Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চুক্তির পরও হামলা চালাল তালেবান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২০, ৩:২৮ পিএম

শান্ত হয়ে আসতে শুরু করা আফগানিস্তান সোমবার আবারও এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে বিপর্যস্ত হল। এই বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৩ জন নিহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শান্তি চুক্তি সই করার মাত্র দু’দিন পরেই নিজেদের যোদ্ধাদের আফগান বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে তালেবানরা। এ হামলা তাদেরই পরিকল্পনায় ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আমেরিকার সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের অভিযান সাময়িক বন্ধ রেখেছিল তালেবান। কিন্তু রোববার দোহায় শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর তারা যে ফের সেই অভিযান শুরু করতে চলেছে, তা স্পষ্ট করে দিল তালিবান। তাদের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের কথায়, ‘হিংসা কমানোর প্রয়োজন এ বার ফুরিয়েছে, আমাদের অপারেশন আগের মতোই চলবে। মার্কিন-তালিবান চুক্তি অনুযায়ী আমাদের মুজাহিদিন বিদেশি সেনার উপর হামলা করবে না, তবে আফগান সেনার উপর আক্রমণ জারি থাকবে।’

এদিকে, আফগানিস্তানের পূর্ব খোস্ত প্রদেশের ফুটবল মাঠে সোমবার এক বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত আরও ১১ জন। সেখানকার পুলিশ প্রধান সৈয়দ আহমেদ বাবাজাই জানিয়েছেন, ফুটবল মাঠের পাশেই বিস্ফোরক ভর্তি একটি মোটরবাইক দাঁড় করানো ছিল। ম্যাচ চলাকালীন জোরালো বিস্ফোরণ ঘটে। কে বা কারা এই বিস্ফোরণ ঘটাল, তা স্পষ্ট নয়। এখনও পর্যন্ত কেউ বিস্ফোরণের দায় নেয়নি।

প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র তালিব খান মঙ্গল আফগান সংবাদমাধ্যমকে জানান, সোমবার পূর্ব খোস্তের নাদির শাহ কোট জেলার একটি ফুটবল মাঠে বিস্ফোরণ হয়েছে। আমেরিকার সঙ্গে শান্তিচুক্তি হওয়ার পর, দু-দিন না গড়াতেই এদিন তালেবানরা আফগান সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে পুনরায় অভিযান শুরুর কথা ঘোষণা করেছে। তার পরপরই এই বিস্ফোরণ। তবে, খেলার মাঠের এই বিস্ফোরণের সঙ্গে তালিবান যোগ আছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি দোহায় ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে সই করে আফগান তালিবানরা। চুক্তি অনুযায়ী, ধীরে ধীরে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়া হবে। এই চুক্তির সঙ্গেই একটা আশা তৈরি হয়, আফগানিস্তানে দীর্ঘ আঠারো বছর পর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান হবে। কিন্তু, মার্কিন সেনা ফিরে গেলেও, আফগানিস্তানে আদতে হিংসা বন্ধ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই গেল।

এ দিকে, এই শান্তিচুক্তি রক্ষার দায় আফগান রাজনীতিকদের উপর চাপিয়েছে পাকিস্তান। পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির বক্তব্য, আফগান রাজনীতিকরা শান্তির লক্ষ্যে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে পারেন কি না, দেখার সেটাই। আফগান প্রেসিডেন্ট শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর পরই জানিয়েছেন, তালেবান জঙ্গিদের মুক্তি দেয়ার শর্ত মানবেন না তিনি। সেই প্রসঙ্গে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘সবাই শান্তি চায়। আফগান নেতৃত্ব এখন কী করেন, সেটাই দেখার। তারা আফগানিস্তানের স্বার্থকে গুরুত্ব দেবেন, নাকি ব্যক্তিগত স্বার্থকে, সেটাই সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত।’

আমেরিকা-তালিবানের শান্তি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে চীনও। কিন্তু সেই সঙ্গে তাদের সতর্কবার্তা, নিয়ন্ত্রিত ও দায়িত্বসম্মতভাবে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য সরানো প্রয়োজন। যাতে আফগানিস্তানের সুরক্ষায় কোনও ফাঁক তৈরি না হয়, জঙ্গিরা যাতে পায়ের তলায় মাটি শক্ত করার সুযোগ না পায়। সূত্র: ডন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ