Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের আগে আফগানিস্তানে নতুন বিশেষ অপারেশন নেটওয়ার্ক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০২০, ৮:৩৮ পিএম

আফগানিস্তানে একটি নতুন স্পেশাল অপারেশন্স বাহিনীর নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তালেবানের সাথে করা শান্তিচুক্তি যদি ভেঙে পড়ে, তাহলে এটিই দেশটিতে মোতায়েন অপেক্ষাকৃত ছোট মার্কিন সামরিক মিশনের মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করবে। সামরিক কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

নেটওয়ার্কটি প্রতিষ্ঠা করেছেন আফগানিস্তানে শীর্ষ মার্কিন কমান্ডার জেনারেল অস্টিন মিলার। তালেবানের সাথে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের আলোচনার প্রেক্ষাপটে কোয়ালিশন ও আফগান বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় জোরদার করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। হোয়াটসঅ্যাপভিত্তিক তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে মার্কিন সৈন্য হ্রাস করেও সাফল্য পাওয়া সম্ভব বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন।

এক সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা বলেন, বাহিনীটি নীতিগত যেকোনো পরিবর্তন প্রতিরোধ করতে পারবে। তবে তিনি বিষয়টি স্পর্শকাতর বিবেচনা করে নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। তিন জানান, বাহিনীটি কোয়ালিশন পার্টনারদের সাথে কাজ করবে।

নেটওয়ার্কটির কথা আগে কখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সৈন্য হ্রাস করা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারবে- যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান নাগরিকদের এমন আশ্বাস প্রদান করার জন্যই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

তালেবানের সাথে ২৯ ফেব্রুয়ারি যে চুক্তি হয়েছে, তার আলোকে ১৩৫ দিনের মধ্যে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ১২ হাজার থেকে কমিয়ে ৮,৬০০ করা হবে। নেটওয়ার্কে কতজন সম্পৃক্ত থাকবে, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য দেননি মার্কিন কর্মকর্তারা। তবে ওই সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা বলেন, কয়েক হাজার মার্কিন সৈন্য কাজ করতে পারে, এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

তালেবানের সাথে এক বছরের বেশি সময় আলোচনার পর যে চুক্তি হয়েছে তাতে মার্কিন বাহিনীকে ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান ত্যাগ করতে হবে। তবে তালেবানকেও কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম দুটি বিষয় হলো যুদ্ধ অবসানের জন্য আফগান সরকারের সাথে আলোচনা করা, আফগানিস্তানের মাটি যাতে কোনো সন্ত্রাসী বাহিনীর ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হতে না পারে তা নিশ্চিত করা। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই সময়সূচি খুবই উচ্চাভিলাষী। তালেবান তাদের শর্ত পালন করবে না বলে তাদের সন্দেহ রয়েছে। তারা বলছেন, মার্কিন প্রত্যাহার শর্তসাপেক্ষ।

গত বুধবার অনিশ্চয়তা আরো বেড়ে যায় ৪৩টি তালেবান হামলা ও তাদেরকে টার্গেট করে পরিচালিত একটি মার্কিন বিমান হামলায়। হেলমন্দ প্রদেশে ওই মার্কিন বিমান হামলাটি হয় সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হওয়ার ১১ দিন পর। তবে সেনাবহিনীর জেনারেল, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান মার্ক মিলে এসব হামলাকে বড় করে দেখতে চান না।

তালেবানের সাথে সন্ত্রাসদমন চুক্তিটি প্রকাশ করা হয়নি। তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পার বৃহস্পতিবার বলেছেন, চুক্তিটি সন্ত্রাসদমনের কাজে সাহায্য করবে। তালেবানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র তার সম্পর্ক কতটুকু পরিবর্তন করবে তা নিয়ে ভাবছে। তবে তারা ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে। লেগেট মঙ্গলবার টুইটবার্তায় বলেন, মার্কিন বাহিনী কোনার প্রদেশে সাম্প্রতিক সময়ে আইএসের ১৮ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র নতুন যে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে তার কেন্দ্রে রয়েছে কম্বাইন্ড সিচুয়েশনাল অ্যাওয়ারনেস রুম বা সিএসএআর। এটির অবস্থান কাবুলে। এতে আফগানিস্তান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। তারা তালেবান ও ইসলামি স্টেটের হামলার তথ্যও সংগ্রহ করে থাকে।

গত জুনে এই নেটওয়ার্ক প্রথম বড় ধরনের কাজে অংশ নেয়। রমজান মাসের পর তালেবান হামলার মুখে হোয়াটসঅ্যাপভিত্তিক নেটওয়ার্কটি বেশ ফলপ্রসূ বলে মনে হয়। সূত্র: এসএএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ