পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রায় ১ হাজার ৩শ’ কোটি টাকার সম্পূর্ণ দেশিয় তহবিলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে পদ্মা ও কির্তনখোলা নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ দ্রুততার সাথে এগিয়ে চলছে। খরস্রোতা এ দুটি নদীর ভাঙনে বরিশাল ও শরীয়তপুরের বিশাল জনপদ বিলীন হয়ে গেছে ইতোপূর্বে। কয়েক হাজার কোটি টাকার সরকারি-বেসরকারি সম্পদ নদীগর্ভে বিলীন হাবার পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে অন্তত ২৫ হাজার পরিবার।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার বিশাল এলাকাকে পদ্মার ভাঙন থেকে রক্ষায় ২০১৭ সালের শেষভাগে একনেক প্রায় ১২শ’ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ একটি প্রকল্প অনুমোদন করে। অপরদিকে বরিশাল মহানগরীর বেলতলা খেয়াঘাট থেকে সদর উপজেলার চর বাড়ীয়া এলাকার বিস্তির্ণ জনপদকে কির্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষায় ২০১৮ সালের প্রথম ভাগে প্রায় সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকার অপর একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রকল্প দুটি অনুমোদনের সময় সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তা নৌবাহিনীর মাধ্যমে ডিপিএম পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া হয়।
কিন্তু এরপরে নানা জটিলতা আর কালক্ষেপণে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যায়। শরীয়তপুরের নড়িয়া-জাজিরা প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের ১১ মাস পর ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পেস করার পরে অনুমোদন লাভ করে। ইতোমধ্যে ওই এলাকার বিশাল জনপদ পদ্মার করাল গ্রাসে পতিত হয়। যা ছিল দেশের ইতিহাসে এ যাবৎকালের সর্বগ্রাসী ও ভয়াবহ নদীভাঙন। এরপরেই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়েচড়ে বসে। গত বছরের ১৪ জানুয়ারি খুলনা শিপইয়ার্ডের সাথে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সম্পাদিত ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকার চুক্তি অনুযায়ী খুলনা শিপইয়ার্ড তার নিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দ্রুত কাজ শুরু করে। ফলে গত বছর বর্ষা মৌসুমে নড়িয়া-জাজিরা এলাকায় পদ্মার ভাঙনের তীব্রতা হ্রাস করা সম্ভব হয়। চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছরের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শরীয়তপুরের ভাঙন রোধ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
ইতোমধ্যে প্রকল্প এলাকায় ৪১ লাখ জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের লক্ষ্য অতিক্রম করে ৪২ লাখেরও বেশি ডাম্পিং সম্পন্ন হয়েছে। বিভিন্ন মাপের ৩২ লাখ সিসি ব্লক ডাম্পিংয়ের স্থলে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ ব্লক তৈরি সম্পন্ন করে সাড়ে ৩ লাখ ব্লক জিও ব্যাগের ওপর সাজানো (প্লেসমেন্ট) সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকার বিপরীতে জেগে ওঠা চরসমূহ নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের মডেল স্ট্যাডি অনুযায়ী পুনর্বিন্যাস করতে প্রায় ১ কোটি ৫৪ লাখ ঘন মিটার পলি অপসারণ করতে হচ্ছে। যার মধ্যে খুলনা শিপইয়ার্ড ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ লাখ ঘন মিটার পলি অপসারণ সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সাইজের সাকসন কাটারের ৪টি ড্রেজার বর্তমান নড়িয়া ও জাজিরাতে পলি অপসারণ করছে।
অপরদিকে বরিশালে কির্তনখোলার ভাঙন রোধে ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে ২০৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন চুক্তি করে খুলনা শিপইয়ার্ড। প্রকল্পটির আওতায় ৪ লাখ ৭৫ হাজার জিও ব্যাগের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় সোয়া ৪ লাখ ব্যাগ ডাম্পিং সম্পন্ন হয়েছে। এসব জিও ব্যাগের ওপরে ১২ লাখ ৯২ হাজার বিভিন্ন সাইজের সিসি ব্লক প্লেসমেন্ট করার কথা। ইতোমধ্যে ৪ লাখ ব্লক তৈরি করে দেড় লাখ ব্লক প্লেসমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে ভাঙন কবলিত এলাকার বিপরীতে জেগে ওঠা চরসমূহ পুনর্বিন্যাস করে নদীর প্রবাহ সোজা করতে প্রায় ৪১ লাখ ঘন মিটার পলি অপসারণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে কির্তনখোলা নদীর মূল প্রবাহকে বাঁধাগ্রস্থ করে ভাঙন তরান্বিতকারী চরসমূহের প্রায় ২৭ লাখ ঘন মিটার পলি অপসারণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে দিনরাত বরিশালের ভাঙন কবলিত এলাকায় প্রতিরক্ষা কাজ চললেও আগামী এপ্রিলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে খুলনা শিপইয়ার্ডের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা জানান, শরীয়তপুর ও বরিশালের দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নেই আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি। তবে শরীয়তপুরের প্রকল্পটি আগামী বছর এপ্রিলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার পাশাপাশি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বরিশালের কির্তনখোলার ভাঙন রোধ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কর্তৃপক্ষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।