Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি ৬৪ বিশিষ্ট নাগরিকের

আসিফ নজরুলের রুমে তালা ও হুমকি প্রদান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর আসিফ নজরুলের ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও তাদের একটি সহযোগী সংগঠনের ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ৬৪ জন নাগরিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের উপর হামলা, শিক্ষাঙ্গনের স্বাধীনতা হরণ ও প্রফেসর আসিফ নজরুলকে হুমকি দেয়া দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রফেসর আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে যে বিদ্বেষমূলক ও আক্রমণাত্মক ভূমিকা গ্রহণ করা হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা মনে করি এমন আক্রমণাত্মক অবস্থান বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে সংবিধানে প্রদত্ত তার চিন্তা, বিবেক ও বাকস্বাধীনতার স্পষ্ট লঙ্ঘন যা দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহের চর্চার প্রতি প্রত্যক্ষ হুমকি ও মত প্রকাশের বিরুদ্ধে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টির নিন্দনীয় অপপ্রচেষ্টার অংশ। প্রফেসর আসিফ নজরুলের ফেসবুক পোস্ট সম্পর্কে যে কেউ ভিন্ন মত পোষণ করতে পারেন তবে তা করতে হবে নিয়মতান্ত্রিক ও শোভনীয় প্রক্রিয়ায়, আক্রমণাত্মকভাবে নয়।

বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকগণ বলেন, বাক-স্বাধীনতা চর্চার কারণে সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী প্রফেসর আসিফ নজরুলের বিভাগীয় কার্যালয়ে তালা ও বিভিন্ন উস্কানিমূলক পোস্টার লাগিয়ে দেয়, তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার প্রকাশ্য হুমকি প্রদান করে এবং শাহবাগ থানায় তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক ও মনগড়া একটি অভিযোগ দায়ের করে, যা তাকে অহেতুক হয়রানী ও হেয় করার শামিল। এ ধরনের ন্যক্কারজনক, দাম্ভিক ও উগ্র আচরণ নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর নগ্ন আক্রমণ যার ভয়াবহ পরিণতি বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের মৃত্যুর মতো মর্মান্তিক ঘটনা। আর এসব কারণেই প্রতি বছরই রিপোর্টার্স উইদআউট বর্ডারসের মত আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সূচকে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাচ্ছে এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

তারা বাক-স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারাগুলোর বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা প্রফেসর আসিফ নজরুলের চিন্তা, বিবেক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ এবং শিক্ষাঙ্গনের স্বাধীনতা সংকুচিত করার এসব প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, নারীপক্ষের সদস্য শিরিন প হক, সেন্ট্রাল উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর পারভীন হাসান, অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ড. মুস্তাফিজুর রহমান, আইনজীবী জেড আই খান পান্না, হাসনাত কাইয়ুম, সারা হোসেন, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী, আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, তবারক হোসেইন, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর গীতিয়ারা নাসরীন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মির্জা তাসলিমা সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সুমাইয়া খায়ের, ড. শাহনাজ হুদা, ড. নাইমা হক, ড. সি আর আবরার, মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, ড. তাসনিম সিদ্দিকী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. সাঈদ ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবায়েত ফেরদৌস, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেরদৌস আজিম, অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. বিনা ডি কস্টা, উন্নয়ন গবেষক ড. ইমরান মতিন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নিনা গোস্বামী, মানবাধিকার কর্মী ড. ফষ্টিনা পেরেরা, শারমীন মুরশিদ, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. সামিনা লুৎফা, ড. জোবায়েদা নাসরিন, কাজী মাহফুজুল হক শিপন, তাসনিম সিরাজ মাহবুব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাসরিন খন্দকার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. সাদাফ নূর, মাইদুল ইসলাম, গবেষক ড. নোভা আহমেদ, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. স্বপন আদনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. রুশাদ ফরিদী, মো. সেলিম হোসেন, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, কোস্টের নির্বাহী রেজাউল করিম চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মী মো. নূর খান লিটন, ইউনিভার্সিটি প্রেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিন, অধিকার কর্মী ও গবেষক রেজাউর রহমান লেলিন, হানা শামস আহমেদ, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. নায়লা জেড খান, আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম, লেখক রেহনুমা আহমেদ, সঙ্গীতশিল্পী অরূপ রাহী, আলোকচিত্রী মাহমুদ রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আসিফ নজরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ