Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্বজয়ী আকবরকে রংপুরে গণসংবর্ধনা

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:৪৪ পিএম

বিশ্বকাপ জয়ী আকবরকে রংপুরে গণসংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। বোনের মৃত্যুর ১৯ দিনের মাথায় শোককে শক্তিতে পরিণত করে বিশ্বকাপ শিরোপার আনন্দে ভাসিয়ে হিরো আকবর প্রথম এসেছেন নিজ জন্মভুমি রংপুরে। তাকে বরণ করে নিতে উৎসবের আমেজে সেজেছে পুরো রংপুরসহ আকবর আলীর নিজ মহল্লা জুম্মাপাড়া।
তার আগমনে উৎফুল্ল পুরো রংপুরবাসী। বৃহস্পতিবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওয়ানা দিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসেন আকবর আলী। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ। পরে সেখান থেকে তাকে কার, মাইক্রো, মোটর সাইকেলের বিশাল বহর সহকারে রংপুরে নেয়া হয়। পথে পথে ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে জানানো হয় শুভেচ্ছা। মোড়ে মোড়ে হাত উচিয়ে ও ফুল ছিটিয়ে সংবর্ধিত করেন রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হাজারো মানুষ। পরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত গণসংবর্ধনায় ভালোবাসার ফুল, শুভেচ্ছা ও আশির্বাদে সিক্ত হন আকবর। সেখানে গণসংবর্ধনা শেষে নিজ পাড়া জুম্মাপাড়ায় ঢোকার পথে নগরীর কৈলাস রঞ্জন স্কুল গেটের সামনে থেকে ফুল গালিচায় ফুলে ফুলে সিক্ত হয়ে মা-বাবার কাছে পৌঁছান আকবর।
সেখান থেকে বিকেলে তাকে আনা হয় জুম্মাপাড়ার সংবর্ধনা মঞ্চে। আতশবাজি, মিউজিক্যাল সাউন্ড শো, আর লাল সবুজের পতাকায় পশ্চিম জুম্মাপাড়া হয়ে উঠে বর্ণিল। গোটা মহল্লাজুড়ে প্রকম্পিত হতে থাকে ‘আকবর দ্য গ্রেট’।
সংবর্ধনার আয়োজন নিয়ে পশ্চিম জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি শফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে জানান, আমাদের আকবর বিশ্ব ক্রিকেট যুদ্ধে যে ক্রীড়া নৈপূণ্য দেখিয়েছে, তা বাংলাদেশের আগামীর উজ্জ্বল সম্ভাবনার দিগন্তকে উন্মোচিত করেছে। আকবরের জন্য যেমন বাংলাদেশ গর্বিত। তেমনি রংপুরের মানুষ হিসেবে আমরা গর্বিত। বীরোচিত অধিনায়ক আকবরকে আমাদের সন্তান হিসেবে ক্লাবের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত করা হচ্ছে।
বিশ্বজয়ের পর যে এটাই তার প্রথম নিজ জেলায় ্আগমন। তার শৈশব-কৈশোরের স্বর্ণালি দিনগুলো কেটেছে এই রংপুর শহরের পশ্চিম জুম্মাপাড়ায়।
আকবর শুরুতে মাদরাসায় ভর্তি হলেও পরে বাড়ির পাশে বেগম রোকেয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে নগরীর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হন। ষষ্ঠ শ্রেণীতে উঠে রংপুরের অসীম মেমোরিয়াল ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হন। সেখানে অঞ্জন সরকারের হাত ধরে রংপুর জিলা স্কুলের মাঠে তার ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয়ে যায়। ২০১২ সালে বিকেএসপিতে সুযোগ পান। এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়ার গল্প তৈরি করে আকবর।
বিকেএসপির বয়সভিত্তিক দলে খেলে সুযোগ পেয়ে যান জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে। নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতাও হতে থাকে সমানতালে।
শুধু ক্রিকেট নিয়েই অবশ্য পড়ে থাকেননি আকবর। পড়াশোনাটাও দারুণভাবে করেছেন তিনি। ২০১৬ সালে তার এসএসসি পরীক্ষার সময় চলছিল প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ। তখন খেলা ও লেখাপড়া দুটিই সামলেছেন দারুণ মনোযোগে। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পান তিনি। এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৪২।
সবকিছুতে ভালো করার ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশ যুবদলের নেতৃত্বের ভার তার কাঁধে। দক্ষিণ আফ্রিকার আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নেতৃত্বের ভার সামলে চমক দেখালেন আকবর আলী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংবর্ধনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ