মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারত থেকে কথিত অবৈধ বাংলাদেশিদের তাড়ানোর দাবিতে এক বিশাল বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দেশটির বাণিজ্যিক নগরী রাজধানী মুম্বাইয়ে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাজ্যের প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল ‘মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা’ এই সমাবেশের ডাক দেয়।
‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের’ বিতাড়নের দাবিতে ও নতুন নাগরিকত্ব নাইনের সমর্থনে’ এই জনসভা আহ্বানের কথা জানিয়েছে দলটি। সেখানে দলনেতা রাজ ঠাকরে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘ভারত কোনও ধর্মশালা নয়, এখান থেকে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের তাড়িয়েই ছাড়া হবে।’
কথিত বাংলাদেশিদের দেশছাড়া করার বিষয়টি ভারতে একটি বড় রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠেছে বেশ কিছুদিন ধরে। কিন্তু সেই ইস্যুতে এত বড় মাপের রাজনৈতিক কর্মসূচি এটাই প্রথম।
মুম্বাইয়ের গোরেগাঁওতে হিন্দু জিমখানা গ্রাউন্ড থেকে শহরের দক্ষিণ প্রান্তে আজাদ ময়দান পর্যন্ত রাজ ঠাকরের দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা এদিন যে বিশাল পদযাত্রার আয়োজন করেছিল, ওই শহরে এত বড় মাপের জমায়েত বিরল ঘটনা।
বিবিসি মারাঠির সংবাদদাতা ময়ূরেশ বলছিলেন, "দলের গেরুয়া পতাকা নিয়ে হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক এদিন যেন মুম্বাইকে গেরুয়াতে রাঙিয়ে তুলেছিল। অচল হয়ে গিয়েছিল মেরিন ড্রাইভ এলাকা। আর এই জনসভার প্রধান দাবিই ছিল ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করা বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের এদেশ থেকে তাড়াতে হবে।"
উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরের ভাইপো রাজ ঠাকরে শিবসেনা থেকে বেরিয়ে এসে নিজের দল 'মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা' গড়েছিলেন প্রায় ১৪ বছর আগে। এতোদিন মারাঠা জাতীয়তাবাদই ছিল তার প্রধান রাজনৈতিক অস্ত্র। কিন্তু ইদানীং তিনি ভাষণ শুরু করছেন 'আমার প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনেরা' বলে। কয়েকদিন আগে তিনি নিজের দলের পতাকার রঙ-ও পাল্টে নিয়েছেন হিন্দুত্ববাদী 'ভগওয়া' বা গেরুয়ায়। ৯ ফেব্রুয়ারি রবিবার তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, তার দল তথাকথিত মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধেই আক্রমণ শানাবে। রাজ ঠাকরে তার ভাষণে বলেন, ‘ভারত কোনও ধর্মশালা নয়, যে যেখান থেকে খুশি এসে যে কেউ এখানে বসে যাবে।’
তার ভাষায়, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানির মতোই অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ করাও দেশের জন্য একটি মৌলিক ইস্যু। আর সেজন্যই আমরা বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের হঠানোর ডাক দিচ্ছি। ব্রিটেন-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়াও তো অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়, আর ভারত করলেই সমস্যা? আমি পরিষ্কার বলতে চাই, এই ইস্যুতে আমরাও অস্ত্র হাতে নিতে রাজি।’
মহারাষ্ট্রের নানা প্রান্ত থেকে রাজ ঠাকরের ডাকে যে হাজার হাজার সমর্থক এদিন মুম্বাইতে জড়ো হয়েছিল, তাদেরও মূল বক্তব্য ছিল ভারতের সামনে এখন এই কথিত বিদেশিরাই প্রধান বিপদ। কল্যাণ থেকে আসা গোপাল বাপটের ভাষায়, ‘আমাদের দেশটা যেন এখন পাকিস্তানি আর বাংলাদেশিদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এই আখড়া ভাঙতে না-পারলে ভারতের সমূহ সর্বনাশ।’
কথিত বাংলাদেশিদের তাড়ানোর ইস্যু এক সময় দিল্লিতে বিজেপির বড় রাজনৈতিক হাতিয়ার ছিল। যদিও দিল্লির সাম্প্রতিক নির্বাচনে অবশ্য সেটা তেমন কোনও ইস্যু হয়নি। কিন্তু ইদানি দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ ভারতের ব্যাঙ্গালোরে বা পশ্চিম ভারতের মুম্বাইতে সেটাকে বড় ইস্যু করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। কর্নাটকের বিজেপি সরকার যেভাবে ব্যাঙ্গালোরে বাংলাদেশি উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে বা মুম্বাইতে রাজ ঠাকরের দল যেভাবে আজ বাংলাদেশি তাড়ানোর ডাক দিয়ে বিশাল সভা করলো তাতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।