Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবশেষে ইইউ ছাড়ল যুক্তরাজ্য, চলছে আনন্দ-বেদনার উৎসব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৩:২৮ পিএম

৪৭ বছর এক সঙ্গে থাকার পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে বের হয়ে গেলো যুক্তরাজ্য। এর মধ্য দিয়ে গণভোটে রায়ের সাড়ে তিন বছর পর এক কোটি ৭৪ লাখ ব্রিটিশের ইচ্ছা পূরণ হলো, কার্যকর হলো ব্রেক্সিট। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ৫টা) ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বহুল আলোচিত বিচ্ছেদ কার্যকর হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ঐতিহাসিক এই মুহূর্তটিতে যুক্তরাজ্যে যেমন উৎসব হয়েছে তেমনি এর প্রতিবাদে বিক্ষোভও হয়েছে।
প্রায় ৩ হাজার কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড ব্যয়ে চূড়ান্ত হয়েছে ইইউ প্রত্যাহার চুক্তি। বুধবার ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে ৬২১-৪৯ ভোটে আনুষ্ঠানিকভাবে পাস হয় চুক্তিটি। ওই চুক্তি অনুযায়ী কার্যকর হয়েছে ব্রেক্সিট। বিচ্ছেদের ঐতিহাসিক এই মুহুর্তে ব্রেক্সিটপন্থি ও বিরোধীরা যুক্তরাজ্যজুড়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ব্রেক্সিট কার্যকরের সময় লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ারে উৎসবে মেতে ওঠে এর সমর্থকরা। আর ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেয়া স্কটল্যান্ডের বাসিন্দারা ব্রেক্সিটের প্রতিবাদে মোমবাতি মিছিল করেছে।
নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে হয়েছে ব্রেক্সিটবিরোধী বিক্ষোভ। তিন বছরেরও বেশি সময় আগের গণভোটে ইইউ ছাড়ার পক্ষে রায় দেয়া ওয়েলশের ফার্স্ট মিনিস্টার বলেছেন, ব্রেক্সিটের পরও ওয়েলশ ইউরোপীয় রাষ্ট্রই থাকবে।
জোটের গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্যের বিদায়ের ক্ষণে সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন দেশকে একতাবদ্ধ করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট কার্যকরের কিছু সময় আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া বার্তায় তিনি বলেছেন, “অনেকের জন্য এটি একটি অবিস্মরণীয় আশার মুহুর্ত; এমন এক মুহুর্ত যা কখনো আসবে না বলেও অনেকে মনে করেছিলেন।
“অনেকে উদ্বিগ্ন, শঙ্কিত। তৃতীয় গোষ্ঠীটিই সম্ভবত সবচেয়ে বড়, যারা ভাবতে শুরু করেছেন যে রাজনৈতিক এ বিতন্ডা বোধহয় আর কখনোই শেষ হবে না। আমি সব অনুভূতিই বুঝি। আমাদের সরকারের কাজ হচ্ছে, আমার কাজ হচ্ছে দেশকে একতাবদ্ধ করা এবং সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।” ব্রেক্সিট ‘কোনো শেষ নয় বরং নতুন শুরু’ বলেও মন্তব্য করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাজ্যজুড়ে বিভিন্ন বার ও ক্লাবে নেচে, গেয়ে ইউরোপের সঙ্গে বিচ্ছেদ উদ্যাপন করেছে ব্রেক্সিট পার্টি। পার্লামেন্ট চত্বরে জড়ো হয়ে হাজারো মানুষ গেয়েছে দেশাত্মবোধক সংগীত। এখানে বক্তব্য দেয়াদের তালিকায় ছিলেন নাইজেল ফারাজের মতো কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা।
“চলুন, আজ রাত এমনভাবে উদযাপন করি, যা আগে কখনোই হয়নি। আমাদের অসাধারণ জাতির আধুনিক ইতিহাসের এটি শ্রেষ্ঠ মুহুর্ত,” বলেছেন ব্রেক্সিট পার্টির এ নেতা। এর আগে ইইউপন্থিরা হোয়াইটহলে ব্রেক্সিটবিরোধী সমাবেশ করে।
ব্রেক্সিটকে স্মরণীয় করে রাখতে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভার একটি বৈঠক হয় সান্ডারল্যান্ডে। ২০১৬ সালের গণভোটের ফল গণনার সময় এ শহরই প্রথম ব্রেক্সিটের পক্ষে তাদের সমর্থনের কথা জানিয়েছিল।
বিচ্ছেদের ক্ষণ গণনার সময়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট হয়ে উঠেছিল আলোকজ্জ্বল। মুহুর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে ছাড়া হয় ৫০ পয়সার বিশেষ মুদ্রা।
ব্রেক্সিটের পরপরই ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তর থেকে নামিয়ে ফেলা হয় যুক্তরাজ্যের পতাকা ইউনিয়ন জ্যাক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইইউ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ