Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এপ্রিলেই করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনার প্রত্যাশা চীনের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:১২ পিএম

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মরণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস ডিজিজ বা কভিড-১৯ এপ্রিলের শেষদিকে চীনে নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করছে দেশটি। হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর চীনে গত কয়েকদিন ধরে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা কমে আসছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে চীনের স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আসার এ প্রত্যাশার কথা জানালেন। খবর স্ট্রেইট টাইমস ও এএফপি।

গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে উহানে নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। শুক্রবার পর্যন্ত সংক্রমিত হয়ে চীনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৮৮ জনে। এর মধ্যে শুক্রবার মারা গেছেন ৪৪ জন। আর নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২৭ জন। যাদের অধিকাংশই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। বেইজিং ও হুবেই কর্তৃপক্ষের কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের কারণে প্রদেশটিতে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা কমে আসছে।
চীনের শীর্ষ ভাইরাস বিশেষজ্ঞ জং নান শাহান মনে করেন, কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের পর উহানকে অন্যান্য শহর থেকে বিচ্ছিন্ন করাসহ চীন যেভাবে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে সেটি নজিরবিহীন। এর আগে এ মাসের শেষের দিকে নভেল করোনাভাইরাস নির্মূলের দিকে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন এ বিশেষজ্ঞ। যেটি এরই মধ্যে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে চীনে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা কমে আসতে থাকে। সর্বশেষ গত বুধবার ২৮ সংক্রমিত রোগীর মৃত্যুর তথ্য নিবন্ধন করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, যা প্রায় এক মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ।

চীনের ন্যাশনাল ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টার অ্যান্ড ফর রেসপিরেটরি ডিজিজের পরিচালক ডা. জং বলেন, এপ্রিলের মধ্যেই মরণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসবে। চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া গেলে মৃত ও সংক্রমিতের সংখ্যা আরো কমানো যেত। তবে এপ্রিলের মধ্যে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে স্থানীয় বিভাগকে আরো সহযোগিতার ওপর জোর দিতে হবে।
তবে চীনে নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা কমে এলেও বৈশ্বিক চিত্র ভিন্ন। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। এ তালিকায় শুক্রবার যুক্ত হয়েছে আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চলের দেশ নাইজেরিয়া। এসব দেশের মধ্যে সবচেয়ে হটস্পট তালিকায় রয়েছে ইরান, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়া। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ইরানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ জনে। এছাড়া চীনসহ বিশ্বব্যাপী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে। আর সংক্রমিত হয়েছেন ৮৩ হাজারের বেশি।
নাইজেরিয়া নভেল করোনাভাইরাস ছড়ানোর বিষয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার মধ্যে মিসর, আলজেরিয়ায় নভেল করোনাভাইরাস ছড়ালেও এ প্রথম সাব সাহারা অঞ্চলে ভাইরাসটির উপস্থিতি দেখা দিয়েছে। নাইজেরিয়ায় সংক্রমিত ওই ব্যক্তি একজন ইতালীয় নাগরিক। চলতি সপ্তাহেই তিনি দেশটিতে প্রবেশ করেন।
এদিকে অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর অবস্থায় থাকা আফ্রিকায় মরণঘাতী ভাইরাসটি ছড়ানোয় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে গভীর সম্পর্ক থাকা আফ্রিকা মহাদেশে ভাইরাস মোকাবেলা সক্ষমতা না থাকা, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদির অপর্যাপ্ততা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ডব্লিউএইচওর প্রধান টেড্রোস অ্যাডহ্যানম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ব এখন চরম এক মুহূর্তের মুখোমুখি রয়েছে। কোনো দেশ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হবে না, এমন ধারণা করা মারাত্মক ভুল হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ