Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিদেশী নয়, কাবুল প্রশাসনের ওপর তালেবানের হামলার নির্দেশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২০, ১১:৫৩ এএম

শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের ঠিক দু’দিন পরেই আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করার জন্য নিজেদের যোদ্ধাদের নির্দেশ দিয়েছে তালেবানরা। সোমবার (২ মার্চ) তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, বন্দি থাকা পাঁচ হাজার তালেবান সদস্যের মুক্তি দেওয়া না হলে আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে না। রবিবার এসব বন্দিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানান আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। এরপরই সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা শুরুর ঘোষণা দিয়েছে তালেবান।
আফগান যুদ্ধ থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে সরিয়ে নিতে গত শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) তালেবানের সঙ্গে বহুল প্রতীক্ষিত শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ট্রাম্প প্রশাসন। কাতারের রাজধানী দোহায় উভয় পক্ষের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে বন্দিদের মুক্তির বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে।
তবে রবিবার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলেন, এই ধরনের মুক্তির বিষয়ে সম্মতি দেয়নি সরকার। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘পাঁচ হাজার বন্দি মুক্তির প্রতিশ্রæতি দেওয়া হয়নি। এটা আফগান জনগণের সঠিক এবং নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় এই এজেন্ডা আসতে পারে তবে পূর্বশর্ত হতে পারে না’।
আফগান সরকারের সঙ্গে আগে থেকেই আলোচনায় বসতে অস্বীকার করে আসছে তালেবান। সেকারণে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে তারা। ২০০১ সালে মার্কিন আগ্রাসনে তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে উৎখাত হলেও ২০১৮ সালের মধ্যে দেশটির দুই তৃতীয়াংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
সোমবার আফগান বাহিনীর ওপর হামলা শুরুর ঘোষণা দিয়ে তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, তারা কোনও বিদেশি সেনার ওপর হামলা চালাবে না। তিনি বলেন, ‘বন্দি মুক্তির আগে সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনায় বসা হবে না। মুজাহিদ বলেন, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ আলোচনার জন্য আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত, কিন্তু আমাদের পাঁচ হাজার বন্দির মুক্তির অপেক্ষা করছি। ধারণা করা হয় আফগানিস্তানে প্রায় দশ হাজার তালেবান সদস্য বন্দি রয়েছে।
এদিকে সোমবার আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে খোস্তে একটি ফুটবল মাঠে বিস্ফোরণ হয়। এতে নিহত হয়েছেন তিন ভাই। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এর দায় স্বীকার করে নি কেউ। এ খবর দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, তালেবানরা তাদের যোদ্ধাদেরকে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিরুদ্ধে হামলা শুরুর নির্দেশ দিয়েছে যে সময়ে, ঠিক সেই একই সময়ে ওই বিস্ফোরণ হয়। এতে দৃশ্যত আনুষ্ঠানিকভাবে তারা সহিংসতা কমিয়ে আনার যে ঘোষণা দিয়েছিল তা যেন শেষ হয়ে এসেছে। তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, সহিংসতা কমিয়ে আনা শেষ হয়ে গেছে। এখন থেকে আমাদের অপারেশন স্বাভাবিক গতিতে অব্যাহত থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী আমাদের মুজাহিদরা বিদেশী কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালাবে না। আমাদের অপারেশন অব্যাহত থাকবে কাবুল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তালেবানরা বার্তা সংস্থা এএফপিকে যে ডকুমেন্ট দিয়েছে তাতে অপারেশন শুরু করার জন্য নিজের যোদ্ধাদের কাছে নির্দেশনা বিলি করেছে তালেবানদের সামরিক কমিশন। এর অল্প পরেই আফগানিস্তানের একজন সেনা কমান্ডার বলেছেন, তালেবানরা বাদঘিস প্রদেশে সেনাবাহিনীর অবস্থানস্থলে হামলা করেছে। এতে কমপক্ষে একজন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ