Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

তেল মজুত রাখার জায়গা নেই বিপিসির

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের রাখতে আলোচনা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০১ পিএম

করোনা পরিস্থিতিতে দেশের শিল্প উৎপাদন থমকে যাওয়ায় জ্বালানি তেলের চাহিদা কমেছে ৭৫ ভাগের মতো। এর ওপর আগে থেকে যেসব কোম্পানিকে তেল সরবরাহ করার ক্রয় আদেশ দেওয়া হয়েছিল, তাদের থেকেও তেল নেওয়া হয়েছে। ফলে এখন আর নতুন করে তেল রাখার জায়গা নেই বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি)। এ অবস্থায় তেলের মজুত গড়তে বিপিসি বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করছে। তারা রাজি হলে কিছু তেল কিনে খারবে সরকার।

বুধবার বিপিসির চেয়ারম্যান শামছুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমরা বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা শুরু করছি, তারা রাজি হলে তেল কিনে তাদের ট্যাংকারে মজুত করে রাখা যাবে। তিনি জানান, মজুতের পুরোটাই জ্বালানি তেল ভরে রাখা হয়েছে। এখন নতুন করে তেল রাখার আর কোনও জায়গা তাদেও নেই।

জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বে লকডাউনের কারণে গত সপ্তাহের হিসাবে জ্বালানি তেলের চাহিদা কমছে। যার পরিমাণ দৈনিক ৩ কোটি ব্যারেলের মতো। বিশ্বে তেলের মজুত রাখার মতো ক্ষমতা রয়েছে ৬৮০ কোটি ব্যারেল। বড় বড় তেল কোম্পানির ধারণ ক্ষমতা শেষ হয়ে যাওয়াতে ট্যাংকার ভাড়া করে সাগওে তেল ভাসিয়ে রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তেলের বিপণন কঠিন। বলা হচ্ছে ইউরোপ আমেরিকাতে পুরোদমে লকডাউন উঠে গেলেও জ্বালানি তেলের ব্যারেল প্রতি দাম আগামী জুলাইতে উঠতে পারে ৩০ ডলারে। ফলে এ বছর তেলের দাম নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা করতে হবে না।

এ অবস্থায় দেশের দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা এগিয়েছে বিপিসি। এরমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের এক লাখ টন এবং অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ৭০ হাজার টনের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা সফল হলে এক লাখ ৭০ হাজার টনের কাছাকাছি তেল কিনে রাখা যাবে। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তেল রাখার জন্য প্রতি টনে মাস প্রতি ভাড়া চাইছে ছয় ডলার করে। এটি বড় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিপিসির কাছে। দেশে প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে ৬০ লাখ টনের মতো। ফলে এই পরিমাণ তেলের মজুত বৃদ্ধির অর্থ হচ্ছে মাত্র ১০ দিনের মজুত বৃদ্ধি করা।

বিপিসি সূত্র বলছে, প্রতি বছর ৬০ লাখ টন জ্বালানি তেল প্রয়োজন হলে প্রতিদিনের চাহিদা রয়েছে ১৬ হাজার ৫০০ টনের কাছাকাছি। এর ৭৫ ভাগ চাহিদা কমে যাওয়ায় এখন প্রতিদিন জ্বালানি তেলের চাহিদা মাত্র চার হাজার ১২৫ টনে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মজুত জ্বালানি তেল শেষ হতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যাবে। ফলে এখন তেল এনে মজুত করলে ভাড়া গুনতে হবে বেশি সময়ের জন্য। আর করোনা পরিস্থিতিতে কবে নাগাদ সবকিছু স্বাভাবিক হবে, সেটিও এখনই বলা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সব দিক ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, তেলের সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রর একটি সম্পর্ক রয়েছে। তেল ক্রয় করে আনতে গেলেই বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন হবে। এখন এই পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আমরা খরচ করতে সক্ষম কিনা তাও বিবেচনা করতে হবে।

মোংলা সমুদ্রবন্দরে নির্মিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল স্টেশন মোংলা অয়েল ইনস্টলেশন’বিশ্বে জ্বালানি তেলের বিপণন পরিস্থিতি বলছে, এখন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল নেওয়ার জন্য ক্রেতাকে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ জ্বালানি তেল নিয়ে গেলে, ক্রেতাকে উল্টো অর্থ দেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিপিসি

২৬ আগস্ট, ২০২২
২০ এপ্রিল, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ