Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিএএ নিয়ে কবিতা, রাজনীতি আর উর্দু শেরের বই

লেখক মমতা ব্যানার্জির সাম্প্রতিক কাজ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৩ এএম

কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলায় মঙ্গলবার পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির লেখা তেরোটি বই প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো লেখা হয়েছে, বাংলা, ইংরেজি আর উর্দুতে। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বইয়ের সংখ্যা দাঁড়ালো ১০১টিতে। মঙ্গলবার যে বইগুলো প্রকাশিত হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে তার লেখা ৯৪৬টি কবিতার একটি সংগ্রহ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর গীতবিতানের অনুকরণে এর নাম দেয়া হয়েছে কবিতাবিতান। গত বছর ব্যানার্জি কথাঞ্জলি নামের একই বই প্রকাশ করেছিলেন। সেটারও নাম দেয়া হয়েছিল ঠাকুরের গীতাঞ্জলির নাম অনুসারে, যে বইটির জন্য নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। গত আট বছর ধরে ব্যানার্জি নিজেকে একজন চিত্রশিল্পী, লেখক ও মিউজিক কম্পোজার হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে মধ্য কলকাতার মায়ো রোডে অন্যান্য শিল্পীদের সাথে তিনি নাগরিকত্ব আইন বিরোধী কিছু গ্রাফিতিও আঁকেন। রাজনৈতিক পরিচয় বাদ দিলেও মমতা ব্যানার্জি এবারও সর্বোচ্চ সংখ্যক বইয়ের লেখক হতে যাচ্ছেন বইমেলায়। ২০১৯ সালে তার সাতটি বই প্রকাশিত হয়েছিল এবং ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল নয়টি। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে বইমেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক বইয়ের লেখক হিসেবে আবির্ভ‚ত হয়েছেন তিনি।

নাগরিক, সিএএ’র বিরুদ্ধে লড়াই : এ বছর যে ১৩টি বই প্রকাশিত হয়েছে, এর মধ্যে ছয়টি লেখা ইংরেজিতে, ছয়টি লেখা বাংলায়, আর একটি উর্দুতে। দে প্রকাশনার স্বত্বাধিকারী শুভঙ্কর দে এ তথ্য জানান। অন্যান্য বইগুলোর মধ্যে একটি কবিতার সংগ্রহ রয়েছে, যেটার নাম ‘নাগরিক’, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল নিয়ে লেখা প্রবন্ধের বই – সবুজ বাংলা; বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে লেখা কিছু রাজনৈতিক লেখা, যেটার নাম ‘মানুষের পক্ষে, উন্নয়নের লক্ষে’; এবং উর্দু শেরের বই – হিম্মত। দে আরও বলেন, ‘নাগরিক বইটি নতুন সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট নিয়ে লেখা। এই আইনের বিভিন্ন পরিণতি দিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন তিনি। যে ইস্যুগুলো চলমান সময়, সমাজ আর রাজনীতিকে প্রভাবিত করে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে প্রতি বছরই লেখার চেষ্টা করেন তিনি’।

বিভিন্ন ধরনের লেখা : ব্যানার্জি বিগত কয়েক বছর ধরে যে সব বই লিখেছেন, তার মধ্যে উর্দু শের থেকে শুরু করে তার সংগ্রামের স্মৃতিকথা সবই রয়েছে। ২০১৬ সালে – যেটা ছিল পশ্চিম বঙ্গের নির্বাচনের বছর – সেই বছরেও তিনি বইমেলায় ১০টি বই প্রকাশ করেন। এর মধ্যে একটি ছিল উর্দু শেরের বই।

কেউই জানে না, কখন তিনি উর্দু শিখেছেন এবং জনসমাবেশেও তিনি উর্দু ব্যবহারের চেষ্টা করেননি কখনও। উর্দু শায়েরির দুটো বই এ পর্যন্ত লিখেছেন তিনি। এর বাইরে তার বইগুলো ম‚লত সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে লেখা এবং বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে নন্দিগ্রাম, সিঙ্গুর আর বিক্ষোভের মতো বিষয়।

যেমন, ২০১৬ সালে তিনি অসহিষ্ণুতা আর হত্যাকান্ড নিয়ে লিখেছেন। বইটার শিরোনাম হলো ‘টলারেন্স’। এই বইটিতে উত্তর প্রদেশের দাদরিতে সঙ্ঘটিত হত্যাকান্ড এবং গরু জবাই নিষিদ্ধের বিষয়টি নিয়ে লেখা হয়েছে।
মমতা ব্যানার্জির সাথে পেইন্টিংয়ের সম্পর্কটা অনেকেরই জানা। মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই দাবি করে থাকেন যে, (বই বিক্রির অর্থের পাশাপাশি) তার পেইন্টিংগুলো বিক্রির অর্থ দিয়েই তার দলের অর্থায়ন করা হয়। সিএএর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ক্যানভাসের সামনে তুলি হাতে চিন্তার প্রকাশ ঘটাচ্ছেন তিনি -এ ধরনের ছবি প্রায়ই দেখা যায়। সেটা রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে হোক, নিজের বাড়িতে হোক বা এবারের মতো কলকাতার রাস্তাতে হোক। মায়ো রোড একটা গ্রাফিতি আঁকার পর দিদি নামে পরিচিত ব্যানার্জি চিত্রশিল্পী যোগেন চৌধুরীর পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বাংলা বিক্ষোভের পথ দেখাচ্ছে। সিএএ আর এনআরসি লজ্জাজনক। সংস্কৃতি আর সাহিত্য দিয়ে আমাদেরকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত’। সূত্র : দ্য প্রিন্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিএএ

৭ ডিসেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ