মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পূর্বাভাস অনুসারে, করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিতে টালমাটাল থাকায় চীনই একমাত্র প্রধান দেশ, যার জিডিপি ২০২০ সালে বৃদ্ধি পাবে। আশা করা হচ্ছে যে, চলতি বছর চীনে ১.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে এবং অন্য দেশগুলোতে শূণ্য প্রবৃদ্ধি হবে। বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছে আইএমএফ।
গত জানুয়ারিতে আইএমএফ বলেছিল, এবছর চীনের অর্থনীতি বিকশিত হবে ছয় শতাংশ হারে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, সেখানকার অর্থনীতির বিকাশ ১.২ শতাংশের বেশি হবে না। তবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে চীন ঘুরে দাঁড়াবে চলতি বছরের শেষে। আগামী বছরে চীনের অর্থনীতির বিকাশ হবে সম্ভবত ৯.২ শতাংশ হারে।
করোনা মহামারি ব্যাপক প্রভাব ফেলবে এশিয়ার পরিষেবা ক্ষেত্রে। প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে রফতানি। এর ফলে গত ৬০ বছরে এই প্রথম এশিয়ার অর্থনৈতিক বিকাশ থমকে যাবে। আইএমএফের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় শাখার ডিরেক্টর চ্যাংইয়ং রি বলেন, বিভিন্ন দেশের সরকারের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও কারখানাগুলিকে সাহায্য করা। লকডাউনের ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেজন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। তাঁদের সাহায্য করা উচিত। রি-র কথায়, ‘বিশ্ব অর্থনীতি বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলও তার ব্যতিক্রম নয়। এই অঞ্চলে করোনা মহামারীর যে প্রভাব পড়বে, তা অভূতপূর্ব। এখন ব্যবসা-বাণিজ্য আর আগের মতো নেই। বিভিন্ন দেশের নীতি নির্ধারকদের উচিত বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করা।’
এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতি সম্পর্কে এদিন এক রিপোর্ট প্রকাশ করে আইএমএফ। তাতে বলা হয়, চলতি আর্থিক বছরে এশিয়ার অর্থনীতির বিকাশ সম্ভবত থমকে যাবে। আগে ধরা হয়েছিল, বিশ্ব জোড়া আর্থিক সংকটের মধ্যে এশিয়ার অর্থনীতির বিকাশ হবে ৪.৭ শতাংশ হারে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তা হবে না। আইএমএফের ধারণা, আগামী আর্থিক বছরে এশিয়ার বিকাশ হবে ৭.৬ শতাংশ হারে। ধরে নেয়া হচ্ছে, তার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আসবে করোনা মহামারি। তবে পরিস্থিতি এখনও খুবই অনিশ্চিত।
এর আগে ২০০৮ সালে লেহম্যান ব্রাদার্সের পতনের মধ্যে দিয়ে আর একদফা আর্থিক সংকটের সূচনা হয়েছিল। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি আরও খারাপ। মানুষ ঘরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। দোকানপাট বন্ধ। পরিষেবা ক্ষেত্র সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতি বছর এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে ইউরোপ ও আমেরিকায় বিপুল পরিমাণ পণ্য রফতানি হয়। কিন্তু চলতি আর্থিক বছরে চাহিদা অনেক কমেছে।
জাতিসংঘের রিপোর্টে আগেই বলা হয়েছিল, করোনাভাইরাস মহামারীর জেরে বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি হবে হাজার হাজার কোটি ডলার। এর ফলে সবচেয়ে বিপদে পড়বে উন্নতিশীল রাষ্ট্রগুলি। বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ মানুষই বাস করেন উন্নতিশীল দেশগুলোয়। এই জটিলতার মোকাবিলা করা যাবে যদি গোটা বিশ্ব এক হয়ে হয়ে চলার শপথ নেয়, বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও। মানবসভ্যতার এই সঙ্কটের সময় এক হয়ে লড়াই করতে হবে। পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ জটিলতা আরও বাড়াবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুধু মানুষকে নয়, তার সমাজকেও তছনছ করে দিচ্ছে। স্বাস্থ্য বিপর্যয় শুধু নয়, মানবসভ্যতার বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছে গোটা বিশ্ব। সূত্র: দ্য সান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।