পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
সিরিয়ায় রাশিয়া-সমর্থিত সরকারি বাহিনীর হামলায় দুই তুর্কি সেনা নিহত হওয়ার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী ব্যবস্থা প্যাট্রিয়ট চেয়েছে তুরস্ক। তুর্কি সামরিক বাহিনী বলেছে, বৃহস্পতিবার ইদলিব প্রদেশে তুর্কি বাহিনীর ওপর সিরিয়ান সরকারি বাহিনীর বিমান থেকে হামলা করা হয়েছে। এতে করে এক মাসে সিরিয়ান বাহিনীর হাতে নিহত তুর্কি সেনার সংখ্যা ১৫-এ পৌঁছেছে। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, সিরিয়ান বা রাশিয়ান বিমান হামলা থেকে সৈন্যদের রক্ষার্থে দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হাতয়ে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করতে চায় তুরস্ক। বর্তমান লড়াইয়ে তুরস্ককে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিলেও, তুরস্ক যে প্যাট্রিয়ট ধারের অনুরোধ করেছে, তাতে হয়তো যুক্তরাষ্ট্র সাড়া না-ও দিতে পারে। কেননা, রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনা নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে ওয়াশিংটনের অনেক বিবাদ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বারবার তুরস্ককে এস-৪০০ না কেনার অনুরোধ জানিয়েছে। দেশটির যুক্তি ছিল, তুরস্ক যেহেতু ন্যাটোর সদস্য, সেহেতু এস-৪০০ মোতায়েন করা হলে ন্যাটোর অনেক সামরিক গোপন তথ্য রাশিয়ানরা পেয়ে যাবে। তুরস্ক গত বছর ওই সতর্কতা অগ্রাহ্য করলে, যুক্তরাষ্ট্র এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান নির্মাণের আন্তর্জাতিক প্রকল্প থেকে তুরস্ককে বের করে দেয়। এছাড়া তুরস্কের কাছে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয়ের প্রস্তাবও প্রত্যাহার করে যুক্তরাষ্ট্র। অপরদিকে তুরস্ক ও সিরিয়ান বাহিনীর মধ্যে লড়াই মস্কোতেও অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তায়িইপ এরদোগান তার বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের জন্য পশ্চিমা শক্তিকে দায়ী করলে, দেশটির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক উষ্ণ হয়েছিল। কিন্তু সিরিয়ায় পরস্পরবিরোধী অবস্থান দুই দেশের সম্পর্কে ফের অস্বস্তি শুরু হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তুরস্কের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের মদত দেয়ার অভিযোগ এনেছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, জঙ্গিরা যখন হামলা চালায় তখন তুর্কি সামরিক বাহিনী গোলা নিক্ষেপ করে। এর ফলেই সিরিয়ান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা ব্যুহ সাময়িকভাবে ভাঙ্গতে সক্ষম হয় সন্ত্রাসীরা। এতে আরও বলা হয়, সিরিয়ান বাহিনীর সমর্থনে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। তবে রাশিয়ান হামলার লক্ষ্যবস্তু তুর্কি বাহিনী নাকি সিরিয়ান বিদ্রোহীরা ছিল, তা স্পষ্ট নয়। উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার পরিস্থিতির কারণে পশ্চিমের সঙ্গে ফের সম্পর্ক উন্নত করছে তুরস্ক। কেননা, সিরিয়া নয় শুধু, লিবিয়াতেও তুর্কি বাহিনীর প্রতিপক্ষ রাশিয়া সমর্থিত বাহিনী। তুরস্ক সিরিয়াতে আসাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহী বাহিনীর সমর্থক। লিবিয়ায় জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারকে সমরাস্ত্র ও যোদ্ধা দিয়ে সহায়তা করছে তুরস্ক। অন্যদিকে রাশিয়া বহু বছর ধরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের মিত্র। রয়টার্স, আনাদোলু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।