Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আল্লাহই আমাদের শেষ ভরসা!

জুবায়ের আহমেদ | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০২০, ১২:০২ এএম

ধর্মপ্রাণ মানুষ মাত্রই গায়েব বিশ্বাস করেন। ধর্মপ্রাণ মানুষ যে ধর্মের অনুসারীই হোক না কেনো, সৃষ্টিকর্তার হাতেই সকল ক্ষমতা, এ বিশ্বাস তার দৃঢ়। বাংলাদেশ ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশ, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কিংবা যে ধর্মের লোক হোক না কেনো, যেকোন বিপদ আপদে মানুষের প্রথম ভরসা আল্লাহর উপর। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা থাকবে তা স্বাভাবিক হলেও যেকোন বিপদ আসার পূর্বে কিছু কারণ থাকে, যার মাধ্যমে বিপদের সৃষ্টি হয়। বিজ্ঞান সেসব কারণ চিহ্নিত করে। অসুখ সংক্রান্ত প্রতিটি বিপদ চিকিৎসা বিজ্ঞানের মাধ্যমে মানুষ মোকাবেলা করে আসছে যুগ যুগ ধরে। যদিও বহু রোগের বহু রোগী থাকে, যারা চিকিৎসা বিজ্ঞান মতে বাঁচার আশা শেষ বলা হলেও বেঁচে যায়, সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকে বহুদিন। তখনই মনে হয়, সৃষ্টিকর্তা আছেন, তিনিই সকল ক্ষমতার অধিকারী।

বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হলেও দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় চিকিৎসা ব্যবস্থা এখনো ভঙ্গুর, শহরগুলোতে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসম্বলিত হাসপাতাল থাকলেও গ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো নয়, এটা প্রমাণ হয়ে যায় সরকারি দলের লোকজন কিংবা বিত্তশালীরা সামান্য অসুখেই বিদেশ গমন করেন, সেটা দেখে। সেই সাথে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকাও একটা বড় কারণ। দেশ স্বাধীন হওয়ার বহু পূর্ব থেকেই এদেশের বহু মানুষ বিভিন্ন ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। পূর্বে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় যে রোগগুলো এখন ছোট ও শতভাগ নিরাময়যোগ্য রোগ হিসেবে বিবেচিত হয়, সেসব রোগেও বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সম্ভবত ১৯৫০ সালের আগে আমার নানার মা ও বোন কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে, সেই সময়ে সারা দেশেই অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয় কলেরায়। ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৬২ সালের মধ্যেও হাজার হাজার লোকের মৃত্যু হয় কলেরায়। সে সময়ে যোগাযোগ কিংবা চিকিৎসা ব্যবস্থা ততটা ভালো না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই রোগ নির্ণয়ের আগেই বহু মানুষের মৃত্যু ঘটতো। সময়ের বিবর্তনে যোগাযোগ ব্যবস্থা কিংবা চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও হঠাৎ ছড়ানো ভাইরাসজনিত রোগ মোকাবেলায় সরকার দ্রæত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। পরিস্থিতি এখনো জটিল নয় বলেই গা ছাড়া ভাব দেখিয়েছে দায়িত্ববানরা। যেখানে সমস্যা শুরুর পূর্বেই পূর্ণ সতর্কতা দরকার, সেখানে সমস্যা বাড়লে পদক্ষেপ নেবো, এমন নীতি গ্রহণ করা অনুচিত।

নির্ভরযোগ্য তথ্য মতে, ম্যালেরিয়া, গুটিবসন্ত, য²া, প্লেগ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, কলেরা, এইডস, ইবোলো-সহ অসংখ্য ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে পৃথিবীতে। তার মধ্যে দেশ স্বাধীনের পূর্বে বাংলাদেশ অংশে বসন্ত ও কলেরা রোগে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটলেও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এইডস, কলেরা, ইবোলা-সহ বহু রোগে বহু দেশের কোটি কোটি মানুষের মৃত্যু ঘটলেও বাংলাদেশে ডেঙ্গু ব্যতীত অন্যান্য ভাইরাসজনিত রোগে বেশি মানুষ আক্রান্ত বা মৃত্যু বরণ করেনি। এসব ভাইরাস প্রভাব বিস্তারের আগেই অন্যান্য দেশ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে রোগের বিস্তার রোধ করলেও বাংলাদেশে গা ছাড়া ভাব দেখা গেছে দায়িত্ববান থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। সরকারই যেখানে সমস্যা প্রকটের পূর্বে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে না, সেখানে সাধারণ মানুষের তো কথাই উঠে না।

সর্বশেষ ২০১৩ সালে মধ্য আফ্রিকায় মহামারী আকার ধারণ করে ইবোলা ভাইরাস। অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছিল ২০১৫ সাল পর্যন্ত। এখনো ইবোলা আক্রান্ত হচ্ছে বহু মানুষ। ২০১৩-২০১৪ সালে বাংলাদেশেও সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছিল। বাংলাদেশে ইবোলা হানা দিতে পারেনি, সরকার বলেছে সতর্ক ছিলো বলেই নিরাপদ ছিলো বাংলাদেশ, আর জনগণ বলে আল্লাহই রক্ষা করেছে। সম্প্রতি মহামারী আকার ধারণ করেছে চীন থেকে ছড়ানো করোনা ভাইরাস। চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানো এ ভাইরাসটি ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ দেড়শ’র বেশি দেশে হানা দিয়েছে। চীনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ইতালি। সারাবিশ্বে করোনা ছড়িয়ে পড়ায় করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও)। বাংলাদেশেও অন্তত ১০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে, যারা চিকিৎসাধীন আছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ মন্ত্রীরা বলছেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। সরকার সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করেছে, প্রয়োজনীয় সব করছে। অথচ বেসরকারি মিডিয়াসহ একাধিক মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সরকারের প্রস্তুতি করোনা মোকাবেলার জন্য যথেষ্ট নয়।
লেখক: শিক্ষার্থী, ডিপ্লোমা ইন জার্নালিজম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব জার্নালিজম অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া

 

 



 

Show all comments
  • ফারুক হোসেন ফারুক ২০ মার্চ, ২০২০, ১:৩৭ এএম says : 0
    আল্লাহ শুরু থেকে শেষ, সুখে দুখে,, সবসময়ই আমাদের ভরসা। কারো দৃষ্টিতে আমি ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে মুর্খ হলেও সেটাই আমার আনন্দ,আমার গর্ব, যে আমি ধর্মে বিশ্বাসী, ধার্মিক তবে ধর্মান্ধ না, আলহামদুলিল্লাহ!!
    Total Reply(0) Reply
  • Titu Chowdhury ২০ মার্চ, ২০২০, ১:৩৮ এএম says : 0
    শেষ না আল্লাহই ভরসা।
    Total Reply(0) Reply
  • Mahima Ahmed ২০ মার্চ, ২০২০, ২:৪৯ এএম says : 0
    Allah Subhanu ta'ala shokol ke hefajot korun...Ameen.
    Total Reply(0) Reply
  • Rovel Rovel ২০ মার্চ, ২০২০, ২:৫০ এএম says : 0
    আল্লাহ সকলকে হেদায়েত ও হেফাজত দান করুন
    Total Reply(0) Reply
  • Javid Mansur ২০ মার্চ, ২০২০, ২:৫০ এএম says : 0
    May Allah bless everyone. Ameen
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ২০ মার্চ, ২০২০, ৫:৪৩ পিএম says : 0
    Government is busy with celebration-- they think they have the power so coronavirus will be afraid of them....
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ২০ মার্চ, ২০২০, ৭:০৯ পিএম says : 0
    আল্লাহ পাক আমাদের সকল ভরসা।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ২০ মার্চ, ২০২০, ৭:০৯ পিএম says : 0
    আল্লাহ পাক আমাদের সকল ভরসা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আল্লাহ

৩১ জুলাই, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন