রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ফটিকছড়িতে মহাসড়ক নির্মাণে চলছে বালি-মাটি লুটতরাজ! ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বন-পাহাড়, নদী-খাল, ছড়া-বিল। বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে পরিবেশ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান র্যাব আরসি’র নিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং একজন যুবলীগ নেতার যোগসাজসে এ লুটতরাজ চলছে বলে জানা গেছে। এ যেন দেখার কেউ নেই। পাহাড় এবং বনাঞ্চল কেটে রাস্তা তৈরি করায় বনবিভাগ মামলা দায়ের করেছে থানায়। হাতে-নাতে ধৃত ২ জনকে পুলিশে দিয়েছে বন বিভাগ। আটক করেছে মাটি কাটার একটি এস্কেভেটর।
জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের হাটহাজারী থেকে ফটিকছড়ির সীমান্ত পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে (১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রশস্থকরণ) উন্নীতকরণের কাজ চলছে ৩শ’ ৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে। ঢাকার ৩২ মতিঝিলস্থ ‘র্যাব আরসি প্রাইভেট লিমিটেড’ হাটহাজারীর এনায়েতপুর অংশ থেকে ফটিকছড়ির শেষ সীমান্ত পর্যন্ত ২৪.৫০ কিলোমিটার কাজ পেয়েছে, যার ব্যয় মূল্য প্রায় ২শ’ ৩৭ কোটি টাকা। এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরুর পর থেকেই ফটিকছড়ির ‘কারবালা টিলা’ নামক স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্প গেঁড়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার মহাসড়কের দু’পাশে পাহাড় কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। ফলে খাগড়াছড়ি জেলার বৈদ্যুতিক লাইন ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। সাড়ে ২৪ কিলোমিটার মহাসড়কের দু’পাশে প্রশস্থকরণের জন্য ফটিকছড়ির পাহাড়গুলো থেকে সরকার দলের চিহ্নিত লোকদের মাধ্যমে পাহাড় কেটে ভরাট করা হচ্ছে। হালদা নদী থেকে বালি উত্তোলণ সরকার নিষিদ্ধ হলেও এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘র্যাব আরসি’র ওই চিহ্নিত লোকদের মাধ্যমে বালি-মাটি লুটতরাজ চালাচ্ছে। ফটিকছড়ির পিলখানা মৌজা এলাকায় হালদার বালি লুটসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কেটে বিরান ভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে। এ সড়কের জন্য বালি-মাটি লুট করতে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং পাহাড় কেটে ৫/৬ কিলোমিটার সড়ক তৈরি করা হয়েছে। পাহাড় কাটার এ মহোৎসবে পরিবেশ অধিদফতর নাকে তৈল দিয়ে ঘুমালেও বন বিভাগ গত ৩ মার্চ ফটিকছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। এতে দেখা যায়, ফটিকছড়ির ইউএনও মো. সায়েদুল আরেফিনের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট চলাকালে র্যাব আরসি’র একটি এস্কেভেটর দিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং পাহাড় কেটে গোপন সড়ক তৈরি করা হচ্ছে। তৎক্ষনাৎ মোবাইল কোর্টে দায়িত্ব পুলিশ নির্দেশিত হয়ে এস্কেভেটর চালক মো. রঞ্জু প্রামাণিক এবং এস্কেভেটরটি আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তি মতে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট র্যাব আরসি’র জিএম নাসির, কর্মকর্তা আনোয়ার, মাজেদ, জনৈক দেলোয়ার, ফটিকছড়ি পৌর কাউন্সিলর ও পৌর যুবলীগের আহবায়ক গোলাপ, যুবলীগ নেতা শাকিল, অপর এস্কেভেটর চালক সাইফুলকে আসামি করে ফটিকছড়ি থানায় এ মামলা করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে আটক এস্কেভেটর চালক রঞ্জু এবং পরে গ্রেফতার যুবলীগ নেতা শাকিলকে জেলে পাঠায় পুলিশ এবং আটক এস্কেভেটর বন বিভাগের হেফাজতে রাখা হয়।
এ ব্যাপারে র্যাব আরসি’র প্রকল্প পরিচালক নুরুজ্জামান কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে ফটিকছড়ি পৌর কাউন্সিলর গোলাপ মওলা গোলাপ বলেন, আমি র্যাব আরসিকে আমার জায়গা ভাড়া দিয়েছি মাত্র, বালি-মাটি ব্যবসার সাথে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমদ বলেন, পাহাড় বা বন কাটার কোনো অনুমতি আমাদের নেই। এ অভিযোগ শুনে আমরা পাহাড়-বন কাটতে নিষেধ করে চিঠি দিয়েছি। বালি কোথা থেকে আনছে তা আমাদের জানা নেই। আমরা র্যাব আরসি থেকে সিডিউল মতে কাজ বুঝে নিচ্ছি মাত্র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।