পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের দখলকৃত অঞ্চল অ্যানেক্স বা নিজ ভূখন্ড হিসেবে দাবি করতে চলেছে ইসরাইল। তবে প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপের বিপক্ষে দেশটির বেশিরভাগ ইহুদী। বুধবার এক জরিপে এই চমকপ্রদ চিত্র উঠে এসেছে। ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব আরোপ করার বিরোধী একদল সাবেক সিনিয়র ইসরাইলি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সংগঠন থেকে ওই জরিপ পরিচালনা করা হয়। সাবেক সামরিক, গোয়েন্দা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ওই সংগঠনের নাম কমান্ডার্স ফর ইসরাইল’স সিকিউরিটি। এ খবর দিয়েছে ইসরাইলি পত্রিকা ইয়েদিওথ আহরোনোথ। খবরে বলা হয়, ১ হাজার ইহুদী ইসরাইলির ওপর ওই জরিপ পরিচালনা করা হয়। ফলাফলে দেখা যায়, মাত্র এক শতাংশ উত্তরদাতা সরকারের ওই সম্ভাব্য পদক্ষেপ সমর্থন করেন। ৪০ শতাংশ উত্তরদাতাই স্থায়ী দ্বি-রাষ্ট্র তত্ত্ব সমর্থন করছেন। ২২ শতাংশ উত্তরদাতা বলছেন, ফিলিস্তিনি ভূখন্ড থেকে স্বেচ্ছায় সরে যাওয়া উচিৎ। মাত্র ১৩ শতাংশ বর্তমান পরিস্থিতিতেই খুশি। খবরে বলা হয়, বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর অন্যতম বৃহৎ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল দখলকৃত পশ্চিমতীরের কৌশলগত অংশবিশেষ ইসরাইলি ভূখন্ডে পরিণত করা। কিন্তু জরিপে দেখা যায়, খোদ তার দল লিকুদ পার্টিরই মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সমর্থক ওই উদ্যোগ সমর্থন করেন। দলটির ২১ শতাংশ ভোটার বলছেন, তারা স্থায়ী দ্বি-রাষ্ট্র (আলাদা ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র) সমাধান সমর্থন করেন। ২৫ শতাংশ মনে করেন, ফিলিস্তিনি ভূখন্ড থেকে স্বেচ্ছায় সরে আসা উচিৎ ইসরাইলের। ১৮ শতাংশ বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়েই সন্তুষ্ট। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী জর্দান উপত্যাকার ওপরও ইসরাইলি স্বার্বভৌমত্ব প্রয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ বিষয়েও বেশিরভাগ ইহুদী নাগরিক ও বেশিরভাগ লিকুদ ভোটার নারাজ। জর্দানের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করে ওই উপত্যাকা নিজ ভূখন্ডে অন্তর্ভ‚ক্ত করতে রাজি নন তারা। মাত্র ২৮ শতাংশ বলছেন, জর্দান সরকারের সঙ্গে করা শান্তি চুক্তি নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকলেও তারা ওই পদক্ষেপ সমর্থন করেন। বিরোধী দলে ব্লু ও হোয়াইট ভোটারদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ এই মত পোষণ করেন। লিকুদ ভোটারদের মধ্যে ৪১ শতাংশ। জরিপ পরিচালনাকারী সংগঠন কমান্ডার্স ফর ইসরাইল’স সিকিউরিটি’র চেয়ারম্যান ও সাবেক উপ-সেনা প্রধান মাতান ভিলনাই বলেন, ‘জনগণের উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই [পশ্চিম তীর ও জর্দান উপত্যাকায়] ইসরাইলি স্বার্বভৌমত্ব প্রয়োগের বিরোধী। তারা ফিলিস্তিনি ভূখন্ড থেকে সরে আসার ভিত্তিতে বিকল্প সমাধান পছন্দ করেন।’ তিনি বলেন, ‘পেশাদারদের সঙ্গে পরামর্শ ও যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া একপেশে ওই পদক্ষেপ নেওয়া হলে ইসরাইলের জন্য দুর্যোগ নেমে আসবে। এছাড়া সহিংস ঘটনাক্রম সৃষ্টি হতে পারে। সাবেক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে আমরা ইসরাইলি সরকারকে ওই পদক্ষেপ থেকে সরে আসার আহবান জানাই। গণভোট আয়োজন ব্যতিত এই ধরণের গুরুতর ও ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ অনুমোদন না দেওয়ার আহবান জানাই।’ ইয়েদিওথ আহরোনোথ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।