পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, যদি আর কোনো তুর্কি সেনা আক্রান্ত হয়, তবে সিরিয়ায় স্থল ও আকাশ- যে কোনো জায়গায় সিরীয় সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাবে তুর্কি সেনাবাহিনী। বুধবার তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ সিরীয় বাহিনীকে উত্তরপ‚র্বাঞ্চলীয় ইদলিবের তুর্কি পর্যবেক্ষণ চৌকির বাইরে সরিয়ে দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।-খবর রয়টার্সের। এদিকে আসাদ বাহিনীকে কোনো হামলার অজুহাত তৈরির সুযোগ না দিতে বিদ্রোহীদের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন তিনি। ইদলিবে নতুন করে সহিংসতার আগুন জ্বলে উঠেছে। দেশটির ৯ বছর ধরে চলা যুদ্ধে বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাঁটি ইদলিবে রাশিয়া ও তুরস্ক সমর্থিত সিরীয় বাহিনী অগ্রসর হলে এই সংকট তৈরি হয়। সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের একটি গোষ্ঠীকে সহায়তা ও সমর্থন দিয়ে আসছে তুরস্ক। গত ১০ দিনে সিরীয় বাহিনীর গোলায় ১৩ তুর্কি সেনা নিহত হওয়ার পর পাল্টা হামলাও বেড়ে গেছে। ২০১৮ সালের অস্ত্রবিরতি চুক্তির কথা উল্লেখ করে এরদোগান বলেন, পর্যবেক্ষণ চৌকি কিংবা অন্য কোথাও আমাদের কোনো সেনা যদি সামান্যও আহত হন, তবে আজ থেকে সর্বত্র সিরীয় বাহিনীকে হামলা করা হবে। সেটা হোক ইদলিব সীমান্ত কিংবা সোচি চুক্তির রেখায়। আঙ্কারায় একে পার্টির সদস্যদের সামনে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, স্থল কিংবা আকাশ– যেখানে হোক, কোনো দ্বিধা ছাড়া সেখানে হামলা চালানো হবে। সিরিয়ায় একটি বিমান ঘাঁটি রয়েছে রাশিয়ার। বেশ কয়েক বছর ধরে ইদলিবের আকাশপথ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তুর্কি সামরিক বাহিনীর হতাহতের ঘটনায় আঙ্কারার সঙ্গে মস্কোর সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তুর্কি সেনাদের ওপর হামলার জন্য চড়া ম‚ল্য দিতে হবে সিরিয়ার সরকারকে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে। সোমবার তুরস্ক সমর্থিত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা ইদলিব প্রদেশে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর অভিযানে পাঁচ তুর্কি সেনা নিহত হয়। এই হামলার জবাবে সিরিয়ার শতাধিক স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালায় তুরস্ক। এরদোগান বলছেন, পাল্টা হামলা চলবে। তবে সিরীয় সেনারা দেশটির উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপ‚র্ণ মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের কাছাকাছি রয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস মঙ্গলবার সকালে জানিয়েছে, সিরীয় বাহিনী বিদ্রোহী ও জিহাদিদের এম৫ মহাসড়কের শেষ অংশ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। অবশ্য বিষয়টি সিরীয় সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করা হয়নি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহাসড়কে গোলাগুলির খবর পাওয়া হয়েছে। ২০১২ সাল থেকে এম৫ মহাসড়ক পুরোপুরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। এই মহাসড়কটি রাজধানী দামেস্কর সঙ্গে আলেপ্পোকে সংযুক্ত করেছে। পাল্টা হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে মঙ্গলবার আঙ্কারায় দেওয়া এক ভাষণে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, সিরীয় পক্ষকে আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রয়োজনীয় জবাব দিয়েছি। বিশেষ করে ইদলিবে তাদের যা পাওয়া উচিত আমরা সেটিই দিয়েছি। কিন্তু এটিই যথেষ্ট নয়। এটি চলবে। এরদোগান আরও বলেন, তারা যত আমাদের সেনাদের হামলা করবে তত চড়া ম‚ল্য তাদের দিতে হবে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, গত সপ্তাহে পাঠানো সাঁজোয়া যানের পাশাপাশি ইদলিবে তুর্কি অবস্থানে আরও সামরিক গাড়িবহর পাঠানো হয়েছে। সিরিয়ার বাহিনী অভিযোগ করেছে আগ্রাসনের উত্তেজনাম‚লক কর্মকাÐের মাধ্যমে তুরস্ক সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় জনবহুল এলাকায় হামলা চালাচ্ছে। তারা এসব হামলার জবাব দেবে। সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমর্থক রাশিয়া আহŸান জানিয়েছে উত্তেজনা নিরসন চুক্তি মেনে চলার জন্য। একই সঙ্গে তারা হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছে, সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও রুশ সামরিক স্থাপনায় যে কোনও সন্ত্রাসী হামলার গ্রহণযোগ্য নয়। জাতিসংঘের মতে, গত ডিসেম্বরে ইদলিবে সিরিয়ার সেনাবাহিনী অভিযান শুরুর পর অন্তত ৩৭৩ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং ৬ লাখ ৮৯ হাজার মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। রয়টার্স, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।