পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাধারণ ছুটি বা লকডাউন কোনো কিছুতেই থামছে না সড়ক দুর্ঘটনা। গত ২৬ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশব্যাপী পরিবহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হলেও লকডাউনের পর এক মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ২১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ১৭৭ জন। গতকাল রোববার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পাঠানো এক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বর্তমান বাংলাদেশে লোকসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি (সরকারী হিসাব অন্যুায়ী)। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর চলাফেরার জন্য সড়ক পথ যথেষ্ট কম। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার পর বাংলাদেশের সড়ক পথের যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। বর্তমানে বাংলাদেশে ২১ হাজার কিলোমিটার পাকা রাস্তা রয়েছে যার মধ্যে মাত্র ৪৮% হাইওয়ে সম্পন্ন। অপরদিকে এ দেশে শুধু মোটর যানবাহনের সংখ্যাই প্রায় ৬ লক্ষ। রিক্সা, ভ্যান, সাইকেল, ঠেলাগাড়ি, অটোরিক্সা ইত্যাদি অগণিত। সা¤প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে উন্নত দেশের তুলনায় এগুলো আমাদের দেশে প্রায় ৩০ গুন বেশী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে সড়ক দূর্ঘটনার জন্য এককভাবে কেউ দায়ী নয়। নানাবিধ কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, চালকদের অসাবধানতা, অদক্ষতা ও লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক, সরু রাস্তা ও রাস্তায় ডিভাইডার না থাকা, পুরনো ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, প্রতিযোগিতামূলকভাবে গাড়ি চালানো এবং ওভারটেকিং প্রবনতা, সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতার অভাব, সড়ক বিষয়ক আইন প্রয়োগে এবং বাস্তবায়নের যথাযথ অভাব, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশের অভাব ও ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গ করা, বিকল্প যানবাহনের সুবিধা পর্যাপ্ত না থাকা, সড়কের এবং ফুটপাতের ওপর অবৈধ হাটবাজার ও স্থাপনা, অতিরিক্ত মালামাল ও যাত্রী বহন করা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় পথ অবরোধ, পথসভা, হরতাল প্রভৃতি কারণে যানজট সৃষ্টির ফলে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়া ইত্যাদি। সড়ক পরিবহনের সাথে সম্পৃক্ত এক ধরণের কর্মচারীদের দুর্নীতিও সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি তার প্রতিবেদনে বলেছে, গত এক মাসে ২০১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১১জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ২২৭জন। সমস্ত গণপরিবহন বন্ধ থাকা পরও সড়ক দুর্ঘটনায় এমন মৃত্যু সংখ্যায় উদ্বেগ জানিয়েছেন সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই এক মাসে নৌ-পথে আটটি দুর্ঘটনায় আটজন নিহত, দুজন আহত এবং দুজন নিখোঁজ হয়েছে। এ সময় ৬৯ জন পথচারী, ৬৭ জন চালক, ৩২ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৩ জন শিক্ষার্থী, তিনজন শিক্ষক, ৪৬ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ২৭ জন নারী, ২১ জন শিশু, একজন সাংবাদিক এবং একজন রাজনৈতিক দলের কর্মী সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে নিহত হয়েছে ৫০ জন চালক, ৬৪ জন পথচারী, ২২ জন নারী, ১২ জন ছাত্র-ছাত্রী, ২০ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৮ জন শিশু, একজন রাজনৈতিক দলের কর্মী, দুজন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, তিনজন শিক্ষক ও একজন সাংবাদিক।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সর্বোচ্চ ৯৭টি দুর্ঘটনা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে, ৬৩টি দুর্ঘটনা মোটরসাইকেলে, ২৯টি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ২৮টি নসিমন ও করিমন, ২২টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ১৭টি প্রাইভেট কার ও একটি বাস দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল। এই সময়ে মধ্যে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ২৩ এপ্রিল। এদিন ১৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪জন নিহত ও পাঁচজন আহত হন। আর সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ৯ এপ্রিল। এদিন একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়।
গত ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে গণপরিবহনসহ সব ধরনের পরিবহন যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়ক-মহাসড়ক সবই ফাঁকা। এর মধ্যেও এসব দুর্ঘটনার জন্য প্রধানত চালকের অদক্ষতাই দায়ী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে রেকর্ড সংখ্যক নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড ১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। একদিনে শনাক্ত হয়েছেন ৬৬৫ জন নতুন রোগী। একইসময়ে মারা গেছেন আরও দুজন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৪৫৫ জন। আর আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মোট ১৭৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।