মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তানে নতুন করে রাজনৈতিক সঙ্ঘাত শুরু হওয়ার আশঙ্কায় আগভাগেই মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষর হওয়া চুক্তির আওতায় সোমবার থেকে এসব সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। আফগানিস্তানে মোতায়েন মার্কিন সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল সনি লেগেট এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একই দিন আফগানিস্তানে দুই প্রতিদ্ব›দ্বী রাজনৈতিক নেতা আশরাফ ঘানি এবং আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ দুজনই প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। আশরাফ ঘানি ও আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার সময় দেশের তৃতীয় পক্ষ তাদের শক্তিশালী অবস্থান জানান দিয়েছে। আশরাফ ঘানি যখন প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাসাদে শপথ নেন ঠিক সেই সময় তালবানরা ৪টি শক্তিশালী রকেট ছোঁড়ে। একই সঙ্গে শোনা যায় গুলির শব্দও।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরে বলেছে যে, প্রাসাদের নিকটে বিলাসবহুল সেরেনা হোটেলের দেয়ালসহ শহর কাবুলে চারটি রকেট আক্রমণ করেছে। এতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা কিছুটা আহত হন। ইসলামিক স্টেট গ্রুপটি বোমা বিস্ফোরণগুলির দাবি করেছে। ২০১৮ সালের আগস্টে আশরাফ ঘানির ভাষণকে লক্ষ্য করে একটি অনুরূপ ঘটনা ঘটেছিল যাতে ছয়জন বেসামরিক লোক আহত হয়েছিল।
বিস্ফোরণের শব্দে শুয়ে-বসে যারা কাঁদছিলেন তাদের উদ্দেশে আশরাফ ঘানি বলেন, ‘আমার শার্টে কেবল বুলেটপ্রুফ ভেস্ট নেই, দেশের মানুষের সেবা করতে গিয়ে আমার মাথা ত্যাগ করতে হলেও আমি এখানেই থাকব’। এএফপি’র এক প্রতিবেদক দেখলেন যে, জনাব ঘানি পেডিয়াম ছাড়তে অস্বীকার করার পর নিজ নিজ আসনে ফিরে এসে অনেকেই উল্লাস ও করতালি দিয়ে উৎসাহিত করেন।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জনাব ঘানি বলেন, এমন একটি ব্যবস্থায় পৌঁছানো গেছে যাতে তালিবান বন্দিদের মুক্তি দেয়া যায়। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্টের একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে মুক্তিদানের ঘোষণা দেয়া হতে পারে বলে জানানো হয়।
মার্কিন সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, আফগানিস্তানের রাজনৈতিক সঙ্কট আছে কি নেই, কাবুলে প্রেসিডেন্ট একজন নাকি দু’জন সেগুলো নিয়ে আমেরিকা সময় নষ্ট করবে না; বরং ১৩৫ দিনের মধ্যে সেনা সংখ্যা কমিয়ে ৮৬০০-তে নামিয়ে আনা হবে। স¤প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের মধ্যে কথিত শান্তি চুক্তিসই হয়। চুক্তি অনুসারে আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে ১৯ বছরের যুদ্ধের অবসান হবে। তবে আশরাফ ঘানি এবং আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর প্রেসিডেন্ট হিসেবে আলাদাভাবে শপথ নেয়া এবং তালেবানের সা¤প্রতিক হামলা বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ত্রিমুখী রাজনৈতিক সঙ্কটের বার্তা দিচ্ছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন।
এদিকে রাশিয়া বলেছে যে, আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা সরে আসতে শুরু করায় তালেবানদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের প্রত্যাশায় রয়েছে। মস্কোয় গত শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দূত জমির কাবুলভ বলেছেন, ‘আমরা কাবুলে যে কোনও নতুন প্রশাসনের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখতে চাই’। ‘তালেবানরা খুব ভাল করেই বুঝতে পারে যে, তারা যখন সরকারে যোগদান করবে তখন তাদের জাতীয় স্বার্থের জন্য কাজ করতে হবে এবং এজন্য তাদের রাশিয়ার সাথে সুসম্পর্ক দরকার হবে’।
রাশিয়া আফগানিস্তানের প্রায় অর্ধেক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী বা প্রতিদ্ব›দ্বী তালেবানদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এরা জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি সম্ভাব্য মিত্র হতে পারে। ইতিহাসের দীর্ঘতম সংঘাতের অবসান ঘটাতে আমেরিকার আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার ক্রেমলিনকে দেশটিতে তার অবস্থানে ফিরে আসার সুযোগ করে দিচ্ছে। ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন অবমাননাকর প্রত্যাহার শেষ করার আগে এক দশক দীর্ঘ যুদ্ধ করেছিল এই মাটিতে। যুদ্ধ প্রতিদ্ব›দ্বীরাও মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিযোগিতায় রয়েছে যেখানে রাশিয়া তার সোভিয়েত-যুগের প্রভাব পুনরুদ্ধার করতে চাইছে।
ওদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ঘানিকে অভিনন্দন না জানিয়ে আবদুল্লাহর প্যারালাল সরকার গঠনের নিন্দা করেছেন এবং তালেবানদের সাথে শান্তির স্বার্থে কাবুল নেতৃত্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
পম্পেও আবদুল্লাহর নাম উল্লেখ না করে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা সমান্তরাল সরকার প্রতিষ্ঠার যে কোনও পদক্ষেপের এবং রাজনৈতিক মতপার্থক্য নিরসনে যে কোন শক্তি প্রয়োগের তীব্র বিরোধিতা করছি’।
এর আগে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি সোমবার বলেন, তালেবান বন্দিদের মুক্তি দেয়ার একটি ব্যবস্থায় পৌঁছানো গেছে এবং মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি প্রেসিডেন্টের ডিক্রি জারি করা হতে পারে। তবে গতকাল রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাসাদ থেকে কোন ডিক্রি জারির খবর পাওয়া যায়নি। তালিবানরা সরকারের সাথে শান্তি আলোচনায় বসার জন্য তাদের ৫ হাজার বন্দিকে মুক্তিদানের শর্তারোপ করেছিল। নইলে তারা আফগান সরকারের সাথে কোন ধরনের আলোচনায় বসার কথা নাকচ করে দেয়। সূত্র : রয়টার্স, এএফপি ও ব্লমবার্গ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।