Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের লেক ভ্রমণে ৬২ হাজার মানুষ

উহান থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০১ এএম

মঙ্গলবার উহানে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে চীন, যেখান থেকে গত বছর করোনাভাইরাস মহামারী শুরু হয়েছিল। গত রোববার বার্ষিক এক উৎসব উপলক্ষে দেশটির জনপ্রিয় এক লেক পরিদর্শনে গিয়েছিলেন প্রায় ৬২ হাজার মানুষ। এতেই বোঝা যাচ্ছে সেখানকার জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায় হাজার হাজার মানুষ পূর্ব চীনের ঝিজিয়াং প্রদেশের রাজধানী হ্যাংজহুতে অবস্থিত ‘ওয়েস্ট লেক’ ভ্রমণে গিয়েছে। ১০ হাজার হেক্টরের এই লেকটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে স্বীকৃত।
এদিন দর্শনার্থীদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের অংশ হিসাবে পার্কটিতে প্রবেশের জন্য ১ লাখ ৬৫ হাজার টিকেট বিনামূল্যে দেয়া হয়েছিল। পার্কের কর্মীরা বলছেন, আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল।
লেকের পাশাপাশি সাইটটিতে আরও ১৬টি রয়েছে যা যেখানে এদিন ৭ লাখ ৬০ হাজার মানুষ ঘুরতে গিয়েছিলেন। এটি একটি নতুন রেকর্ড। এর আগে গত বছরের অক্টোবর মাসে একদিনে সেখানে গিয়েছিলেন ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩০০ মানুষ।
এ বিষয়ে পার্কের পরিচালনা কমিটির পরিচালক ফ্যাং গুওসিং বলেছেন যে, তারা এই বছর অনলাইন টিকিটের প্রতি মনোনিবেশ করেছেন, যা যানজট কমাতে সহায়তা করেছে এবং দর্শনার্থীদের মাঠে প্রবেশের আগে ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষার’ মাধ্যমে যেতে সাহায্য করেছে। চীনের অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থানগুলোতেও এদিন প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছিল।
এর আগে গত মঙ্গলবার উহান থেকে লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষদিকে ওই শহর থেকেই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব শুরু হলে গত ২৩ জানুয়ারি পুরো উহান লকডাউন করে দেয়া হয়। দীর্ঘ ১১ সপ্তাহ পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে শহরটির ওপর থেকে সব বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হয়। এ সময় শহরজুড়ে করা হয় আলোকসজ্জা। বুধবার সকাল থেকেই আবারো মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল শুরু করে শহরটিতে। একইসঙ্গে চীনের অন্যান্য প্রদেশ থেকে উহান শহর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। চলছে সবধরনের যানবাহন।
তবে যে শহরটি পুনরায় খোলা হয়েছে তা বিশাল ক্ষতিগ্রস্থ এক জায়গা, যার পুনরুদ্ধার বিশ্বজুড়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে যে, কীভাবে জনগণ অতীতের যন্ত্রণা এবং এ রকম বিস্ময়কর মাত্রার বিপর্যয়কে সরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।
উহানে অসুস্থতা এবং মৃত্যু কয়েক হাজার মানুষকে স্পর্শ করেছে এবং কয়েক দশক ধরে দীর্ঘায়িত হতে পারে এমন ট্রমা তাদের প্রভাবিত করেছে। এমনকি যারা ব্যবসা আবার খুলেছে, তাদের সামনের অপেক্ষা করছে হৃদয়বিদারক দৃশ্য এবং দীর্ঘ অলসতা বজায় থাকার সম্ভাবনা। প্রতিবেশী রাজ্যগুলোর কর্তৃপক্ষ লোকেদের আগমন এবং প্রস্থান নিয়ন্ত্রিত করবে, ফলে স্বাভাবিকতা ফিরে আসে না।
চীনা কর্তৃপক্ষ প্রাদুর্ভাবের বিস্তার সীমাবদ্ধ করার কড়া চেষ্টায় জানুয়ারির শেষদিকে ১১ মিলিয়ন মানুষের একটি শিল্প কেন্দ্র উহানকে সিল করে দিয়েছিল। সেই সময় বহিরাগতরা এটিকে চরম পদক্ষেপ হিসাবে দেখেছিল, কেবলমাত্র চীনের মতো ব্যবস্থায় এটির চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে মহামারীটি আরও খারাপ হওয়ার সাথে সাথে বিশ্বজুড়ে সরকারগুলি তাদের নাগরিকদের চলাচলে বিভিন্ন ধরনের কঠোর বিধিনিষেধ তৈরি করেছে।
গতকাল উহানে ট্রেন, সড়কে চলাচলকারী সব ধরনের পরিবহন এবং অন্যান্য রেল সংযোগ পুনরায় চালু করে দেয়া হয়। উহানের বাসিন্দারা এখন চাইলেই শহর ছেড়ে অন্য যে কোনো স্থানে যেতে পারবেন। তবে হেলথ অ্যাপের যারা সবুজ সংকেত পাবেন সেসব সুস্থ বাসিন্দা ও পর্যটকই চলাচল করতে পারবেন।
করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর প্রায় ১১ সপ্তাহ ধরে উহানের ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি বাসিন্দারা অবরুদ্ধ ছিলেন। পুরো উহান ছিল অচল আর ভূতুড়ে এক নগরী। বাইরের কেউ শহরটিতে ঢুকতে পারতো না সেখান থেকেও কেউ বাইরে যেতে পারেনি এতদিন। বন্ধ ছিল সব ধরনের যান চলাচল। ঘরবন্দি করে রাখে ১ কোটিরও বেশি মানুষকে। সূত্র : ল্যাডবাইবেল, সিনহুয়া, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ