গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
´যাদের মা আছে, দিনরাত লেপ্টে থাকেন। প্রাণ ভরে সেবা করেন। মা চলে যাওয়ার পর তীব্র দুঃখ কিছুটা হয়তো কমবে তাতে। আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।´
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের মায়ের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী ছিল গত ১ মে। ওই দিন মাকে নিয়ে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন তিনি।
স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে দেয়া হলো–
‘আমাদের ছিল অভাবের সংসার। অভাবী সংসারে কিছু কঠিন নিয়ম থাকে। আমাদেরও ছিল। যেমন- অতিরিক্ত মেধাবী হওয়ার কারণে ডিম পুরোটা পেত শুধু আমাদের বড় ভাই। আমাদের বাকি ভাইবোনের জন্য ডিম রান্না করা হতো ফেটে তরকারির মতো করে। কর্ন স্যুপের মতো। দেখতে লাল রঙের সেই তরকারি খুব প্রিয় ছিল আমাদের।
দুধের বেলায় নিয়ম ছিল আরও কড়া। দুধ পেত শুধু অসুস্থরা। অসুস্থ মানে মা আর আমার সবচেয়ে ছোট বোন।
ছোট বাসা। গোপন বলে কিছু থাকে না। প্রায়ই শুনতাম আম্মার সঙ্গে আব্বার রাগারাগি। যে দুধ বরাদ্দ থাকত তার জন্য, তা তিনি দিয়ে দিতেন পাড়ার এক হতদরিদ্র মহিলাকে।
আমার মায়ের আরও নানা বৈশিষ্ট্য ছিল। যেমন- কারও উপার্জন নিয়ে সন্দেহ থাকলে তিনি তার থেকে কিছু খেতেন না। অসুখ-বিসুখে আমার এক মামাতো ভাই ফলমূল নিয়ে এলে তিনি তা কখনও স্পর্শ করতেন না।
আমার সেই মায়ের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। পৃথিবীতে সবার মা সেরা। আমার মা-ও। পৃথিবীতে সব সন্তান অপদার্থ, আমি আরও বেশি। আজ ভোরে যখন আকাশ ভেঙে বৃষ্টি এসেছিল, মনে হলো– শেষ দিনগুলোতেও মায়ের কাছে অল্প সময় থেকে চলে আসতাম। তিনি বলতেন- বাবারে আর তো পাবি না বেশি দিন।
মনে পড়ে আমার মায়ের রগ বের হওয়া শীর্ণ হাত, ঘষাকাচের কালো চশমা, সামনে ধরা পত্রিকা পড়ছেন খুটিয়ে খুটিয়ে। কিংবা চিরতরে চলে যাওয়ার পর তার চুপসে যাওয়া দেহ, আর সেই স্মিতহাস্য মুখ।
´যাদের মা আছে, দিনরাত লেপ্টে থাকেন। প্রাণ ভরে সেবা করেন। মা চলে যাওয়ার পর তীব্র দুঃখ কিছুটা হয়তো কমবে তাতে। আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।´
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।