পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের নিরাপত্তায় হোটেল রেডিসনের চারপাশে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ চলাকালে হোটেল থেকে স্টেডিয়াম ও সেখান থেকে আবার হোটেলে যাতায়াতের সময় ভিভিআইপি নিরাপত্তা পাবেন দুই দলের ক্রিকেটারসহ অন্য সদস্যরা। গতকাল শনিবার বিকালে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আসন্ন সিরিজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনকালে এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) আছাদুজ্জামান মিয়া।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ভিভিআইপিদের যে মর্যাদায় আনা-নেওয়া করা হয়, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া দল তেমন নিরাপত্তাই পাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের সম্মান ও ভাবমর্যাদা সবার আগে। খেলোয়াড়রা রেডিসন হোটেল থেকে মিরপুর স্টেডিয়ামে আসার সময় তাদেরকে পুরোটা পথে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। মোটরসাইকেলে যুক্ত থাকবে পুলিশ ও র্যাবের চৌকস সদস্যরা। থাকবে ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স। গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ছাদে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা বিসিবির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি। দেশের স্বার্থে খেলাকে উৎসবমুখর করতে সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্টেডিয়াম, রাস্তা ও হোটেল, এই তিনভাবে নিরাপত্তা সাজিয়েছি আমরা। সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে পুরো স্টেডিয়াম চত্বর। দক্ষ অফিসাররা এটি পর্যবেক্ষণ করবেন। যখন যেখানে যে নির্দেশনা প্রয়োজন হবে সেখানে সম্পৃক্ত হবেন তারা।’
জানা গেছে, মাঠ, ফটক ও গ্যালারিতে থাকবে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্টেডিয়ামে আন্তঃবেস্টনি ও বহির্বেস্টনী থাকবে। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত খেলোয়াড়রা যাতায়াতের সময় সড়কের দুই পাশে পুলিশের লাইনিং থাকবে। একইসঙ্গে এই এলাকায় সড়কে ভাসমান দোকান বন্ধ ও স্থায়ী দোকানগুলোর শাটার নামানো থাকবে।
হোটেলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ‘রেডিসন ব্ল ওয়াাটার গার্ডেন হোটেলে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। চারপাশ লাইটিংসহ আনা হয়েছে সিসিটিভির আওতায়। বসানো আছে আর্চওয়ে, লাগেজ স্ক্যানার, ভিকেল স্ক্যানার। এগুলোর মধ্য দিয়ে প্রত্যেককে চেক করে নিয়ে আসা হবে। কোনও ধরনের দর্শনার্থীর প্রবেশের অনুমতি থাকবে না। এমনকি কোনও গণমাধ্যম অনিয়মিতভাবে কোনও খেলোয়াড় বা কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নিতে পারবে না। এক্ষেত্রে বিসিবির যথাযথ অনুমতি নিতে হবে।
জাল টিকিট নিয়ে প্রবেশ ঠেকাতে ম্যানুয়াল ও মেশিনে তল্লাশি করা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। তিনি জানান, সবাইকে আর্চওয়ে ও ম্যানুয়েল চেকিংয়ের মধ্য দিয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে হবে। ধারালো চাকু, কাঁচি, ব্যাগ, দাহ্য পদার্থ, দিয়াশলাই, ট্রলি ব্যাগ, ব্যানিটি ব্যাগ, পানির বোতল না নিয়ে স্টেডিয়ামে আসার জন্য অনুরোধ জানানো হয় তার পক্ষ থেকে।
একই সঙ্গে গ্যালারিতে সবাইকে নির্ধারিত আসনে বসেই খেলা দেখার আহ্বান জানিয়েছেন আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য সময় দর্শকরা গ্যালারিতে নির্ধারিত আসনে বসেন না। এবার কড়াকড়ি থাকবে। প্রত্যেককে নিজ নিজ আসনে বসতে হবে। এ ব্যাপারে জোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা কোনও হুমকির কারণে নয় বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘এটা চলমান নিরাপত্তার অংশ। যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন, দেশের ভালো ও গণতন্ত্র চায় না এই দুষ্টুচক্র নানান অপচেষ্টা করতে পারে। এটা মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। যেখানে যত প্রয়োজন হবে ততসংখ্যক ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। ডাইভারশান কোনও কোনও ক্ষেত্রে থাকবে। সাময়িক সময়ের জন্য ডাইভারশান দেওয়া হবে।
আগামী ২৭ থেকে ৩১ আগস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। পাঁচ দিনের এই খেলা হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ৪ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হবে দুই দলের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট।
কমিশনার আরো বলেন,অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার জন্য হোটেল রেডিসনের চারপাশে সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সর্বদা প্রস্তত থাকবে পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স টহল।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, অস্ট্রেলিয়া সিরিজে কোনো হুমকির কারণ নেই। ১৫ আগস্টে যারা নাশকতার অপচেষ্টা করেছিল, আমাদের তৎপরতার কারণে তা নস্যাৎ হয়ে গেছে। একটি দুষ্টচক্র যারা বাংলাদেশের ভালো চায় না, যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্র চায় না, তারাই নানা রকম অপচেষ্টা করতে পারে এটি মাথায় রেখেই আমাদের পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে।
কমিশনার বলেন,২৭ থেকে ৩১ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ার দল ঢাকায় টেস্ট খেলবে। এ জন্য পুলিশ-বিসিবি, ডিবি (মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা) ও অন্যান্য বাহিনী মিলে নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মানুষ নির্বিঘেœ যাতে খেলা দেখতে পারে, সে জন্য তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুরো স্টেডিয়াম এলাকা সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, খেলা দেখতে আসা দর্শকদের গেটে গেটে তল্লাশি করা হবে। চাকু-কাঁচি, ম্যাচ, ব্যাগ, ট্রলিব্যাগ, চায়ের ফ্ল্যাক্স নিয়ে স্টেডিয়ামে ভেতরে প্রবেশ করা যাবে না।
এদিকে গতকাল দুপুর ১২টা থেকে বিসিবি কার্যালয়ের আশেপাশে পুলিশের বিশেষ টিম সোয়াত সদস্যদের সর্তকতামূলক অবস্থানে দেখা যায়। গত বৃহস্পতিবার শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীর মহড়া হয়েছে। কুইক রেস্কিউ ফোর্স কমান্ডার মেজর রোকুনুজ্জামানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একদল প্যারা কমান্ডো ওই মহড়ায় অংশ নিয়েছিলেন।
নজরদারি না থাকায় সোশ্যাল মিডিয়াভিত্তিক অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে
এদিকে অপর এক অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামন মিয়া বলেছেন, প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারি না থাকার কারণে প্রায় প্রতিদিনই সোশ্যাল মিডিয়াভিত্তিক নানাবিধ অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াভিত্তিক কিশোর অপরাধের বেশি শিকার হচ্ছে মূলত নারী ও কিশোরীরা।
গতকাল শনিবার রাজধানীর তেজগাঁও এফডিসিতে এক অনুষ্টানে পুলিশ কমিশনার এ কথা বলেন।
তিনি বলেন,অতি দ্রুত তথ্য আদান প্রদান, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সর্বক্ষেত্রে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া খুবই জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ এক মাধ্যম। কিন্তু ফেসবুক, ইউটিউব, ভাইবার, হোয়াটস আপ, ইমোসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার কিশোর-তরুণদের অবাধ ব্যবহার ও আসক্তির কারণে অপরাধ প্রবণতাসহ নানা ধরণের সামাজিক ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার বলেন, বিতর্ক বিকাশের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মেধার বিকাশ ঘটে। সামাজিক, নৈতিক, ধর্মীয় ও পারিবারিক অনুশাসন না থাকায় কিশোরা অপরাধ করছে। সামাজিক সচেতনতা ও নৈতিক অবক্ষয় পুননির্মান করে কিশোর অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ সময় তিনি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ও কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সোশ্যাল মিডিয়ার অবাধ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি, ব্র্যাক এবং এটিএন বাংলা এর যৌথ আয়োজনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা গতকাল শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওস্থ এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়াম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
প্রতিযোগিতায় সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লার শহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় পক্ষে ও শেরপুর জেলার নকলার নয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা বিপক্ষে অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় বিপক্ষ দল নয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় বিজয় লাভ করে। শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে বিজয়ী দলের স্বর্ণালি আক্তার বৃষ্টি। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য ২০০৭ সাল থেকে ব্র্যাক, এটিএন বাংলা এবং ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি বিতর্ক বিকাশ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান, ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচীর প্রধান প্রফুল্ল চন্দ্র বর্মন, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র উপদেষ্টা অধ্যাপক্ষ আবু মোহাম্মদ রইস, পরিচালক জাহিদ রহমান, ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচীর ম্যানেজার মো. মোফাখকারুল ইসলাম, ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশনের মহাসচিব মুস্তফিজুর রহমান খান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।