রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে
দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালোড়ায় নাগর নদীসহ নদীর বাঁধ সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে স্থানীয় একশ্রেণির অর্থ লিপ্সু বালু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে অবাধে বালু উত্তোলন করছে। ফলে এলাকার নদী সংলগ্ন বাঁধ, রাস্তাঘাট, ফসলের জমিসহ গ্রামগুলো মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। দুপচাঁচিয়া ও কাহালু উপজেলার সীমানার বুক চিরে বয়ে গেছে নাগর নদী। নদীর দু’ধার দিয়ে এলাকা রক্ষার বাঁধ, নির্মাণ ও বিভিন্ন স্থানে ফসলের জমিসহ বহু গ্রাম গড়ে উঠেছে। এই গ্রামগুলোতে যাতায়াতের জন্য নির্মাণ হয়েছে কাঁচা-পাকা রাস্তা। দীর্ঘদিন যাবত উপজেলার তালোড়ার সাবলা রেল-ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে ইটখোলা নামক স্থানে বাঁধ সংলগ্ন এলাকা ও সরঞ্জাবাড়ী নামক স্থানের নদী থেকে বেশ কয়েকজন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে এলাকার প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। এইসব বালু ব্যবসায়ীরা নাগর নদীর বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় নামমাত্র সামান্য জায়গা ক্রয় করে তাতে প্রথমে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন শুরু করে। একইভাবে অনেক স্থানে শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য করে আসছে। এ ছাড়াও সরঞ্জাবাড়ী এলাকায় নাগর নদীর মাঝে ও নদী সংলগ্ন জমিতে শ্যালো মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এইসব বালু ব্যবসায়ী বালু বহনের জন্য নদী রক্ষার বাঁধ কেটে রাস্তা তৈরি করেছে। আবার এসব ব্যবসায়ীরা উত্তোলনকৃত বালু নদীর বাঁধের উপর রাখাসহ পার্শ্বের রাস্তাঘাটের উপর উঁচু ঢিব করে রেখেছে। ফলে বাঁধের উপর দিয়ে চলাচলে এলাকাবাসীর বিঘœ ঘটছে। গতকাল সোমবার সরেজমিন উপজেলার তালোড়া সাবলা রেল ব্রিজের দক্ষিণে ইটখোলা নামক স্থানে ও সরঞ্জাবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে এলাকাগুলোর অবস্থা করুন। নদীর বাঁধের ধারে শ্যালো মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। ফলে ওই এলাকার সমতল ভূমিগুলো গভীর সমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়াও এলাকাগুলোর চলাচলের নদীর বাঁধের উপর বিভিন্ন স্থানে পাহাড় করে বালু স্তূপ করে রাখার ফলে বাঁধ সংলগ্ন গ্রামের অনেক বাড়িসহ ফসলি জমিতে ফাটল ধরেছে। নদী রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে নদীর থেকে রক্ষা বাঁধসহ ফসলি জমি বিলিন হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে তালোড়া পৌরসভার সাবেক অতিরিক্ত পৌর প্রশাসক ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম বকুল মুঠোফোনে ‘দৈনিক ইনকিলাব’-কে জানান, তালোড়া এলাকায় এইসব অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অনেক পূর্বেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করেছেন। তালোড়া ইউপি নির্বাচন ও এইচএসসি পরীক্ষার কারণে প্রশাসনের পক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এ দিকে এরপরও দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও প্রশাসন এইসব অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ ব্যাপারে গত জুন মাসের উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এইসব অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদ পারভেজের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, গত মাসে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভার পর ঈদের লম্বা ছুটির কারণে এইসব অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এইসব অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোরশেদা খাতুন জানান, তিনি সদ্য এই উপজেলায় যোগদান করেছেন। এ সংক্রান্তে কোন অভিযোগ পাননি। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে দ্রুত এইসব অবৈধ বালু উত্তোনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে নদী সংলগ্ন বাঁধ, রাস্তা, ফসলি জমি, ঘড়বাড়িসহ অনেক গ্রাম ভূমি ধসের মতো ঘটনা ঘটবে। তারা বাঁধ এলাকা সংলগ্ন জমিসহ নদী থেকে এইসব স্থায়ীভাবে অবৈধ এই বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।