Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তিচুক্তি, বিশ্বনেতাদের অভিনন্দন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০২০, ৩:০০ পিএম

দীর্ঘ ১৮ বছরের আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কাতারে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে এ নিয়ে আলোচনার পর শনিবার কাতারের রাজধানী দোহা’য় এই চুক্তি স্বাক্ষর করে উভয় পক্ষ। এরপরই বিশ্বনেতারা এই চুক্তিকে সাধুবাধ জানিয়েছেন।
আফগানিস্তানে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য একে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে আখ্যায়িত করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে এই চুক্তির প্রশংসা করেন।
অন্যদিকে তালেবানরা এই চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে। কাতারে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রাহমান আল থানি বলেছেন, তাদের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি স্বাক্ষর সম্ভব হয়েছে। সাধুবাদ জানিয়েছে সৌদি আরব, ন্যাটো, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
শনিবার স্বাক্ষরিত এই চুক্তিতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ চারটি পয়েন্ট। এর মধ্যে ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ন্যাটোর সেনাদের পর্যায়ক্রমে পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে। এর বিনিময়ে তালেবানদের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চাওয়া হয় যে, আফগানিস্তানের মাটি এমন কর্মকান্ডে ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকিতে পড়ে। ১০ই মার্চের মধ্যে আন্তঃআফগান সমঝোতা শুরু করতে হবে। শান্তিচুক্তি হতে হবে স্থায়ী এবং বিস্তৃত।
এই চুক্তির পর জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, আফগানিস্তানের টেকসই রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য দোহা এবং কাবুল গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ সময় তিনি আফগানিস্তানে সহিংসতা কমিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, এর ফলে সুবিধা ভোগ করবে সব আফগান নাগরিক। সবাই মিলে একটি সমঝোতা এবং বিস্তৃত শান্তি প্রক্রিয়ার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তিনি সব পক্ষকে উৎসাহিত করেন। অন্যদিকে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রাহমান আল থানি এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, আঞ্চলিক এবং বিশ্বের জন্য এই চুক্তি শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি অর্জনে অবদান রাখবে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তারা আশা করে, এই চুক্তি হবে বিস্তৃত এবং স্থায়ী। এতে আফগানিস্তানজুড়ে শান্তি আসবে।
ন্যাটো এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। ন্যাটো মিত্রদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি শান্তিতে যে অগ্রগতি হয়েছে তাতে সহিংসতা কমে আসবে এবং আফগানিস্তানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হবে। স্থায়ী শান্তির প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই চুক্তিকে বর্ণনা করেছেন ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে পুনরেকত্রীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হলো। তিনি টুইটারে লিখেছেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে স্বাক্ষরিত দোহা চুক্তিকে স্বাগত জানাই। এক দশকের বেশি সময় যে যুদ্ধ চলছে এবং তাতে আফগানিস্তানের মানুষের যে দুর্ভোগ তার ইতি ঘটিয়ে শান্তি ও পুনরেত্রীকরণের সূচনা হবে এর মাধ্যমে।
ওদিকে কাতারে তালেবানের রাজনৈতিক অফিসের প্রধান মোল্লা আবদুল গনি ব্রাদার বলেছেন, তারা চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। তার ভাষায়, আমি আফগানিস্তানের সব মানুষকে আহ্বান জানাবো শান্তি ও শান্তির জন্য সমঝোতায় সবাই সততার সঙ্গে একত্রিতভাবে কাজ করুন। এক বিবৃতিতে তালেবান বলেছে, তারা আফগানিস্তানে দখলদারীর অবসানে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এই চুক্তির ফলে আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সব সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার হবে। তারা আভ্যন্তরীণ বিষয়ে আর নাক গলাতে পারবে না। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এই চুক্তি স্থিতিশীলতা আনতে সহায়ক হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ