নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টেস্ট সিরিজ হয়ে ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রত্যাশিত সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও ধরা দিয়েছে অনায়াস জয়। এবার শেষ ভালো করার অপেক্ষা। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিও জিতে নতুন দুটি স্বাদ পেল বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো কোনো দলের বিপক্ষে এক দফায় তিন সংস্করণেই জিতেছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি, এক সিরিজে তিন সংস্করণ মিলিয়ে সব ম্যাচে জয়ও ধরা দিল প্রথমবার। প্রতিপক্ষ যদিও তুলনামূলক দুর্বল, তারপরও মাইলফলক বলে কথা!
গতকাল সফরের শেষ ম্যাচ ও সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে বোলিং করা স্বাগতিকরা জিম্বাবুয়েকে আটকে দেয় ১১৯ রানেই। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২৫ বল আর ৯ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে প্রথম ত্রিমুকুটের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
এক দলের বিপক্ষে তিন সংস্করণেই জয়ের সবশেষ সুযোগ বাংলাদেশের সামনে এসেছিল ২০১৮ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ করার পর ওয়ানডে সিরিজে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিবিয়ানরা জিতে যায় ২-১ ব্যবধানে। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়েকে টেস্টে ৩-০তে হারানোর পর ওয়ানডেতে ৫-০ তে জিতেছিল বাংলাদেশ। সেবার ছিল না টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
এবার অবশ্য টেস্টে কোনো সিরিজ ছিল না। কেবল একটি ম্যাচই ছিল, মিরপুরে যে টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছে ইনিংস ব্যবধানে। এরপর সিলেটে ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচেই বাংলাদেশ ছাড়িয়েছে তিনশ, রানের রেকর্ড গড়েছে ও ছুঁয়েছে প্রতি ম্যাচেই। দ্বিতীয় ওয়ানডে ছাড়া অন্য দুই ম্যাচেই জয় ধরা দিয়েছে দাপটেই। আর হোম অব ক্রিকেটে প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও সেই দাপট ধরে রেখে বড় জয় তুলে নেয় সাকিবহীন বাংলাদেশ।
টস জিতে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ফিল্ডিংয়ের নেওয়ার সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করেছেন বোলাররা। আগে ব্যাট করেও তারা এমন বড় কোনো সংগ্রহ গড়তে পারেনি। ৭ উইকেটে ১১৯ রানেই থেমেছে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। সিরিজে রানখরার মধ্যে থাকা ব্রেন্ডন টেলরের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৮ বলে ৫৯ রানের ইনিংস। ৬ চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটাই সর্বনিম্ন স্কোর জিম্বাবুয়ের। অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ এসেছিলেন চতুর্থ ওভারে। ৩ রান দিয়ে শুরুটা করেছিলেন ভালোই। তার আগেই অবশ্য জিম্বাবুয়ে ওপেনার তিনাশে কামুনহুকামুয়েকে তুলে নেন আল-আমিন। পাওয়ার প্লেতে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের আটকে রেখেছিলেন বোলাররা। কিন্তু ১২ থেকে ১৭তম ওভারের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে সফরকারীরা। এর মধ্যে নিজের প্রথম ওভারে প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছেন আফিফ। আরভিনকে (২৯) ক্যাচে পরিণত করেন সৌম্যর। টেলর এক প্রান্ত ধরে রাখলেও অধিনায়ক শন উইলিয়ামস-সিকান্দার রাজারা কেউ টিকতে পারেননি। সিকান্দার নিজের দ্বিতীয় বলে সৌম্যর হাতে ‘জীবন’ পেলেও আউট হয়েছেন মাত্র ১২ রান করে। তার সেøায়ার বুঝতে না পেরে ক্যাচ দেন সিকান্দার।
১১ থেকে ১৫তম ওভারে জিম্বাবুয়ের রান তোলার গতি তুলনাম‚লক কমেছে। ১৫তম ওভার শেষে তাদের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৮৫। অর্থাৎ ওভারপ্রতি গড়ে ছয়ের নিচে নেমে আসে রান রেট। শেষ ৫ ওভারে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। শেষ দিকে অবশ্য উদ্ভাবনী কিছু শট খেলার চেষ্টা করেছেন টেলর ও মুম্বা। শেষ ৩০ বলে ৩৪ রান তোলার বিনিময়ে ৪ উইকেট হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে।
অভিষিক্ত হাসান উইকেট না পেলেও বেশ ভালো বাউন্স আদায় করে নিয়েছেন উইকেট থেকে। ৪ ওভারে ২৫ রান দেন তিনি। তবে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সেরা বোলার মোস্তাফিজুর রহমান ও আল–আমিন। ২৫ রানে ২ উইকেট নেন মুস্তাফিজ। ২২ রানে ২ উইকেট আল-আমিনের। ১টি করে উইকেট মেহেদী হাসান, আফিফ ও সাইফউদ্দিনের।
রান তাড়ায় কোন সম্যাই হয়নি। লিটন দাস যে ছিলেন। তার পার্টনার নাঈম ৩৩ রানে ফিরে গেলেও। ব্যাটে বসন্ত চলছে লিটন দাসের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দুই সেঞ্চুরির পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে করেছিলেন হাফসেঞ্চুরি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম দেখলো আরেকটি লিটন-ম্যাজিক। ডানহাতি ওপেনার পেয়েছেন কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে টানা দ্বিতীয় ফিফটি। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৩৯ বলে খেলেছিলেন ঝড়ো ৫৯ রানের ইনিংস। আর গতকাল টানা দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি প‚রণ করতে তার লেগেছে ৩৫ বল, মেরেছেন ৭ বাউন্ডারি। শেষপর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৬০ রানে।
স্কোর কার্ড
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে, ২য় টি-২০
টস : বাংলাদেশ (বোলিং), মিরপুর
জিম্বাবুয়ে ইনিংস রান বল ৪ ৬
কামুনহুকাম্বে ক মুশফিক ব আল-আমিন ১০ ১০ ২ ০
টেলর অপরাজিত ৫৯ ৪৮ ৬ ১
অরভিন ক সৌম্য ব আফিফ ২৯ ৩৩ ৩ ০
উইলিয়ামস স্ট্যাম্প. ব মেহেদী ৩ ৮ ০ ০
রাজা ক আল-আমিন ব সাইফউদ্দিন ১২ ১০ ২ ০
মুতুম্বামি ক সৌম্য ব আল-আমিন ১ ২ ০ ০
মুতোম্বজি ক নাঈম ব মুস্তাফিজ ৩ ৭ ০ ০
মাধেভেরে ক নাঈম ব মুস্তাফিজ ০ ১ ০ ০
মুম্বা অপরাজিত ১ ১ ০ ০
অতিরিক্ত (লেবা ১) ১
মোট (৭ উইকেট, ২০ ওভারে) ১১৯
উইকেট পতন : ১-১২ (কামুনহুকাম্বে), ২-৬৯ (অরভিন), ৩-৭৬ (উইলিয়ামস), ৪-৯৬ (রাজা), ৫-৯৭ (মুতুম্বামি), ৬-১৮ (মুতোম্বজি), ৭-১১৩ (মাধেভেরে)।
বোলিং : মুস্তাফিজ ৪-০-২৫-২, সাইফউদ্দিন ৪-০-৩০-১, আল-আমিন ৪-০-২২-২, হাসান ৪-০-২৫-০, মেহেদী ৩-০-১৪-১, আফিফ ১-০-২-১।
বাংলাদেশ ইনিংস রান বল ৪ ৬
লিটন অপরাজিত ৬০ ৪৪ ৮ ০
নাঈম ক কুমুনহুকাম্বে ব এমপফু ৩৩ ৩৪ ৫ ০
সৌম্য অপরাজিত ২০ ১৬ ০ ২
অতিরিক্ত (বা ১, লেবা ২, ও ৪) ৭
মোট (১ উইকেট, ১৫.৫ ওভারে) ১২০
উইকেট পতন : ১-৭৭ (নাঈম)
বোলিং : মাধেভেরে ৩-০-২০-০, এমপফু ৩.৫-০-২৭-১, মাম্বা ৩-০-২৬-০, তিশুমা ১-০-১০-০, উইলিয়ামস ৩-০-১৬-০, রাজা ২-০-১৮-০।
ফল : বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : লিটন দাস।
সিরিজ : দুই ম্যাচে ২-০তে জয়ী বাংলাদেশ।
ম্যান অব দ্য সিরিজ : লিটন দাস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।