকার মানবিক আচরণকে ঈমানের সাথে সংশ্লিষ্ট করে দেখা হয়েছে। তাই মানবিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত মানুষই মু‘মিন হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে।
একজন মুসলমানের সকল কাজই ইবাদাতের সামিল। তাই রিলিফ কর্মসূচিও ইবাদাত। কেননা এতে নৈতিক উৎকর্ষতা সৃষ্টির সুযোগ সৃষ্টি হয়। অন্যের সাহায্য-সহায়তায় এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে মানুষের চেতনাকে শাণিত ও কর্তব্যবোধে উজ্জীবিত ও উদ্দিপ্ত করে। মানুষের প্রতি সহায়তার হাত সম্প্রসারিত করার চিন্তা-ভাবনার জগতে উন্নতি ঘটায়। মানুষের অন্তরে পারস্পরিক ভালবাসা, সাম্য ও মৈত্রীর অনুভূতি স্বতঃস্ফুর্তভাবেই জাগ্রত করে। মানুষের মনে গরিব-দুঃখীদের প্রতি কর্তব্যপরায়নতা, পারস্পরিক সৌহার্দ্যবোধ বৃদ্ধির মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত লাভের পথ প্রশস্ত হয়।
লেখক: ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অণুনিবন্ধ

১৭ মে, ২০২০
১৪ মে, ২০২০
১ মে, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন