পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
সারাদেশের মানুষ করোনার ভয়ে কম্পমান। আগামী দিনগুলোতে কী হবে? পরিস্থিতি কি আরও ভয়াবহ হবে? নাকি আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে? যদি পরিস্থিতি ভয়াবহ হয় তাহলে কেনো ভয়াবহ হবে? যদি উন্নতি হয় তাহলে কেন হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে এগুলোর অনুসঙ্গ হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই যে প্রশ্ন আসে সেটি হলো, বর্তমানে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি কী? দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সঠিক চিত্র পেতে গেলে রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যের ওপর নির্ভর করা ঠিক হবে না, সে সরকারি দল হোক বা বিরোধী দল হোক। সঠিক চিত্র পেতে গেলে আমাদেরকে দেশি এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হতে হবে। আবার দেশি ও বিদেশি সব ধরনের নামকরা চিকিৎসক হলেই যে সঠিক চিত্র বর্ণনা করতে পারবেন, সেটিও ঠিক নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে ঢাকার নামকরা কয়েকজন চিকিৎসককে জানি, যারা করোনাভাইরাসের ভয়ে তাদের চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন। একজন চিকিৎসককে জানি, যিনি চিকিৎসা শাস্ত্রে তার শাখায় বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক। অথচ তিনি তার চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন। তার ভয়, যেহেতু দৈনিক ৪০ থেকে ৫০ জন লোক বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে অর্থাৎ রোগবালাই নিয়ে তার কাছে আসে তাদের মধ্যে করোনাভাইরাস সুপ্ত থাকতে পারে। আর সব ডাক্তারই তাদের চেম্বারে রক্ষিত বিছানায় রোগীদেরকে শোয়ান, তাদের রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন ইত্যাদি পরীক্ষা করেন। প্রায় ক্ষেত্রেই পেটে চাপ দিয়ে পাকস্থলীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। এখন রোগীটি যদি কোভিড-১৯ এর বাহক হয় তাহলে তাকে স্পর্শ করার কারণে ঐ চিকিৎসকও তো সংক্রমিত হতে পারেন। তারপরেও একটি ব্যাপার আছে। করোনাভাইরাস অসুখটি চিকিৎসা শাস্ত্রের কোন ব্রাঞ্চে পড়বে সেটি নিয়ে এখনো স্পষ্ট কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি। এটি কি মেডিসিন, নাকি বক্ষব্যাধি, নাকি নাক-কান-গলা কোন ব্রাঞ্চে পড়বে?
পিজি হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ডা. আব্দুল্লাহ করোনা সম্পর্কে দুয়েকটি কাগজে কলাম লিখছেন। সেখানে তিনি বলার চেষ্টা করছেন যে, করোনা কীভাবে ছড়ায় এবং কীভাবে সেটি ছড়ানোর আগেই প্রতিরোধ করা যায়। আমার ব্যক্তিগত মতে, করোনা সম্পর্কে সবিস্তারে বলতে পারেন ভাইরোলজিস্ট অর্থাৎ ভাইরাস বিশেষজ্ঞ, অণুজীব বিজ্ঞানী বা মলিকিউলার বায়োলজিস্ট, এপিডেমিওলজিস্ট বা মহামারী বিশেষজ্ঞ- এরা তাদের পড়াশোনা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে এসম্পর্কে বলতে পারেন।
তেমনি একজন ভাইরোলজিস্ট হলেন, পিজি হাসপাতালের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম। তাঁর এবং ডা. এবিএম আব্দুল্লাহর মতে, আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহ করোনা রোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য খুব ক্রুশিয়াল সময়। শুধু মাত্র ক্রুশিয়াল বলবো কেন, বিপজ্জনকও বলা যায়। তারা হিসাবটা করেছেন নিম্নােক্ত ছকে:
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম একজন করোনা রোগী শনাক্ত হন। এরপর তার সংস্পর্শে এসে অন্যদের মাঝেও সেটি ছড়িয়ে পড়েছে। তারপরেও ২০ এ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের সাথে আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল অব্যাহত ছিল। ২০ এ মার্চ থেকে মাত্র ৪টি রুটে বিমান চলাচল অব্যাহত রেখে বাকি সমস্ত রুটের বিমান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। তাদের মতে, এই কাজটি আরও আগে করলে ভালো হতো। কারণ গত ৮ মার্চ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত এই ১২ দিনে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ৬ লক্ষেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি। এদেরকে বিমানবন্দরে যে স্ক্রিনিং করা হয়েছে সেই স্ক্রিনিংয়ে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে না। করোনাভাইরাস ধরা পড়ে বিশেষ কিট বা রিএজেন্ট নামক যন্ত্রের মাধ্যমে। এই যন্ত্র দিয়ে ব্যক্তি বিশেষের জিহ্বার লালা গ্রহণ করা হয় এবং সেটি পরীক্ষা করা হয়। আর একটি পদ্ধতি হলো, ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী যেটির কথা বলেছেন। সেটি হলো, ব্যক্তি বিশেষের রক্ত নিয়ে সেটি পরীক্ষা করা। প্রথম পদ্ধতিতে ব্যক্তি বিশেষের স্পুটাম পরীক্ষা করে করোনার অস্তিত্ব আছে কি নাই সেটি শনাক্ত হতে এক থেকে দুই সপ্তাহ লাগে। সর্ব নিম্নে ৭ দিন এবং সর্বোচ্চ ১৪ দিন।
দুই
বিমান বন্দরে যে স্ক্রিনিং করা হয় সেটি নেহায়েৎ প্রাথমিক পরীক্ষা। ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করা হয় যে ঐ ব্যক্তির তাপমাত্র বেশি কিনা এবং তার জ¦র ও সর্দি কাশি আছে কিনা। যাদের মধ্যে এসব সিন্ড্রম থাকে না, তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং যাদের ওগুলো থাকে তাদেরকে হোম কোয়াররেন্টিনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যাদের বিষয়টি কিছুটা জটিল মনে হয় তাদেরকে সরকারি কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এতদিন ধরে ঐ প্রাথমিক স্ক্রিনিংয়ের ওপরই নির্ভর করা হয়েছে। এর ফলে যারা হোম কোয়ারেন্টিনে গিয়েছেন তারা সরকারের নির্দেশ বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেননি। দেখা গেছে, তারা পতেঙ্গা বা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গেছেন, অথবা পিকনিকে গেছেন অথবা বিয়ে শাদি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
আমরা আগেই বলেছি যে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০ মার্চ পর্যন্ত প্রবাস থেকে ঢাকায় এসেছেন। এদের সংখ্যা আগেই বলেছি ৬ লক্ষাধিক। এই বিপুল সংখ্যক লোক বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের স্পর্শে এসেছেন। এর ফলে ঐ বিদেশ ফেরত লোকদের ভেতরে করোনাভাইরাস বাস করছে কিনা অথবা তাদের সংস্পর্শে আসা নতুনদের মাঝে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে কিনা সেটি অফিসিয়ালি জানতে জনগণকে কমপক্ষে আরও দুই থেকে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। ইতোমধ্যেই গত ৩/৪ দিন থেকে দৈনিক তিনটি করে রোগী সংযুক্ত হচ্ছেন। রবিবার যখন এই লেখা লিখছি তখন আক্রান্তের সংখ্যা তিন জন যুক্ত হয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ জন। মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। শনিবার পর্যন্ত দুই জন মারা গেছেন, সেটি রবিবারের পত্র পত্রিকায় এসেছে। কিন্তু রবিবার শেষ রাত্রি ৪টার সময় লন্ডন থেকে আগত সিলেট শামসুদ্দিন মেডিকেল কলেজে যে মহিলার মৃত্যু হয়েছে তার মৃত্যু গণনার মধ্যে নেওয়া হয়েছে বলে হয় না। ঐ দিকে শনিবার মিরপুর টোলার বাগে আরও ৪০টি বিল্ডিং পুলিশ ঘিরে রেখেছে। অর্থাৎ ঐ ৪০টি বিল্ডিংও লকডাউনের আওতায় এসেছে। ঐ ৪০টি বিল্ডিংয়ে কত জন আক্রান্ত হয়েছেন সেকথা গত রবিবারের প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়নি। গতকালের খবর, আরো ৩ জন মারা গেছেন।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম এবং অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহর মতে, বিদেশ থেকে বাংলাদেশিদের আসা বন্ধ করার (ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার ফলে) পূর্ব পর্যন্ত যে ৬ লক্ষাধিক প্রবাসী দেশে এসেছেন তাদের মধ্যে কার কার ভেতরে ইতোমধ্যেই ভাইরাস প্রবেশ করেছে সেটি ধরা পড়তে কম করে হলেও সর্ব নিম্ন ১০ দিন এবং সর্বোচ্চ ২১ দিন লাগবে। এই ২১ দিনই হচ্ছে পিক টাইম বা স্প্রেডিং টাইম। যারা ইতোমধ্যেই বিদেশ থেকে ঐ রোগটি নিয়ে এসেছেন তারা এর মধ্যে স্বদেশে যাদের সাথে মেলা মেশা করেছেন তাদের মধ্যে যারা সংক্রমিত হয়েছেন তাদের সংক্রমণও প্রকাশ পাবে ঐ সময়ের মধ্যে। এখন বাংলাদেশ যদি সৌভাগ্যের অধিকারী হয় এবং আল্লাহর রহমত নাজিল হয় তাহলে হয়তো মহামারী আকারে এটি দেখা যাবে না। কিন্তু ভাইরোলজিস্টদের মতে, যদি এদেরকে দেশে ফেরার পরেই চীনসহ অন্যান্য দেশের মতো বাধ্যমূলক কোয়ারেন্টিনে রাখা হতো তাহলে মহামারীর শঙ্কাটি থাকতো না।
তিন
অধ্যাপক নজরুল ইসলামের মতে, এখন যেসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো আগেই নেওয়া উচিত ছিল। বিশেষজ্ঞগণ বলেছেন যে, এই ভাইরাস বাংলাদেশে কমিউনিটি লেভেলে চলে গেছে। এখন যদি কমিউনিটি লেভেলে সংক্রমণ শুরু হয় তাহলে দেশে ভয়াবহ ডিজাস্টার ঘটবে। সেই ডিজাস্টারের প্রথম ভিক্টিম হবেন আক্রান্তদেরকে যারা চিকিৎসা করছেন এবং যারা সেবা দিচ্ছেন তারা। কারণ সরকার ইতোমধ্যেই স্বীকার করেছেন যে তাদের হাতে পর্যাপ্ত পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) অর্থাৎ পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক পোশাক পরিচ্ছদ ও যন্ত্রপাতি নাই। এর ফলে চিকিৎসক এবং সেবাদানকারীরাও সংক্রমিত হতে পারেন। এসব সম্ভাব্য বিপদ অনেক আগেই এড়ানো যেতো যদি বিদেশ ফেরতাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হতো। গত ২১ মার্চ একটি জাতীয় বাংলা দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান সংবাদ হিসাবে প্রকাশিত খবরে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন যে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের জন্য সকলকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তারপর ২০ মার্চ পর্যন্ত তাদের সংখ্যা দাঁড়ায় ২০ জন যার মধ্যে মৃত্যু হয় একজনের। এই ২০ হলেন বিদেশ থেকে যারা এসেছেন অথবা তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন। অধ্যাপক নজরুল ইসলামের মতে বর্তমানে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর মহামারী রূপে বিস্তৃতি ঠেকানো কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। সেটি করতে হলে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়ে তার সচিবালয় থেকে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করার সার্বক্ষণিক চেষ্টা করতে হবে এবং প্রতিটি পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করতে হবে।
চার
কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সরকারের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাব রয়েছে, একথা বলে অত্যুক্তি হবে না। গত ২১ মার্চ ডেইলি স্টারের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় ৭ জন মন্ত্রী এবং একজন সাবেক মন্ত্রীর বক্তব্য তাদের ছবিসহ বেরিয়েছে। এদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়ামের সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে দেশ করোনামুক্ত। পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেছেন, করোনা কোনো ভয়ংকর রোগ নয়। জ¦র এবং ফ্লুর মতোই এটি একটি রোগ। সেতু মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনা মারাত্মক কঠিন একটি রোগ, কিন্তু আমরা তার চেয়েও শক্তিশালী। তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেছেন, উন্নত দেশগুলির চেয়েও আমরা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আরও বেশি করে প্রস্তুত। স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেছেন, করোনাভাইরাস ভয়ংকর রোগ নয়, তবে এটি সংক্রামক। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যতক্ষণ শেখ হাসিনা রয়েছেন ততক্ষণ করোনা আমাদের কিছুই করতে পারবে না।
গত ২১ মার্চ রাতের টেলিভিশন সংবাদে দেখা গেল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. আব্দুল্লাহকে নিয়ে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন। এর আগে তার গুলশানের বাসভবনে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে তারা এক বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে অধ্যাপক আব্দুল্লাহও ছিলেন। সাংবাদিকদের কাছে মেয়র সাঈদ খোকন জানান যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশকে সামগ্রিকভাবে অথবা তার অংশ বিশেষকে লকডাউন করার সুপারিশ করেছেন। একই সাথে তারা বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার সুপারিশ করেছেন। ঐ খবরে আরও বলা হয় যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য বঙ্গভবন যাচ্ছেন। মুহূর্তের মধ্যেই জল্পনা কল্পনা শুরু হয় যে প্রধানমন্ত্রী হয়তো প্রেসিডেন্টকে জরুরি অবস্থা জারির সুপারিশ করবেন। কিন্তু পরদিন অর্থাৎ রোববার বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ঢাকা অফিস থেকে জানানো হয় যে লকডাউন করা বা জরুরি অবস্থা জারি করা সম্পর্কে তারা মেয়রের কাছে কোনো কিছু বলেননি। তারপর মেয়রের তরফ থেকেও আর কিছু বলা হয়নি।
এই যদি হয় সরকারের বিভিন্ন স্তম্ভের মধ্যে অসংলগ্ন উক্তি করার প্রবণতা তাহলে করোনার মতো হাজার বছরের এমন অশ্রুতপূর্ব ও ভয়াবহ রোগ মোকাবেলা করা তাদের পক্ষে কীভাবে সম্ভব?
গত ২১ তারিখ পশ্চিমবেঙ্গর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেছেন যে করোনা পরিস্থিতি যতদিন বিরাজ করবে ততদিন পশ্চিমবঙ্গের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৬ মাসের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ করার নির্দেশ তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে দিয়েছেন। এছাড়া কানাডা, ইংল্যান্ড প্রভৃতি দেশ তাদের জনগণের জন্য সহজলভ্য যেসব অর্থনৈতিক প্যাকেজ দিচ্ছে সেরকম কোনো কিছুর চিন্তা কি বাংলাদেশ করতে পারে না? করোনা আক্রান্ত রোগীকে আইসিউতে পাঠালে ৬০/৭০ হাজার টাকা খরচ হয়। কয়জন এই বিপুল খরচ বহন করার ক্ষমতা রাখে? সরকার কি এ ব্যাপারে প্রণোদনা প্যাকেজ দিতে পারেন না? বিশেষ করে গরিব, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদেরকে?
দেশে করোনাভাইরাস এপ্রিলের শুরু থেকে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। করোনার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলার পর তিনি এমনটি মনে করছেন।
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।